ছোটপর্দা দিয়েই নিজের অভিনয়ের যাত্রা শুরু করেন তিনি। এরপর টেলিভিশনের গণ্ডি পেরিয়ে কখন যে ওয়েব সিরিজ (Web Series) আর বড় পর্দার পরিচিত মুখ হয়ে উঠলেন ‘সন্দীপ্তা সেন’ (Sandipta Sen) , তা যেন তিনিও টের পাননি। স্টার জলসার (Star Jalsha) প্রথম দিককার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘দুর্গা’ (Durga) দিয়ে শুরু হয়েছিল তাঁর সফর, আর সেখান থেকেই একের পর এক চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় দিয়ে তিনি জায়গা করে নিয়েছেন দর্শকের হৃদয়ে। মুখ্য চরিত্রে তাঁর অভিনয় আজও দর্শকের মনে গেঁথে রয়েছে।
স্টার জলসার সূচনালগ্নে প্রথম ধারাবাহিক ‘দুর্গা’ দিয়ে অভিনয়ের জগতে পা রেখেছিলেন তিনি। সেই শুরু থেকে আজ পর্যন্ত বিনোদনের দুনিয়ায় তিনি পার করে ফেলেছেন দুই দশকের কাছাকাছি সময়। মাঝে বহু চরিত্রে অভিনয়, একাধিক হিট ধারাবাহিক, আর দর্শকের অফুরন্ত ভালোবাসা তাঁকে পৌঁছে দিয়েছে সাফল্যের শিখরে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ‘দুর্গা’ ধারাবাহিকের দ্বিতীয় অধ্যায় ‘দুর্গা দুর্গেশ্বরী’-তেও তিনি অভিনয় করেছিলেন একটি বিশেষ চরিত্রে, যেখানে তাঁর ছোট্ট উপস্থিতি আবারও দর্শকের মন কেড়েছিল।
কিন্তু হঠাৎ করেই ছোট পর্দা থেকে যেন একটু দূরে সরে গেলেন তিনি। অনেকে প্রশ্ন তোলেন, কেন আর দেখা যাচ্ছে না তাঁকে ধারাবাহিকে? এই প্রশ্নের জবাব নিজেই দিয়েছেন সন্দীপ্তা, দীর্ঘদিন একঘেয়ে কাজের চাপ আর নিরবিচারে চলতে থাকা শ্যুটিংয়ের চাপে কোথাও গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন অভিনেত্রী। তাই ‘প্রতিদান’ শেষ হওয়ার পর নিজেই সিদ্ধান্ত নেন, আর ধারাবাহিক করবেন না। এদিন এক সাক্ষাৎকারে সন্দীপ্তা বলেন,”প্রথম ধারাবাহিক থেকেই অনেক ভালোবাসা পেয়েছি, প্রতিটা চরিত্রই ছিল হিট, সেই জন্য তেমন স্ট্রাগল করতে হয়েনি পর পর ধারাবাহিক পেতে।
কিন্তু ২০১৭-১৮ সালের পর কেমন যেন একটা ক্লান্তি এসে গেছিল। রোজ রোজ টিভির পর্দায় ওই একই চরিত্র করতে করতে হাপিয়ে উঠেছিলাম। একটা বিরতির খুব প্রয়োজন ছিল। ‘প্রতিদান’ শেষ হওয়ার পর ঠিক করি আর ধারাবাহিক করব না।” তিনি এদিন আরও বলেন,”সেই সময় যদি ওয়েব সিরিজ শুরু না হত, তাহলে হয়তো ধারাবাহিক ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে বসেই থাকতাম কোনও কাজ না পেয়ে, কারণ বড় পর্দায় বললেই তো আর সেখানে সুযোগ পাওয়া যায় না।” উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে ‘আস্তে লেডিস’ ওয়েব সিরিজ দিয়ে ওটিটিতে অভিষেক ঘটে সন্দীপ্তার।
আর তারপর থেকে নানা গল্প ও চরিত্রে নিজেকে নতুনভাবে তুলে ধরেছেন তিনি। ‘নষ্টনীড়’–এর মতো সিরিজে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে। বড় পর্দাতেও তিনি কাজ করেছেন, যেমন ‘একান্নবর্তী’ বা ‘রাজস্থানে রুদ্ধশ্বাস’-এর মতো ছবিতে তাঁকে দেখা গিয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায়। নতুন এই মাধ্যমগুলিতে কাজ করে তিনি যেমন নিজের সৃজনশীলতা আবার খুঁজে পেয়েছেন, তেমনি দর্শকের কাছেও ফিরেছেন নতুন রূপে। শুধু অভিনেত্রী নন, সন্দীপ্তা একজন মনোবিজ্ঞানীও। অ্যাপ্লাইড সাইকোলজিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির পাশাপাশি করেছেন স্পেশাল ডিপ্লোমা।
আরও পড়ুনঃ “শাশুড়ি নই, আমি ওর মা!”— চৈতালি দাশগুপ্ত’র কাছে নিজের সন্তানেরও আগে বড় বৌমা বিদীপ্তা! যেখানে শাশুড়ি-বৌমা মানেই দ্বন্দ্ব, সেখানে চৈতালি-বিদীপ্তার সম্পর্ক ঠিক যেন মা-মেয়ের মতো! জানেন বিদীপ্তার জীবনে চৈতালি’র অবদান?
এক সময় ভেবেছিলেন এমবিএ করে কর্পোরেট দুনিয়ায় নিজের কেরিয়ার গড়বেন, কিন্তু ভাগ্যের রাস্তায় তাঁর নাম লেখা ছিল ক্যামেরার সামনে। অভিনয়ের পাশাপাশি কিছু সময় পর্যন্ত প্র্যাকটিসও চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। আজ, ক্যামেরার সামনে বহু অভিজ্ঞতার সাক্ষী হলেও সন্দীপ্তা নিজের পেশাগত নিরাপত্তা নিয়ে একপ্রকার উদ্বেগেই থাকেন। তাঁর কথায়, সবটাই সেই উপরে থাকা পরিচালক, ভাগ্যের উপর নির্ভরশীল। তিনিই ঠিক করেন কে কবে কোন চরিত্রে সুযোগ পাবেন। সেই বিশ্বাসেই সন্দীপ্তার আজকে একজন প্রতিষ্ঠিত এবং জনপ্রিয় অভিনেত্রী।
“আমাদের দিদি নাম্বার ওয়ান একজনই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু বাংলার নন, ভারতের দিদি নাম্বার ওয়ান!”— রচনার মন্তব্যে ফের উত্তাল নেটপাড়া! শুরু বিতর্ক, নেটিজেনরা বলছেন, ‘চাটুকারিতা’ ‘সস্তা রাজনৈতিক মন্তব্য!’