“যেটা বলি করব না সেটাই হয়, আমি আপাতত রাজনীতিতে নেই, কিন্তু ভবিষ্যৎ কেউ বলতে পারেনা…”— শুভশ্রীর মন্তব্যে জল্পনা তুঙ্গে! অভিনেত্রীর রাজনীতিতে আসা শুধু সময়ের অপেক্ষা? স্বামী রাজের দলে যোগ নয়, তবে বিরোধী শিবিরেই কি নাম লেখাবেন তিনি? ইঙ্গিত দিলেন ‘লেডি সুপারস্টার’!

টলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের (Subhashree Ganguly) জীবন এখন যেমন আলোয় মোড়া, তেমনই ভীষণ হিসেবি। কাজ, পরিবার, মাতৃত্ব— প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি নিজের মতো ছন্দ তৈরি করে নিয়েছেন। সম্প্রতি মুক্তি পেতে চলেছে তার দ্বিতীয় ওয়েব সিরিজ ‘অনুসন্ধান’ (Anusandhan)। সেই নিয়ে প্রচারে আপাতত ভীষণ ব্যস্ত লেডি সুপারস্টার। ব্যক্তিগত থেকে পেশাগত উভয় দিকেই অভিনেত্রীর দৃঢ়তা নজর কাড়ে সবার। কিন্তু যখন প্রশ্ন ওঠে রাজনীতি নিয়ে, তখন সেই দৃঢ়তা খানিকটা অন্য রূপ নেয়! রাজ চক্রবর্তীর মতো একজন প্রভাবশালী পরিচালক ও সক্রিয় রাজনীতিকের স্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও শুভশ্রী রাজনীতির প্রান্তে গিয়ে কেন থেমে যান?

সম্প্রতি ওয়েব সিরিজের প্রচারে গিয়ে এই একই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে রাজঘরণীকে। ওয়েব সিরিজটিতে রাজনীতির প্রভাব সক্রিয়, চরিত্রের মধ্যেও তা ফুটে উঠেছে। তবে, বাস্তবে রাজনীতির সঙ্গে শুভশ্রী সম্পর্কটা কেমন? এই বিষয়ে ‘লেডি সুপারস্টার’ নিজের অবস্থান খুব স্পষ্ট করে দিয়েছেন— “আমি রাজনীতিক নই, আর সেই পথে হাঁটার কোনও ইচ্ছেও নেই আমার।” তবে এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। তাঁর কথার ভেতর দিয়ে যেন একরাশ অনিশ্চিত সম্ভাবনার ইঙ্গিতও মিলেছে।

অভিনেত্রী বলেছেন, জীবনে কিছুই নাকি কখনও সটান ‘না’ বলতে নেই! কারণ, যেটাকে নাকি এড়িয়ে চলা হয়, সেটাই ঘটে যায় বাস্তবে। শুভশ্রীর এই একথাতেই যেন তৈরি হয়েছে নতুন জল্পনা। বর্তমানে না হলেও, ভবিষ্যতের কোনও মোড়ে কি রাজনীতিতে দেখা যেতে পারে শুভশ্রীকে? স্বামীর রাজনৈতিক দলে মতাদর্শকে তিনি বিশ্বাসী নন বলেই, রাজনীতিতে পা রাখছেন না? প্রশ্নটা এখনই ঘুরছে শিল্পী মহল থেকে শুরু করে অনুরাগীদের মধ্যেও। শুভশ্রীর যুক্তি একেবারে সোজা— রাজনীতি এক আলাদা জগৎ, যার জন্য দরকার অন্য ধরনের প্রস্তুতি ও বোঝাপড়া।

নিজের মতাদর্শ থাকলেও সেই জগতের সঙ্গে মেলামেশা বা আলোচনায় তিনি আগ্রহী নন। তাঁর কথায়, বাড়িতে চায়ের আড্ডায় রাজনীতি নিয়ে কথা হয় বটে, কিন্তু সেখানেই সীমাবদ্ধ থাকতে চান তিনি। কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে প্রশ্ন করা বা মন্তব্য করা তাঁর স্বভাবের মধ্যে পড়ে না। তিনি রাজনীতিকে শ্রদ্ধা করেন, কিন্তু দূর থেকেই। অন্যদিকে, শুভশ্রীর পেশাগত দিকের চিন্তাভাবনায়ও এই ভারসাম্য স্পষ্ট। মা হওয়ার পর থেকেই তিনি নিজের কাজের সময় নির্দিষ্ট রেখেছেন, যা নিয়ে কখনও কোনও সমস্যা তৈরি হয়নি।

আরও পড়ুনঃ শ্রীমান পৃথ্বীরাজ রূপে দর্শকদের নজর কেড়েছিলেন তিনি! ফের একবার জলসার পর্দায় নায়ক রূপে ফিরছেন সুকৃৎ?

পরিচালক এবং প্রযোজকরা তাঁর শর্ত মেনেই কাজ করেছেন। তাই ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবন মেলাতে শুভশ্রীর এই স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি প্রশংসনীয়। রাজনীতিতেও সেই সচেতন দূরত্বই যেন তাঁর ব্যক্তিত্বের বাড়তি রং। সব মিলিয়ে, শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় আজকের টলিউডের এমন এক মুখ, যিনি আলোচনায় থাকতে জানেন, কিন্তু বিতর্কের কেন্দ্রে নিজেকে ফেলেন না। রাজনীতির মঞ্চ থেকে দূরে থেকেও তিনি জানিয়ে দিলেন— সিদ্ধান্ত নিতে তিনি জানেন নিজের সময়ে, নিজের মতো করে। তবে কি আগামীতে লেডি সুপারস্টার রাজনীতির ময়দানে হতে চলেছেন স্বামীর প্রতিদ্বন্দ্বী? উত্তরটা সময়েরই হাতে!