বাংলা টেলিভিশনের (Television) জগতে শুধু নায়ক-নায়িকা চরিত্রই দর্শকের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠে না, বরং পাশের চরিত্রগুলোও সমানভাবে মনোযোগ আকর্ষণ করে। প্রায়ই দেখা যায় যে, ছোট পর্দার যেসব চরিত্রের উপস্থিতি ছোট হলেও তার প্রভাব গভীর, সেগুলি দর্শকদের মনেই গেঁথে যায়। এই চরিত্রগুলো কখনো সহায়ক, কখনো বন্ধুর মতো, আবার কখনো পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের ভূমিকায় নিজেকে তুলে ধরে। তাদের অভিনয় দক্ষতা ও গল্পের প্রতি তাদের একাগ্রতা দর্শকদের হৃদয়ে আলাদা একটি স্থান করে নেয়। পর্দায় তাদের উপস্থিতি ছাড়াও, তাদের প্রতি দর্শকদের আবেগময় সম্পর্ক বাড়ে, যা দীর্ঘ সময় ধরে বজায় থাকে।
বাংলা টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শর্মিলা দাস, যিনি ‘শ্রীময়ী’ ধারাবাহিকে ‘মিঠুদি’ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, তার অভিনয়ের শক্তি এক কথায় প্রশংসনীয়। তার মিঠুদি চরিত্রটি এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল যে, দর্শকরা তার সঙ্গে নিজেকে মেলাতে শুরু করেছিলেন। তার চরিত্রের সঙ্গে মনের অদৃশ্য একটি বন্ধন তৈরি হয়েছিল, যা দর্শকরা আজও ভুলতে পারেননি। মিঠুদি চরিত্রটি বাস্তবিকভাবে গেঁথে যায়, এবং শর্মিলা দাসের অভিনয় দক্ষতার কারণে এই চরিত্রে আরও প্রাণ ফিরে পায়। তার শক্তিশালী ও আবেগময় অভিনয় দর্শকদের মন জয় করেছিল।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে শর্মিলা দাস তার জীবনের একটি আক্ষেপ নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ছোটপর্দায় এত সফল হওয়ার পরেও ব্যক্তিগত জীবনে সন্তান না নেওয়ার সিদ্ধান্ত তাকে বারবার মনে দুঃখ দিয়েছে। শর্মিলা জানান, তার অভিনয়ের জন্য এত কঠোর পরিশ্রম করতে গিয়ে, নিজের স্বামীর সহায়তায় তিনি মা হওয়ার সিদ্ধান্তটি বাদ দেন। শর্মিলা বলেন, তার স্বামী সম্পূর্ণভাবে এই সিদ্ধান্তে সমর্থন করেছিলেন, অন্যথায় এটি সম্ভব হতো না। অভিনয়ের প্রতি তার অনুরাগ এবং ক্যারিয়ার গড়ার জন্য তিনি অনেক কিছুই ত্যাগ করেছেন।
শর্মিলা দাস আরও জানিয়েছিলেন, যদিও তিনি বাস্তবে মা হতে পারেননি, তবে পর্দায় মা হয়ে অভিনয় করার সময় সেই অনুভূতিগুলো তাকে অতিক্রম করতে সাহায্য করেছে। “মা” ডাক শোনা মাত্রই তার সব আফসোস দূর হয়ে যায়। পর্দায় যেভাবে মাতৃত্বের অভ্যেস করেছিলেন, সেটাই তার জীবনে অন্যতম ভালো অভিজ্ঞতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুনঃ গৃহপ্রবেশের ঝড়! টিআরপি-তে ভাঙল ১৫ বছরের রেকর্ড, স্টার জলসার নতুন ইতিহাস লিখল আদৃত-শুভলক্ষ্মী জুটি
দর্শকদের প্রতিক্রিয়া ছিল অনেক বেশি উৎসাহব্যঞ্জক এবং সমর্থনমূলক। দর্শকরা শর্মিলার জীবনের কঠিন সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়েছেন, বিশেষ করে তার অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা এবং ব্যক্তিগত জীবনে আত্মত্যাগের জন্য। কেউ বলছেন, শর্মিলা যেমন তার ক্যারিয়ারে কঠোর পরিশ্রম করেছেন, তেমনই তার জীবনেও সে সাহসিকতা বজায় রেখেছেন। তার জীবনের এই অধ্যায় সত্যিই এক অনুপ্রেরণা, যা মানুষের কাছে সাহস এবং আত্মবিশ্বাসের বার্তা পৌঁছায়।