‘ঋতুপর্ণাকে কেউ কিছু বলার সাহস পায় না, অভিষেক নিজের দোষেই কাজ পায়নি’ অকপট অভিনেতা দুলাল লাহিড়ী!

অভিনয়ের প্রায় সবকটি মাধ্যমে হরিহর আত্মার মতো কাজ করেছেন তাঁরা। এক যোগে তৎকালীন দুটো মেগা ধারাবাহিকে কাজ করছিলেন। একই ঘর ভাগ করে থাকতেন দুজন। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে সেই প্রিয় ভাইকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করলেন দাদা দুলাল লাহিড়ী (Dulal Lahiri)।

দুলালবাবু বলছেন, বয়সে তাঁর থেকে অনেকটাই ছোট অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায় (Abhishek Chottopadhyay)। ‘মোহর’ আর ‘খড়কুড়ো’-এই দুই মেগা ধারাবাহিকে কাজ করেছিলেন দুজনের। নায়ক অভিষেককে মিঠু নামে ডাকতেন দুলালবাবু। একে অপরকে চিনতেন প্রায় ৪০-৪৫ বছর।

চলচ্চিত্র, থিয়েটার, যাত্রা তারপর টেলিভিশন অভিনয়ের সবকটি মাধ্যমে একসঙ্গে কাজ করেছেন দুজন। অভিষেকের বাবা প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায়ও ভাল অভিনয় করতেন। তাঁর বাবার কাছেই অভিনয়ের হাতেখড়ি হয়েছিল অভিষেকের। দুলালবাবুর সঙ্গে স্বপন সাহা, অঞ্জন চৌধুরীর ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছেন দুজন।

একসময়ে তাবড় অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে অভিনয়ে নিয়ে এসেছিলেন অভিনেতা। অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে অনেক ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি। নায়িকা হিসেবে ঋতুপর্ণা কেমন? দুলাল বাবুর কথায় ডেডিকেটেড ঋতু। তবে একটা সময় সেটে নাকি প্রায়ই দেরী করে পৌঁছতেন। যা দেখে ক্ষেপে উঠেছিলেন অভিনেতা। এক ফিচার ফিল্মে নাকি নায়িকা দেরী করে আসায় শুটিং প্যাক আপ করে ছিলেন গোটা দিনের মতো। আর ঋতুপর্ণাকে নাকি কেঁদে কেটে পরিচালককে রাজি করাতে হয়।

ভাইয়ের মৃত্যু প্রসঙ্গে তিনি বলেন,”ইন্ডাস্ট্রি থেকে যতটা পাওয়ার ছিল পায়নি। আক্ষেপ ছিল। নেশার মধ্যে সেই দুঃখ ভুলে থাকতে চাইত। কতবার বারণ করেছি, কিন্তু শুনত না। নিজের উপর অত্যাচার করে, অভিমান নিয়ে চলে গেল সবার মিঠু। তবে কোনো লবির জন্য নয়। নিজের দোষেই কাজ পায়নি ও।”

দুলাল লাহিড়ীর আক্ষেপ,শেষ যেদিন ফ্লোরে আসেন সেদিন অভিনেতাকে ডাকতে গিয়ে দেখেন তিনি শুয়ে আছেন। কাঁপছেন। বলেছিলেন,’এভাবে সারাদিন শুয়ে থাকিস না।’ অস্ফুটে বলেছিলেন ‘পারব না দাদা’। সেদিন ধরে উঠিয়ে বসাতে চেয়েছিলেন অভিনেতাকে। কিন্তু পারেনি। অভিষেকের স্ত্রীকে ফোন করে ডাকা হয়। চেনা হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার বলেন দুলালবাবু। কিন্তু তিনি চাইলেন না যেতে। শুটিং ফ্লোর থেকে সোজা গিয়েছিলেন বাড়িতে। যদি সেদিন হাসপাতালে যেতেন হয়ত…এই ‘হয়ত’টাই থেকে যাবে।