মৃ’ত্যু’র পরে তাঁর দেহ লুকিয়ে রেখেছিলেন তাঁর ছেলে! কিন্তু কেন? কেন এই করুণ ঘটনা ঘটেছিল অভিনেত্রী সঙ্ঘমিত্রা ব্যানার্জির সঙ্গে?

নব্বই এর দশকের একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন সংঘমিত্রা ব্যানার্জী (Sanghamitra Banerjee)। মূলত খলনায়িকার চরিত্রেই দেখা যেত এই অভিনেত্রীকে। তাঁর অভিনয় দক্ষতা এতটাই ছিল যে, তিনি পর্দায় এলেই রেগে যেতেন দর্শক। কখনও প্রেমিকা আবার কখনও বা কু’চুটে জা’এর চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।

কলকাতা বিশ্ববিদ্য়ালয় পড়াশোনা করার সময় মহানায়ক উত্তম কুমারের নজরে আসেন তিনি। মহানায়ক পরিচালিত শেষ ছবি ‘কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী’ ছবিতে প্রথম অভিনয় করার সুযোগ মেলে তাঁর। প্রথম ছবিতেই ‘বেঁধেছি বীণা’ গানের সঙ্গে বাইজি বেশে নৃত্য় পরিবেশন করে, রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন সংঘমিত্রা।

রাজলক্ষ্মী দেবী, গীতা দে, রেনুকা রায়ের উত্তরসূরি হিসেবে পর্দায় উঠে এসেছিলেন সংঘমিত্রা। প্রায় তিন দশক ধরে, তিনশোরও বেশি ছবিতে দাপিয়ে কাজ করেছেন তিনি। সংঘমিত্রার অভিনীত ছবিগুলির মধ্য়ে অন্য়তম ছিল সকাল সন্ধ্যা, বাজি, দেবী, ইন্দ্রজিৎ, শুভদৃষ্টি, চৌধুরী পরিবার, লাঠি ইত্যাদি বিখ্যাত বাংলা সিনেমা।

পর্দার খলনায়িকা বাস্তবে ছিলেন রসিক ও ঘরোয়া স্বভাবের। বিয়ে করেছিলেন এলাহাবাদবাসী জয়ন্ত বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে। পরে, তাঁদের এক পুত্র সন্তান হয়। কিন্তু সংঘমিত্রার অভিনয় জগতে আসাটাকে কখনওই ভালো ভাবে দেখেননি তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। কিন্তু সে সমস্ত কিছুর তোয়াক্কা কোনও কালেই করেননি অভিনেত্রী।

পরবর্তীকালে, ক্যান্সারে আক্রান্ত হন তিনি। ক্যান্সার আছে, তা জানার পর অভিনয় জগত থেকে সরে এসেছিলেন তিনি। তবে ভক্তদের এব্যাপারে জানাননি কিছু। তিনি চেয়েছিলেন নিজের স্টারডম বজায় রাখতে। তাই মারা যাওয়ার আগে ছেলেকে অনুরোধ করেছিলেন, তাঁর মৃতদেহ যেন কেউ দেখতে না পান। সবকিছুই যেন ভক্তদের থেকে লুকিয়ে করা হয়। মায়ের কথা মতোই শ্রাদ্ধ শান্তির কাজ শেষ হওয়ার পর অভিনেত্রীর মারা যাওয়ার খবর সকলকে জানান তাঁর ছেলে।