“শাশুড়ি নই, আমি ওর মা!”— চৈতালি দাশগুপ্ত’র কাছে নিজের সন্তানেরও আগে বড় বৌমা বিদীপ্তা! যেখানে শাশুড়ি-বৌমা মানেই দ্বন্দ্ব, সেখানে চৈতালি-বিদীপ্তার সম্পর্ক ঠিক যেন মা-মেয়ের মতো! জানেন বিদীপ্তার জীবনে চৈতালি’র অবদান?

অভিনেত্রী ‘বিদীপ্তা চক্রবর্তী’র (Bidipta Chakraborty) জন্মদিন মানেই এক বিশেষ আবেগের দিন তাঁর পরিবার তথা শাশুড়ি ‘চৈতালি দাশগুপ্ত’র (Chaitali Dasgupta) কাছেও। গত ১৩ জুন অভিনেত্রীর জন্মদিনেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে সাধারণ কোনও শাশুড়ি-বৌমার সম্পর্ক নয়, বিদীপ্তা ও তাঁর শাশুড়িমার মধ্যেকার টানটা যেন মা-মেয়ের মতোই। সম্পর্কের আড়ালে লুকিয়ে থাকা বন্ধুত্বই তাঁদের এতখানি দৃঢ় করেছে। কাগজে কলমে তাঁরা শাশুড়ি ও বৌমা হলেও, মনেপ্রাণে তাঁরা পরস্পরের নির্ভরযোগ্য বন্ধু।

চৈতালি দাশগুপ্ত নিজেই একজন বিখ্যাত দূরদর্শন সঞ্চালিকা এবং পরবর্তীকালে জনপ্রিয় অভিনেত্রীও, বিদীপ্তাকে চেনেন তাঁর কৈশোরকাল থেকে। প্রথমে অভিনেত্রীর বাবা-মা ও তিন বোনের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ঘটে নাটকের সূত্রে, যেখানে রাজা দাশগুপ্তর সিরিয়ালে অভিনয় করতেন ওরা। তখন থেকেই বিদীপ্তা চৈতালিকে ‘কেয়া পিসি’ আর তাঁর স্বামীকে রাজাকে ‘রাজাদা’ বলেই ডাকতেন। বিয়ের আগে থেকেই তাঁদের মধ্যে যে সম্পর্ক, পরবর্তী সময়ে আরও মজবুত হয়েছে।

বিদীপ্তার প্রথম বিয়ে ও পরে বিচ্ছেদের সময়ে চৈতালিই হয়ে উঠেছিলেন তাঁর একমাত্র আশ্রয়। বিদীপ্তার জীবনে দুঃসময় এসেছিল প্রথম দাম্পত্যে ফাটল ধরায়, সেই সময়ে তিনি একা ছিলেন না, পাশে ছিলেন চৈতালিও। এমনকী এক মারাত্মক দুর্ঘটনার পর বিদীপ্তা যখন জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছিলেন, তখনও তাঁর পাশে ছায়ার মতো দাঁড়িয়ে ছিলেন শাশুড়িমা। ওই সময় থেকেই তাঁদের সম্পর্ক একটা নতুন মাত্রা পায়। বিদীপ্তাও নিজের মেয়েকে নিয়ে চৈতালিদের বাড়িতে থাকতেন।

ছোট্ট ‘সোমরি’ (বিদীপ্তার বড় মেয়ে) তখন পাঁচ বছরের। এই ছোট্ট নাতনিকে মানুষ করার সবটুকু দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন চৈতালি। তখন থেকেই শুরু হয় নতুন বিদীপ্তার নতুন জীবন। পরবর্তী সময়ে চৈতালির বড় ছেলে, পরিচালক বিরসা দাশগুপ্ত ও বিদীপ্তার মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। লিভ-ইন থেকে বিবাহ, সমস্ত পথেই চৈতালি ছিলেন তাঁদের পাশে। এমনকী বিদীপ্তার প্রাক্তন স্বামীর মৃত্যুর সময়ও তিনি তাঁর পাশে থেকেছেন। এখন বিদীপ্তা ও বিরসার দুই কন্যা, সোমরি ও ভ্রমর—দুজনেই চৈতালির প্রাণ।

জন্মদিন হোক কিংবা পারিবারিক অনুষ্ঠান, চৈতালি নিজের দুই বৌমাকেই মেয়ের মতো দেখেন, আর বিদীপ্তাও কেয়া পিসির সঙ্গে এমন অনেক বিষয় ভাগ করে নেন, যেটা তিনি স্বামীর সঙ্গেও করেন না। বিদীপ্তার জন্মদিনে চৈতালি একেবারে ঘরোয়া বাঙালি নিয়মে পালন করেছিলেন সেই বিশেষ দিনটি। আগের রাতেই কেক কাটা, বাঙালি রান্না—ডাল, পাঁঠার মাংস, পাঁচরকম ভাজা আর পায়েসে জমে উঠেছিল পারিবারিক উৎসব।

আরও পড়ুনঃ নোবেলের পর, আবার নারী সংক্রান্ত বিতর্কের মুখে সারেগামাপা খ্যাত গায়ক! সম্প্রতি কন্যা সন্তানের বাবা হয়েছেন! প্রতিবেশীর অভিযোগে তোলপাড় শিল্পীমহল! কু’কীর্তি ফাঁস হতেই অস্বীকার গায়কের! চেনেন এই গায়ককে?

চৈতালির নিজের হাতে রান্না করা পায়েস নাকি তাঁর দুই বৌমারই প্রিয়। জন্মদিনে বিদীপ্তাকে শাড়ি উপহার দিয়ে ভালোবাসায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন চৈতালি। তাঁদের এই আন্তরিক সম্পর্ক আজকের দিনে এক দৃষ্টান্ত। যেখানে ‘শাশুড়ি-বৌমা’ সম্পর্ক কেবল সাংসারিক অশান্তি ও একপ্রকার তেলে-জলের মতো রসায়নের উদাহরণ মনে করা হয়, সেখানে তাঁরা প্রমাণ করলেন যে এটা একটা সামাজিক পরিচয়, কিন্তু হৃদয়ে তাঁরা আসলে সত্যিকারের মা-মেয়ে।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।