পাশে ছোট্ট সন্তান, চালকের আসনে মা! অ্যাপ ক্যাব চালিয়ে পুরনো ব্যবসা আর সংসারকে দাঁড় করানোর চেষ্টা! মেয়েদের “দুর্গা” নন্দিনী

জীবনে এমন অনেক মানুষের গল্প আমরা শুনতে পাই যা আমাদের অনুপ্রাণিত করে। এমন অনেক মানুষ রয়েছে যারা জীবনের প্রতিটা পদে পদে ব্যর্থতা অথবা বাধার সম্মুখীন হন। কিন্তু সেই সব কিছুকেই অতিক্রান্ত করে তারা জীবন যুদ্ধে জয়ী হয়। আর এই সকল মানুষই তো আমাদের প্রত্যেকটা জীবনকে উদ্বুদ্ধ করে।

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়াতে এমনই একটি লড়াকু মায়ের গল্প ভাইরাল হয়েছে। যে গল্প জানার পরে সত্যিই নেটিজেনরা থেকে সাধারণ মানুষ প্রত্যেকেই প্রশংসা না করে পারেননি। এই গল্পটি সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করেছেন বেঙ্গালুরুর একটি বেসরকারি সংস্থার সিইও রাহুল শশী।

প্রসঙ্গত কদিন আগে তিনি রাস্তার ধারে নিজের অ্যাপ ক্যাব ট্যাক্সির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তারপরে দেখলেন হঠাৎই একটি ট্যাক্সি এসে সেখানে দাঁড়ালো এবং ড্রাইভারের সিটে বসে আছে একজন মহিলা। রাহুল প্রথমে বুঝতে পারিনি যে সে যে ট্যাক্সি বুক করেছে সেটাই এসেছে।

তারপরে ট্যাক্সির ড্রাইভার সেটে বসে থাকা সেই মহিলা রাহুলকে উদ্দেশ্য করে বলে ‘স্যর আসুন।’ মহিলা কন্ঠে শুনে একটু কৌতূহলের সাথেই তিনি ট্যাক্সির ভিতরে দেখেন এবং সেখানে নজর পরে যে মহিলা একা নন ট্যাক্সির সামনের সিটে বসে আছে আর একটি ছোট্ট মেয়ে। খুব নিশ্চিন্ত সেখানে ঘুমোচ্ছে।

রাহুল বলেন, “ট্যাক্সিতে উঠে নিজের কৌতূহল চাপতে পারিনি। জিজ্ঞাসাই করে ফেললাম, ম্যাম, ও কি আপনার মেয়ে?”গাড়ি চালাতে চালাতে মহিলাচালক বললেন, “হ্যাঁ, স্যর। এখন ওর স্কুলে ছুটি চলছে। তাই ওকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়েছি। আমার গাড়ি চালানোও হচ্ছে, আবার মেয়েকে দেখাও হচ্ছে।”

app cab
নেটমাধ্যমে রাহুলের শেয়ার করা ঘটনা থেকে জানা গিয়েছে, ওই মহিলাচালকের নাম নন্দিনী। বেঙ্গালুরুতে অ্যাপক্যাব চালান। দিনে ১২ ঘণ্টা কাজ করেন। তবে এই সময় পেলে তিনি ১২ ঘণ্টার থেকে বেশিও কাজ করতে পারেন। রাহুলকে নন্দিনী বলেন, তাঁর খাবার সরবরাহ করার একটি ব্যবসা ছিল । নিজের সমস্ত সেভিংস দিয়ে সেই ব্যবসা শুরু করেছিলেন বছর কয়েক আগে। কিন্তু কোভিডের কারণে সেই ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। এই পেটের দায়ে কিছু তো করতেই হত। তাই বাধ্য হয়েই অ্যাপ ট্যাক্সি চালানো শুরু করেন। এই কাজ করে যে টাকা আয় করছেন, তা দিয়েই আবার পুরনো ব্যবসাকে চালু করতে চান নন্দিনী।

এই গল্প শোনার পরে নন্দিনীর কাহিনী যে রাহুলকে উদ্বুদ্ধ করেছে তা তার কথায় প্রকাশ পেয়েছে। তাঁর কথায়, “নন্দিনীর এই কাহিনি সত্যিই প্রেরণাদায়ক। যেখানে ব্যর্থ হয়ে অনেকেই হাল ছেড়ে দেন, সেখানে নন্দিনী একটি দৃষ্টান্ত হয়ে উঠলেন।”