বুধবার দুপুরে নৈহাটির রাস্তাগুলো যেন উৎসব প্রাঙ্গণে পরিণত হয়েছিল। ভক্তদের ভিড়ে ঢেকে গিয়েছিল চারপাশ, আর সেই ভিড় ভেদ করেই বড়মার দরবারে হাজির হন শুভশ্রী গাঙ্গুলি (Subhashree Ganguly) ও দেব (Dev), তবে দিনটির মূল আকর্ষণ ছিলেন শুভশ্রী।অভিনেত্রীর সাজপোশাক, উপস্থিতি আর ব্যক্তিত্বে যেন একাই আলো কেড়ে নিলেন তিনি। লাল শাড়ি, সিঁদুরে রাঙানো সিঁথি, আর করজোড়ে মাতৃ বন্দনা— মন্দির প্রাঙ্গণে তাঁকে দেখে যেন মুগ্ধ না হয়ে থাকা যায় না।
পাশে বসা দেবও যেন এই দিনটিকে বিশেষ করে তুলতে সাহায্য করলেন, কিন্তু ভিড়ের চোখে শুভশ্রীই ছিলেন কেন্দ্রবিন্দু। পুজারত শুভশ্রী ছিলেন একেবারে অন্য রূপে। ‘ধূমকেতু’র (Dhumketu) রূপার ছায়া মিলছিল তাঁর ভঙ্গিমায়, তবে সেই সঙ্গে ছিলেন ইউভান-ইয়ালিনীর স্নেহময়ী অভিভাবক, রাজ চক্রবর্তীর সঙ্গিনী এবং নিজের প্রোডাকশন হাউসের একজন দক্ষ পরিচালিকা। একসঙ্গে এতগুলো দায়িত্ব সামলে, পেশাদারিত্ব বজায় রেখে প্রাক্তন সহ-অভিনেতার সঙ্গে প্রচারের মঞ্চে আসা!
এ যেন সত্যিকারের শক্তি আর আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। মন্দির প্রাঙ্গণে একাধিক হৃদয়স্পর্শী মুহূর্ত ধরা পড়ে ক্যামেরায়। কখনও দেবের সঙ্গে পাশাপাশি বসে পুজো, কখনও বা ভিড়ের হাত থেকে আগলে রাখা, আবার কখনও ভক্তদের উদ্দেশে হাত নাড়িয়ে হাসি বিলিয়ে দেওয়া— সব ক্ষেত্রেই শুভশ্রীর উপস্থিতি ছিল সবার নজরে। বিশেষ করে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় দেবের যত্নে আঁচল আগলে রাখা দৃশ্যটি ভক্তদের মনে দাগ কেটেছে।
কিন্তু শুভশ্রীর আত্মমর্যাদা আর স্বাভাবিক ভদ্রতায় সেই মুহূর্তও যেন আরও সুন্দর হয়ে উঠেছিল। টলিউডে নারীশক্তির এক উজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন শুভশ্রী। পুরনো স্মৃতি, পেশাদারিত্ব, পারিবারিক দায়িত্ব, মাতৃত্ব এবং শিল্পীসত্তা— সবকিছুর সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখা তাঁর সহজাত গুণে পরিণত হয়েছে। বড়মার মন্দিরে এই দিনের ঘটনাগুলো যেন অনেক কিছু প্রমাণ করল।
আরও পড়ুনঃ ”এত বছরের প্রতীক্ষা শেষ, ‘ধূমকেতু’র উদযাপন শুরু হোক!”— অতীতের গল্প পেছনে ফেলে স্ত্রীর সাফল্যে উন্মাদনায় ভেসে গেলেন রাজ! প্রেক্ষাগৃহে ‘ধূমকেতু’ ঝড়, পরিচালকের পোস্টে স্ত্রীর ‘প্রাক্তন’ দেবের প্রশংসা!
যে শুভশ্রী কেবল একজন অভিনেত্রী নন, তিনি অনুপ্রেরণা, যিনি নিজের জীবনের প্রতিটি চরিত্রে সমান দক্ষ। দুর্গা পুজোর আগে ভক্তরা এমনই এক শুভশ্রীকে দেখলেন, যিনি একদিকে পর্দার নায়িকা, অন্যদিকে বাস্তব জীবনের দশভুজা। তাই অনেকেই বলছেন, ‘এ শুধু দেব–শুভশ্রীর গল্প নয়, বরং শুভশ্রী–দেবেরও সমান কাহিনি।’ কারণ আজকের দিনে, মঞ্চে এবং মঞ্চের বাইরে, আলোটা নিঃসন্দেহে ছিল শুভশ্রীর উপরেই।