আপামর জনসাধারণের কাছে তিনি কখনও ‘ডিস্কো ড্যান্সার’ আবার কখনও ‘এমএলএ ফাটাকেষ্ট’, কিন্তু সত্যিই কি তিনি সহানুভূতিশীল? একসময় সাধারণ মানুষের নায়ক, এখন রাজনীতির মঞ্চে ও সিনেমার পর্দায় সমানভাবে পরিচিত মুখ ‘মিঠুন চক্রবর্তী’ (Mithun Chakraborty) , কোটি কোটি টাকার মালিক তিনি। কিন্তু সম্প্রতি তাঁর একটি আচরণ তাঁকে আবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এনেছে। তবে এবার তা সম্মানের নয়, বরং তীব্র সমালোচনার। একটি ভিডিও ইতিমধ্যে সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হচ্ছে, কি ঘটেছে সেখানে?
স্পাইনাল মাস্কুলার অ্যাট্রফি (SMA) আক্রান্ত এক শিশুর বাড়িতে গিয়ে শুধুমাত্র ‘প্রচার’ করে চলে আসার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। সঙ্গে কিছু না দিয়ে, কোনও অনুদান না করেই! প্রশ্ন উঠছে, প্রচারের আলোয় কি মানবতা হারিয়ে যায়? ভিডিওতে শিশুটির মা কাঁদতে কাঁদতে বলেন—”আমরা ভেবেছিলাম উনি পাশে দাঁড়াবেন। উনি আমাদের বলেছিলেন খুব ভালো কিছু হবে, কিন্তু কিছুই দিলেন না। শুধু ক্যামেরা, ছবি, আর নিজের নতুন ছবির কথা বলে চলে গেলেন।”
এতবড় তারকা, যাঁর গাড়ির জ্বালানি খরচই লাখে চলে যায়, তিনি একটা শিশুর জীবন বাঁচাতে সামান্য কিছু অর্থ দিতে পারেননি? এটাই কি ‘মেগাস্টার’-এর সংজ্ঞা? সমাজ মাধ্যমে অনেকেই বলেছেন, মানবিকতা কি শুধুই ক্যামেরার সামনে? অস্মিকার কাহিনি থেকে মানুষ শিখেছিল কীভাবে সমাজ একত্রে লড়াই করতে পারে। অসংখ্য ইনফ্লুয়েন্সার, সাধারণ মানুষ, স্কুলপড়ুয়া, বাড়ির কাজের মানুষ পর্যন্ত টাকা তুলে সাহায্য করেছেন।
অন্যদিকে একজন তথাকথিত সুপারস্টার শুধু এসেছিলেন ছবি তুলতে। এই ব্যবধানই বুঝিয়ে দেয়, কে সত্যিকারের নায়ক আর কে কেবল ‘নাটক’ করে বেড়ান। অনেকেই বলেছেন, “নায়ক হতে হয় সমাজের চোখে, শুধু পর্দায় নয়। মিঠুন চক্রবর্তী কি জানতেন না, তিনি যাঁর পাশে দাঁড়াতে গিয়েছিলেন, তার প্রতিটি মুহূর্ত মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই? তাহলে কেন তাঁর মন নরম হল না?”, “কোটি টাকার বিজ্ঞাপনের মুখ হয়ে কি সত্যিকারের একজন মায়ের কান্না তাঁকে স্পর্শ করল না?
আরও পড়ুনঃ “আমি ভবিষ্যতে অনেক কাজ পাব, কিন্তু এখন সন্তানদের বড় হয়ে ওঠার সঙ্গী হতে চাই”— কোয়েলের কাছে এখন ক্যামেরার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ছেলে-মেয়ে! মাতৃত্ব নিয়ে খোলামেলা স্বীকারোক্তি কোয়েলের!
নাকি এই কষ্ট শুধু হয়ে রইল তারকা প্রচারের উপকরণ হিসেবে?” শেষ কথা এটাই যে, মানুষ মনে রাখে কে পাশে ছিল আর কে শুধু দেখানোর জন্য এসেছিল। আজ অস্মিকা আংশিক সুস্থ, কারণ অসংখ্য মানুষ নিঃস্ব হলেও সহানুভূতিশীল ছিল। কিন্তু এই শিশুটির মা এখনো ভরসা খুঁজছেন, সাহায্যের জন্য চিৎকার করছেন। এই সময়ে যদি কোনও তারকা কেবল ‘মুখ দেখিয়ে’ ছবি নিয়ে চলে যান, তবে প্রশ্ন উঠবেই—এটাই কি তারকাদের মানবতা? না কি তাঁরা কেবল ক্যামেরার সামনে ভালোবাসা দেখিয়ে, পেছনে রেখে যান শুধুই অন্ধকার?