নব্বইয়ের দশকে বলিপাড়ার অন্যতম ডাকসাইটে সুন্দরী এবং জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন আয়েশা জুলকা। আমির খান, সলমন খান, গোবিন্দ, অক্ষয় কুমার, মিঠুন চক্রবর্তী, নানা পটেকরের মতো জনপ্রিয় সব বলিউড তারকাদের সঙ্গে একের পর এক হিট ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি।
তবে শুধুমাত্র হিন্দি এমনটা নয়। ওড়িয়া, কন্নড়, তেলুগু, বাংলা ভাষাতেও সমানভাবে অভিনয় করেছেন তিনি। দর্শকদের মধ্যে ভীষণ রকম জনপ্রিয় ছিলেন এই অভিনেত্রী। জানা যায় পরবর্তীতে বলিউডের মানুষজনদের কারণেই দীর্ঘদিন অভিনয় থেকে বিরতি নিয়েছিলেন আয়েশা।
অভিনেত্রীর বাবা ভারতীয় বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার পদে কর্মরত ছিলেন। আর বাবার চাকরিতে বদলির কারণে শ্রীনগর থেকে দিল্লি চলে আসে আয়েশার পরিবার। অনেক ছোট বয়স থেকেই মডেলিংয়ের প্রতি ঝোঁক ছিল তাঁর। কিন্তু প্রথম সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর দিল্লি ছেড়ে মুম্বাই চলে যান অভিনেত্রী। সেখানে গিয়েই পুরো দমে মডেলিং শুরু করেন। সেই সঙ্গে শুরু হয় অভিনেত্রী হওয়ার জন্য অডিশন দেওয়া ।
উল্লেখ্য, ১৯৮৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘ক্যায়সে ক্যায়সে লোগ’ ছবিতে প্রথমবারের মতো অভিনয় করেন আয়েশা। এরপর ১৯৯১ সালে ‘মীত মেরে মন কে’ ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। তবে বলা বাহুল্য এই দুই ছবির একটিও সফল হয়নি। এরপর ১৯৯১ সালে ‘কুরবান’ ছবিতে সলমন খানের বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি। এই ছবিতে অভিনেত্রীর অভিনয় দর্শকদের নজর কাড়ে।
‘ওয়াক্ত হমারা হ্যায়’, ‘এক্কা রাজা রানি’, খিলাড়ি’, ‘জো জিতা ওহি সিকন্দর’-এর মতো একাধিক জনপ্রিয় সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। প্রকাশ মেহরার প্রযোজনায় ১৯৯৩ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘দালাল’ ছবিটি। এই ছবিটিতে অভিনেত্রীকে আড়ালে রেখে তার বডি ডাবলকে দিয়ে নগ্ন দৃশ্যে অভিনয় করিয়ে নেন প্রযোজক এবং পরিচালক। এই দৃশ্যটি পর্দা থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করলেও প্রযোজক কর্ণপাত করেননি উল্টে তাঁকে হুমকি দিয়েছিলেন। আর এরপরই নিজেকে বলিউড থেকে গুটিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন অভিনেত্রী।
ব্যক্তিগত জীবনে অক্ষয় কুমার এবং মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন আয়েশা। এমনকি নানা পাটেকরের সঙ্গেও সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন তিনি। কিন্তু বেশি দিন টেকেনি সেই সম্পর্ক। এরপর ২০০৩ সালে ব্যবসায়ী সমীর ভাশীকে বিয়ে করেন তিনি। এরপর বালিপাড়া থেকে দীর্ঘ বিরতি নেন তিনি। ১২ বছরের বিরতি শেষে ২০২২ সালে ‘হাশ হাশ’ ওয়েব সিরিজ়ের মাধ্যমে আবারও পর্দায় ফেরেন তিনি। এরপর হ্যাপি ফ্যামিলি: কনডিশনস অ্যাপ্লাই ওয়েব সিরিজটিতেও দেখা মেলে তাঁর।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য আয়েশা এবং সমীরের নিজস্ব কোন সন্তান নেই। কিন্তু ১৬০ সন্তানের জনক জননী তাঁরা। কীভাবে? নিজেদের সন্তান না হওয়ার কারণে সন্তান দত্তক নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন তাঁরা। আর সেই অনুযায়ী গুজরাটের দুটি গ্রামের ১৬০টি সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেন তাঁরা। তাঁরাই এখন ওই ১৬০ সন্তানের বাবা-মা।