কলকাতার বুকে সরকারি হাসপাতাল ‘স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন’। যেখানে মানুষের জীবন বাঁচানোই প্রধান কাজ, সেখানেই আচমকা যেন শুরু হলো এক অপ্রত্যাশিত দৃশ্য। কে বলবে এটা হাসপাতাল, দেখে মনে হবে কোনও বিগ বাজেটের ছবির শুটিং চলছে! কারণ, হাজির হয়েছেন স্বয়ং অভিনেতা তথা বিধায়ক ‘কাঞ্চন মল্লিক’ (Kanchan Mullick) ও তাঁর তৃতীয় পক্ষের স্ত্রী ‘শ্রীময়ী চট্টরাজ’ (Sreemoyee Chattoraj)। না, শুধু চিকিৎসা করাতে আসেননি, বরং হাসপাতালে ঢুকে করলেন ‘পাওয়ার শো’!
এমন উত্তেজনা ছড়ায় যে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরও নিঃশ্বাস বন্ধ! জুলাইয়ের শুরুতে এই ঘটনাটা এমন, হাসপাতালে এক শিশুর চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন চিকিৎসক ডাঃ মেহবুবর রহমান। তখনই দৃশ্যপটে আবির্ভাব কাঞ্চন-শ্রীময়ীর। অভিযোগ, নিজেদের আত্মীয়ার প্রেসার মাপানোর জন্য জোরাজুরি, হুমকি, এমনকি অপমান— সব কিছু একসাথে শুরু করে দেন এই দম্পতি। যেন রোগীর প্রেসার নয়, নিজেদের ক্ষমতার প্রদর্শনীই আসল উদ্দেশ্য! একদিকে শিশুর প্রাণ, আর অন্যদিকে ‘ভিআইপি’র গোসা!
এই লড়াইয়েই নষ্ট হয়ে যায় হাসপাতালের পরিবেশটাই! এই ঘটনায় চিকিৎসক মহল তো স্তব্ধ, তৈরি হয়েছে যথেষ্ট আলোড়ন! এক জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে এমন ব্যবহার কি কাম্য? বিশেষ করে ডাক্তারের সঙ্গে? টলিপাড়াতেও নেহার উত্তেজনার কম ছড়ায়নি অভিনেতার এমন কাণ্ড কারখানায়। আর সাধারণ মানুষের মনেও হাজার প্রশ্ন— “এবার সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পেতে গেলে, আগে কি বিধায়কের চিঠি আনতে হবে?” “কে কবে জানত, হাসপাতালে যাওয়াও হয়ে উঠবে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ!”
আর এই বিতর্কে নিজেকে আর আটকে রাখতে পারেননি টলিপাড়ার ‘ঠোঁটকাটা’ নামেই পরিচিত অভিনেত্রী ‘শ্রীলেখা মিত্র’ (Sreelekha Mitra)। বরাবরের মতো এবারও তিনি খুললেন মুখ, তবে মুখে যেন শান দেওয়া ছুরি! কটাক্ষ করে বললেন, “একটার পর একটা বিয়ে করছে, বাচ্চার জন্ম দিচ্ছে, তাতেও শান্তি নেই! এবার হাসপাতালে গিয়েও অশান্তি শুরু করেছে!” শ্রীলেখার মতে কাঞ্চনের মতো লোকেদের সরকারি হাসপাতালে যাওয়াটাই প্রশ্ন। এত টাকা থাকতে সরকারি হাসপাতালে গেলেন কি করতে?
আরও পড়ুনঃ স্বতন্ত্রর বুকে মাথা রেখে রাত কাটাল কমলিনী! গান গাইতে গাইতে কাছাকাছি এল দুই মন, হঠাৎ পুলিশের আগমনে পাল্টে গেল সব! মিসিং ডায়েরি করতে গিয়ে চন্দ্র খোঁড়ে নিজের কবর, তবু ‘অপরাধী’র তকমা সইতে হল কমলিনী-স্বতন্ত্রকে!
শেষ আর রাখঢাক রাখেননি শ্রীলেখা। কাঞ্চনের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়েও কষিয়ে ঠাট্টা করে বললেন, “ওর ঐ জায়গায় থাকার কথাই ছিল না, পৌঁছে গেছে বলেই এখন সিংহ হতে চাইছে! আচরণ রাজার মতো, কিন্তু আসলে তো শিয়ালরাজা! ময়ূরের পালক লাগালে কাক তো ময়ূর হয় না!” সমাজ মাধ্যমে এই বক্তব্য ইতিমধ্যেই ঝড় তুলেছে। কারও মতে তিনি একদম সঠিক, আবার কেউ বলছেন— এতটা বলা উচিত হয়নি। তবে একথা ঠিক, কাঞ্চন-শ্রীময়ী কান্ড আর শ্রীলেখার প্রতিক্রিয়ায় টলিপাড়া এখন চর্চায়!