যখন মানুষ অনেক খাটাখাটানির পর একটা সাধারণ জায়গা থেকে অনেক উঁচু জায়গায় পৌঁছে যায় তখন দুটো জিনিস ঘটে।অনেকেই পা মাটিতে রেখে চলে আবার অনেকের মধ্যে এমন পরিবর্তন আসে যে তাদেরকে চেনা যায় না। বর্তমানে প্রযুক্তির যুগে সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার এবং ইউটিউবার এই দুটো খুব জনপ্রিয় পেশা। এখন এখানে একটু অন্য রকমের কনটেন্ট দেখালেই লাখ লাখ ভিউস আর ব্র্যান্ড প্রমোশনে উঠে যায় প্রচুর টাকা। ২০-২১ বছরের ইউটিউবাররা মাসের দু তিন লক্ষ টাকা করে উপার্জন করেন, তাতে তাদের কিছুজনের মাথার ঠিক থাকে আবার কিছু জন ধরাকে সরা জ্ঞান করে। বাংলার প্রথম সেলিব্রিটি ইউটিউবার যদি কাউকে বলা হয়ে থাকে সে হলো কিরণ দত্ত।
নদীয়ার ছেলে কিরণ কীভাবে উঠেছে সেই জার্নিটা আমরা প্রত্যেকেই জানি যারা তার ভিডিও ফলো করে আসছি প্রচুর দিন ধরে। আজ থেকে সাত বছর আগে সে যখন প্রথম ভিডিও আপলোড করেছিল কেউ দেখত না তারপর হঠাৎ করে দু তিন বছর পর থেকে তার ভিডিও ভাইরাল হতে শুরু করে এবং অবশ্যই সেটা তার কন্টেন্টের জন্য। শুভ দিকে টলিউড স্টারদের প্রচুর উল্টোপাল্টা মজা করে সে ভিডিও বানাতে আর সেগুলো ভাইরাল হত পরবর্তীকালে অবশ্যই নিজে যখন সঙ্গে দেখা করে এবং একটি সিনেমায় অভিনয় করে ফেলে তখন এইসব ভিডিও আর দেখা যায় না।সত্যি বলতে এখন কিরণের সেই পুরনো ভিডিও’র স্বাদ আমরা আর পাই না কারণ সে তো ইউটিউব ভিডিও আপলোডই করে না সেরকম। এখন সে ব্র্যান্ড প্রমোশন আর সিনেমাতেই ব্যস্ত। সে কথা যাক।
এবার কিরণ একটা কান্ড ঘটিয়েছেন সম্প্রতি। গতকাল তিনি নিজের জীবনের প্রথম গাড়ি কিনেছেন। সেটা বিলাসবহুল। সেটা নিয়ে ইতিমধ্যেই অনেক সমালোচনা শুরু হয়েছে। তার গাড়ি কেনা নিয়ে হয়তো অনেকের হিংসা হতে পারে, সেটা কেউ প্রকাশ্যে বলছে না। যদিও কিরণ যা উপার্জন করে তাতে তার অনেক দিন আগেই গাড়ি কিনে ফেলা উচিত ছিল। তবে কালকে দুটো জিনিস দেখে মানুষের খারাপ লেগেছে।প্রথম হলো সে যখন ক্যাব থেকে নেমে ‘যা তোকে আজ থেকে আর লাগবে না, তুই বেরো’ বলে হয়তো সেটা মজার ছলে হতে পারে কিন্তু অনেক মানুষের বিশেষ করে যারা ক্যাবের উপর নির্ভরশীল বা ক্যাব ড্রাইভার তাদের জিনিসটা ভালো লাগেনি। অনেকেই বলেছেন যে, দাদা নিজের দামি গাড়িটা রাস্তায় খারাপ হলে বাড়ি ফিরতে তো সেই ক্যাবটাই ভরসা। কিছুজন বলছেন যে হঠাৎ টাকা পেয়ে গাড়ি কিনে ধরাকে সরা জ্ঞান করছো?
কিছু জনের আবার সমস্যা যে জীবনের প্রথম গাড়ি কিনতে গেলে যারা পৃথিবীর আলো দেখিয়েছিল তাদের উপস্থিতি অবশ্যই দরকার ছিল। ধুবুলিয়া কলকাতা থেকে এমন কিছু দূর নয়। একটা গাড়ি পাঠিয়ে বাবা মাকে কলকাতার ফ্ল্যাটে আনাই যেত। শুধুমাত্র অঘোষিত ‘প্রেমিকা’ অন্তরাকে নিয়ে গিয়ে গাড়ি কেনা এবং অন্তরার সেই গাড়িতে পুজো করা’কে অনেকেই ভালোভাবে দেখেননি। প্রথম গাড়িটা চড়েছে অন্তরা আর সেটাই অনেকের লেগেছে যে প্রথম রাইডটা তো মায়ের সঙ্গেই হতে পারতো।
তবে এবার বাকিরা বলছেন যে নিজের মাকে ভালবাসলে, সম্মান করলে তো গাড়ি চড়াবে, মায়েরা তো কিরণের গাড়িতে সেফ নয়! কিন্তু হঠাৎ মা নিয়ে কিরণ দত্তের সম্পর্কে এরকম মন্তব্য কেন? আসলে এক নেটিজেন কালকে অন্তরাকে নিয়ে খুব বাজে মন্তব্য করেছে কিরণের উদ্দেশ্যে।
তিনি লিখেছিলেন যে এতদিন ফ্ল্যাটে আলু খেতে এবার গাড়িতে আলু খাবে। মন্তব্যটা খুবই অশ্লীল, এ কথা সত্যি কিন্তু পাল্টা যে উত্তরটা কিরণ দত্তের মতো একজন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার, অভিনেতা, ইউটিউবার দিয়েছেন সেটা কোনোভাবেই কাম্য ছিল না। তিনি লিখেছেন যে, তোমার মাকে নিয়ে এসো একদিন আমার গাড়িতে। এর মানেটা ঠিক কী দাঁড়াচ্ছে এটা সচেতন পাঠকদের আশা করি বলে দিতে হবে না। বাকিটা আমার নিজেরাই ঠিক করে নিন আপনাদের আইডল কে আপনারা কী বলবেন
View this post on Instagram