দুর্গাপূজো বলতেই বাঙালির মনে ফুটে ওঠে দেবী দুর্গার একাধিক রূপ। প্রতিটি বাঙালি দেবী দুর্গার গল্প ছোট থেকে শুনে বড় হয়েছে। আর সেই গল্প শোনার এবং দেখার একটি দিন হল মহালয়া। বহুদিন ধরে এই মহালয়ার দিন সকালে বাঙালি দেবী দুর্গার মহিষাসুর মহিষাসুরমর্দিনী রূপের গল্পের স্বাদ পেয়েছে। প্রথমে যখন মানুষের জীবনে টেলিভিশনের আবির্ভাব হয়নি তখন রেডিওর মাধ্যমে কবি বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠে মহিষাসুরমর্দিনী শুনতো বাঙালিরা।
তারপরও যত আধুনিক হয়েছে মানুষের জীবন সেই সাথে সাথে টেলিভিশনের পর্দায় উঠে এসেছিল মহিষাসুরমর্দিনী অনুষ্ঠান। সর্বপ্রথম যখন টেলিভিশনের পর্দায় মহিষাসুরমর্দিনী অনুষ্ঠান পরিচালিত হয় সেটি ছিল দূরদর্শন চ্যানেল । সেই কবি বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের গলা চলতো পিছনে সঙ্গে একজন নারী যিনি মহিষাসুরমর্দিনী রূপে পুরো গল্পটিকে অভিনয় করে দেখাতেন।
টেলিভিশনে দুর্গার চরিত্রে মানুষ যাকে দেখতে অভ্যস্ত ছিল তিনি হলেন সংযুক্তা ব্যানার্জি। ১৯৯৪ সালে দেবী দুর্গার বিভিন্ন রূপ নিয়ে টেলিভিশনে প্রথমবার সামনে আসেন সংযুক্তা। সেই বছর তাকে দেখে তার অভিনয় দেখে দর্শকরা মুগ্ধ হয়েছিলেন। তারপরে বহু বছর ধরে তাকেই টিভির পর্দায় দেখা গেছে মা দুর্গার রূপে।
শ্রী শিক্ষায়তনে প্রথম বর্ষের ছাত্রী সংযুক্তাকে এই অনুষ্ঠানের প্রযোজক এবং পরিচালকের দেখামাত্রই পছন্দ করেন। এই অনুষ্ঠান প্রচারিত হওয়ার আগে বেশ কয়েক মাস ধরে রিহার্সাল চলত। রিহার্সালের সময় থাকতো একজন ফাইট মাস্টার তিনি সংযুক্তাকে শেখাতেন কিভাবে ত্রিশূল ধরবে, কিভাবে চক্র ধরবেন, কিভাবে মহিষাসুরের সাথে তিনি যুদ্ধ করবে!
সময়ের সাথে সাথে মানুষের পছন্দ পরিবর্তন হয়ে যায় এখন টেলিভিশনে এসেছে ভিএফএক্স অনেক উন্নত চিত্রনাট্য, যার ফলে মহালয়ার আসল গল্প প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছেন।
এখন মহালয়া দিন ভোরে প্রত্যেকটি টিভি চ্যানেলে মহালয়ার অনুষ্ঠান দেখানো হলেও বাঙালি সংযুক্তা ব্যানার্জির মতো কাউকে খুঁজে পাইনি ।
কিন্তু এত বছর কেটে যাওয়ার পরে এখন কোথায় আছেন সংযুক্ত? প্রসঙ্গত তিনি এখন কানাডা বাসি। তিনি সেখানেই নিজের একটি নাচের স্কুল খুলেছেন। তার পরিবারের সাথে তিনি কানাডাতেই বসবাস করেন। বিদেশে বসবাস করলেও তিনি তার বাঙালিয়ানা ভুলে যাননি। পূজার কটা দিন তার নাচের স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়েই একাধিক শো করে কাটান তিনি। এইভাবে তিনি এখনো নিজের নিত্য সত্তা ধরে রেখেছেন।