বিবাহ অভিযান থেকে হাল আমলের গুড্ডি, ধুলোকণা- এই অভিনেতা পেয়েছেন দর্শকদের অগুনতি প্রশংসা এবং ভালোবাসা। ছোটপর্দা এবং বড় পর্দা সর্বক্ষেত্রেই নিজের সুন্দর অভিনয় প্রতিভার ছাপ রেখেছেন শংকর চক্রবর্তী। এই অভিনেতাকে চেনে না এমন বাঙালি খুজে পাওয়া দুষ্কর।
দীর্ঘ তিন দশকের অভিনয় জীবনে শঙ্কর চক্রবর্তী পেয়েছেন একরাশ সম্মান এবং অসংখ্য পুরস্কার রয়েছে ঝুলিতে। সিনেমা এবং সিরিয়াল মিলিয়ে অভিনয়ের সংখ্যা কয়েকশো ছাড়িয়ে গেছে ইতিমধ্যেই। আজও তিনি প্রতিটি ঘরে ঘরে সমানভাবে জনপ্রিয়।
তবে এই সফলতায় পৌঁছাতে গিয়ে দীর্ঘ সংগ্রাম করতে হয়েছে অভিনেতা শংকর চক্রবর্তীকে। অভিনেতার তেমনই এক জীবন যুদ্ধের কাহিনী জানলে আপনারা কেঁদে ফেলবেন।
বিবাহ অভিযান ধারাবাহিক সম্প্রচারিত হওয়ার প্রায় ৩০ বছর পেরিয়ে গেছে। তবে এখন অধিকাংশ বাঙালির কাছে তিনি তোতলা গণশা নামে পরিচিত হয়ে থেকে গেছেন। শংকর অত্যন্ত গরিব পরিবারের সন্তান ছিলেন। তবে এটা অভিনেতার প্রকৃত নাম নয়, তাঁর আসল নাম হারাধন চক্রবর্তী। অভিনয় জীবন শুরু করার পর ফিল্মি নাম হয় শংকর।
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র বিষয়ে পড়াশোনার খরচ চালাতে কখনো সাইকেল সারানোর দোকান আবার কখনো চায়ের দোকানে কাজ করেছেন শংকর। নূন্যতম টাকা পেয়ে সেটা দিয়ে খিদে মেটানোর পাশাপাশি নিজের নাইট কলেজের খরচ নিজেই জুগিয়েছেন। অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। তাই যোগ দিয়েছিলেন উৎপল দত্তের নাটকের গ্রুপে।
বিবাহ অভিযান ছিল শংকর চক্রবর্তীর প্রথম অভিনয়। দূরদর্শনের সেই ধারাবাহিকের কথা আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে। প্রথম অভিনয়তেই তোতলা হওয়ার অভিনয় করতে হয়েছিল অভিনেতাকে। আর সেটাই শংকর চক্রবর্তীকে দিয়েছিল পরিচয়।
এরপর নায়ক হিসেবে বড় পর্দায় প্রথম ছবি অনুভব। ছবি হিট করেনি কিন্তু শংকর চক্রবর্তীর অভিনয় প্রশংসিত হয়। এরপর অঞ্জন চৌধুরী থেকে গৌতম ঘোষ হয়ে বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত এবং তারপরে ঋতুপর্ণ ঘোষ- প্রতিটি জনপ্রিয় পরিচালকের অন্যতম পছন্দ হয়ে ওঠেন শংকর। ভিলেন থেকে শুরু করে স্নেহময়ী বাবা যে কোন চরিত্রে সাবলীল ভাবে অভিনেতার এই অভিনয় মন ভরে দিয়েছে দর্শকদের। বর্তমানে প্রায় ৬০ এর দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা শংকর চক্রবর্তী টালিগঞ্জ স্টুডিও পাড়ার অন্যতম সম্পদ।