‘ধুর তোমরা যে কিসব দেখাও, এতগুলো বউ এতগুলো বিয়ে…’! বিরক্ত মুখ্যমন্ত্রী! জুন মালিয়াকে দিলেন বকা

তিনি বাংলা ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম জনপ্রিয় এবং এক‌ইসঙ্গে সুদক্ষ অভিনেত্রী। টেলিভিশন থেকে সিনেমার পর্দা বা ওয়েব সিরিজ সব জায়গাতেই নিজের অভিনয় দক্ষতার দারুন বিচ্ছুরণ ঘটিয়েছেন তিনি। আসলে তিনি থাকা মানেই সেই সিনেমা সিরিয়াল আলাদা মর্যাদা পায়। সেই কাজটি দেখার প্রতি আগ্রহ আরও বেশি করে জন্মায় দর্শকদের।

তিনি টলিউডের অন্যতম দাপুটে অভিনেত্রী জুন মালিয়া। একেবারেই আর পাঁচজনের মত সাদামাটা পরিবার থেকে উঠে আসেননি তিনি। ‌ তিনি রাজ পরিবারের মেয়ে। মহিষাদল রাজ পরিবারের সুকন্যা তিনি। ৯০ এর দশকের ‘সিঙ্গেল মাদার’ শব্দটা যখন সমাজে সেই ভাবে ঠাঁই পেতো না। যখন এই শব্দটিকে সবাই ভয় পেতো ঠিক সেই সময় দাঁড়িয়ে তীব্র সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন জুন। সমাজের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে নিজের দুই ছোট ছোট ছেলে মেয়েকে একাই মানুষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন নায়িকা। সেই সময় দাঁড়িয়ে তিনি সিঙ্গেল মাদার হওয়ার সাহস দেখিয়েছিলেন।

জানা যায়, স্বামীর সঙ্গে ভালবাসাহীন সম্পর্ক থেকে নিজের সিদ্ধান্তে বেরিয়ে এসেছিলেন তিনি।খোরপোষটুকুও নেননি নিজের স্বামীর থেকে। খুবই অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে যাওয়ার দরুন অভিনেত্রীর দুই সন্তানও হন তার খুব অল্প বয়সেই। শিবেন্দ্র এবং শিবাঙ্গী। বাবা-মার সহায়তায় নিজের দুই ছেলেমেয়েকে একাকী বড় করে তুলেছেন। ‌

বাংলা চলচ্চিত্র দুনিয়ায় তখন নতুন মুখের আকাল পড়েছিল। ঋতুপর্ণা, দেবশ্রী, শতাব্দী, ইন্দ্রানীদের আধিপত্যের মাঝে এক ঝোড়ো হাওয়া ছিলেন জুন। যেমন সুন্দর চেহারা, তেমনই অভিনয় দক্ষতা এই দুইয়ের মিশেলেই অজান্তেই বাঙালির মনে স্থায়ী জায়গা করে নেন এই অভিনেত্রী। ধীরে ধীরে বয়স বেড়েছে আজ তিনি সেই ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম অভিজ্ঞতা সম্পন্ন অভিনেত্রী। বহু সময় বিভিন্ন বাংলা ধারাবাহিকে দেখা মেলে তার। এই মুহূর্তে গাঁটছড়া ধারাবাহিকে ঋদ্ধিমানের মায়ের চরিত্রে কাজ করছেন তিনি। আর তাই অকপটে বলেন ছোটদের সঙ্গে যেমন সহজভাবে মিশি গল্প করি আড্ডা মারি, তেমনি আবার ভুল হলে বকাও দিই।

দাম্পত্য জীবন ভেঙে যাওয়ার পর সুদীর্ঘ ১৪ বছর ধরে প্রেমিক সৌরভ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে আবদ্ধ ছিলেন তিনি। কিন্তু সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ছেলে-মেয়েরা বড় না হওয়া পর্যন্ত সেই সম্পর্ককে স্বীকৃতি দেবেন না। এরপর ২০১৯ সালের ১লা ডিসেম্বর ৪৯ বছর বয়সে সৌরভ চট্টোপাধ্যায়কে বিয়ে করেন সব ক্ষেত্রে ছকভাঙা জুন মালিয়া। তাঁর এই বিয়ে ঘিরে যথেষ্ট হইচই হয়েছিল মিডিয়ায়।

শুধুমাত্র অভিনয় নয় রাজনীতির অঙ্গনেও পা রেখেছেন তিনি। ‌ অভিনেত্রীর কথায় ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গ এবং তৃণমূল কংগ্রেসের অবস্থা দেখি তার মনে হয়েছিল এবার তার দিদির পাশে দাঁড়ানো দরকার। আর সেই ভাবনা থেকেই ভোটে দাঁড়ান তিনি। মেদিনীপুর কেন্দ্র থেকে বিধানসভা ভোটে জিতে এখন বিধায়ক তিনি। আর তাই একদিন শুটিং করেন একদিন নিজের বিধানসভা কেন্দ্রের কাজ করেন এমনটাই এখন অভ্যাসে দাঁড় করিয়ে ফেলেছেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি তার কাজ দেখেন? এই প্রশ্নের জবাবে অভিনেত্রী বলেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বদাই আমার কাজের প্রশংসা করেন। এমনকি তিনি গাঁটছড়া নিয়মিত দেখেন। বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন‌ও করেন তিনি। যদিও অভিনেত্রী জানিয়েছেন বাংলা ধারাবাহিকে বহুবিবাহ, এক পুরুষের জীবনে এতগুলো নারী দেখানো পছন্দ করেন না বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। কারণ তিনি মনে করেন তা সমাজের পক্ষে ক্ষতিকারক।