টলিপাড়ার একসময়কার তুমুল চাহিদাসম্পন্ন স্টাইলিস্ট সন্দীপন ঘোষালকে সবাই চেনেন স্যান্ডি নামে। কার কোন পোশাকে মানাবে, কোন নায়িকার কোন লুক হিট হবে—সবই ছিল তাঁর হাতের মুঠোয়। কোয়েল মল্লিক থেকে মিমি, শুভশ্রী, নুসরত—ইন্ডাস্ট্রির প্রায় সব শীর্ষ অভিনেত্রীই ভরসা করে নিয়মিত স্যান্ডির স্টাইলিং চাইতেন। দাদা তাঁকে প্রথম ছবি দিয়ে সুযোগ করে দিয়েছিলেন এবং সেই থেকেই একের পর এক ব্লকবাস্টার ছবিতে নিজের প্রতিভার ছাপ রেখেছিলেন তিনি।
কিন্তু সময় কীভাবে পাল্টে যায়, তা আজ স্যান্ডিকেই দেখে বোঝা যায়। বছরখানেক আগে পর্যন্ত ঝলমলে আলোয় থাকা মানুষটি আজ মানসিক অসুস্থতায় জর্জরিত। তাঁর কাছের বান্ধবী ও অভিনেত্রী বিয়াস রায় সোশ্যাল মিডিয়ায় স্যান্ডির বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরতেই সবাই হতবাক। বিয়াস জানিয়েছেন, স্যান্ডির স্বাস্থ্য এমন জায়গায় পৌঁছেছে যেখানে স্মৃতির সঙ্গে সময়ের সম্পর্কটাই এলোমেলো। আর এই পরিস্থিতিতে যাঁদের তিনি একসময় নিজের পরিবার ভাবতেন, তাঁদের অধিকাংশই আজ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।
বিয়াস ক্ষোভের সঙ্গে লিখেছেন যে স্যান্ডির সাফল্যের সময়ের নাকি খুব প্রিয় মানুষজন—ছবির ফটোগ্রাফার, মেকআপ আর্টিস্ট, তৎকালীন প্রেমিক থেকে শুরু করে বহু অভিনেত্রী—সবাই এখন তাঁর ফোন ধরা তো দূর, অনেকেই নাকি তাঁকে ব্লকও করে দিয়েছেন। একমাত্র কোয়েল মল্লিকই নিয়মিত খোঁজ নিয়েছেন বলে জানা গেছে। বিয়াসের কথায় এই উদাসীনতা শুধু অমানবিকই নয়, অত্যন্ত অন্যায়ও।
আরও পড়ুনঃ ‘আমার চরিত্রহননের চেষ্টা করেছে…আইনগত ব্যবস্থা নেব এবার!’ রবিবার সকালেই সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন স্মৃতি, তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে এবার বি’স্ফো’রক অভিযোগ পলাশের!
কঠোর বাস্তব হলো স্যান্ডির সমস্যা কোনও রহস্যময় বা বিতর্কিত রোগ নয়। তিনি ব্রেইন টিউবারকিউলোসিসে আক্রান্ত। এই রোগ মস্তিষ্কের কোষ নষ্ট করে দেয়, ফলে অনেকেই স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলেন। স্যান্ডির ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। ২০০৬ সালের পর ঘটে যাওয়া কোনও ঘটনাই তিনি আজ আর মনে করতে পারেন না। নিজের সোনালি সাফল্যের সময় যেন কুয়াশায় ঢাকা পড়ে গেছে।
তবুও আশার আলো দেখছেন বিয়াস। সঠিক যত্ন, চিকিৎসা, ভালোবাসা আর মানসিক ভরসা পেলে স্যান্ডি অনেকটাই সেরে উঠতে পারেন বলে তাঁর বিশ্বাস। তাই তিনি ইন্ডাস্ট্রির সবাইকে অনুরোধ করেছেন পুরনো মনোমালিন্য ভুলে পাশে দাঁড়াতে। যাঁদের জন্য স্যান্ডি জীবনভর পরিশ্রম করেছেন, তাঁদের একটু সাহায্য আজ তাঁর নতুন জীবনের শুরু হতে পারে।






