টলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় দুই অভিনেত্রী হলেন স্বস্তিকা মুখার্জি এবং ইন্দ্রানী হালদার। স্বস্তিকা প্রথম দিকে বাণিজ্যিক ছবিতে অভিনয় করলেও পরবর্তীকালে তিনি মূল বাণিজ্যিক ধারা ছবি থেকে সরে আসেন এবং খানিকটা অন্য কনসেপ্ট এর ছবিতে অভিনয় করতে শুরু করেন। অন্যদিকে ইন্দ্রানী হালদার বরাবর মেনস্ট্রিমে বাণিজ্যিক ধারার ছবি করে এসেছে তবে পরবর্তীকালে তিনি ছোট পর্দায় আসেন এবং এখন নিজেকে অন্য ধারার ছবিতে মেলে ধরতে চাইছেন।
তবে এবার দুই নায়িকার মধ্যে বাঁধলো গন্ডগোল। তবে সরাসরি নয় পরোক্ষভাবে এবং সেটা সিনেমা ঘটিত কারণে। স্বস্তিকা মুখার্জিকে আমরা বরাবর ঠোঁটকাটা প্রতিবাদী হিসেবেই জেনে এসেছি। তিনি নিজের শরীরের গঠন থেকে খুল্লাম খুল্লা যৌ’ন ধারণার প্রকাশ কোন কিছুই বাদ রাখেন না সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে। এবার তার রাগ গিয়ে পরল জনপ্রিয় প্রযোজনা সংস্থা শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস এর উপরে, যাদের সঙ্গে তার সম্পর্ক খুবই ভালো।
আসলে এক সপ্তাহ হল মুক্তি পেয়েছে স্বস্তিকা মুখার্জি অভিনীত ছবি শ্রীমতী যা এক গৃহবধূর স্বপ্ন উড়ানের গল্প বলে। অন্যদিকে গতকাল মুক্তি পেয়েছে কুলের আচার যেখানে রয়েছেন বিক্রম চ্যাটার্জী ইন্দ্রানী হালদার সুজন মুখোপাধ্যায় এবং মধুমিতা সরকার। শ্রীমতি ছবির ডিস্ট্রিবিউটার এসভিএফ আবার কুলের আচারের প্রযোজক এসভিএফ। আর এখানেই লেগেছে গন্ডগোল কারণ স্বস্তিকা অভিযোগ করেছে যে এসভিএফ নিজেদের প্রযোজনা করা ছবিকে গুরুত্ব দিচ্ছে বেশি তাই শ্রীমতীকে হল থেকে তুলে দেওয়া হচ্ছে।
শুক্রবার রাতে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে স্বস্তিকা লিখলেন, ‘বাংলা ছবি দেখুন, বাংলা ছবি সাপোর্ট করুন কিন্তু কে কীভাবে করবে? ডিসট্রিবিউটার যে ছবি চালাতে চাইবে সেই ছবি চলবে, নতুন প্রোডিউসার হলে তাকে কোনরকম জায়গা দেওয়া হবে না, উঠতি ডিরেক্টর হলে তাকে পাত্তা দেওয়ার দরকার নেই। আর নারী কেন্দ্রীক ছবি হলে তো প্রথম থেকেই বাদ এর খাতায়। ভাল সেল হলেও, মানুষ উচ্ছসিত প্রশংসা করলেও, রিভিউ/ফিডব্যাক সবদারুণ হলেও তাতে কি? হল দেওয়া হবে না আর দেওয়া হলেও এমন শো টাইম দেওয়া হবে যাতে কেউ না যেতে পারে, সেল তলানি তে ঠ্যাকে এবং তৃতীয় সপ্তাহে ছবি উঠিয়ে দেওয়া যায়। শ্রীমতীর কপালেও এটাই হল।’
এইটুকু পড়েই দর্শকরা চমকে উঠেছেন কারণ স্বস্তিকা বলছেন মানে তার যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। স্বস্তিকা অবশ্য নিজের মুখ এখানেই বন্ধ রাখেননি, তিনি আরো বলেছেন। প্রথম সপ্তাহে ‘শ্রীমতী’-র ১৭টা হল ছিল। আর দ্বিতীয় সপ্তাহে সেটাই হয়ে গেল ৪টে। তাও সমস্ত শো দুপুরে। এসভিএফের নাম উল্লেখ করে স্বস্তিকা লিখলেন, ‘আমাদের ডিসট্রিবিউটর SVF। তাদের নিজেদের প্রযোজিত ছবি এল আজ, তাই সব ভাল শো তাদের, এটাই তো হয়ে এসেছে, এটাই হবে… পরের সপ্তাহে এমনিও উঠিয়ে দেবে। ব্যাস বাংলা ছবিকে এইভাবেই বাংলা ছবির ডিসট্রিবিউটররা সাপোর্ট করবে। শুধু মন দিয়ে অভিনয় করলে হবে? ছবি চলতে দেবে না, তাই নিয়ে ও যুদ্ধ করতে হবে। করেও কিছু হবে না… কাল PVR Diamond Plaza – বিকেল ৪.২০ শো তে ১০০ জনের ওপরে দশর্ক ছিলেন কিন্তু তাও আজকে থেকে একটাই শো দুপুরে। কোটি টাকা খরচ করে ছবি বানানো হয় কিন্তু তাকে দুটো সপ্তাহ সময় দেওয়া হবে না।’
এর থেকেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে এসভিএফ এর উপর কতটা ক্ষেপে রয়েছেন স্বস্তিকা মুখার্জি। তবে সবাই এটাই কুর্নিশ জানাচ্ছেন স্বস্তিকার উদ্দেশ্যে যে এসভিএফ এর সঙ্গেই ওয়েবসিরিজের অধিকাংশ কাজ করেন স্বস্তিকা। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে স্বস্তিকা দুবার ভাবলেন না।