সব সময় হই হই করে বাঁচতে ভালবাসতেন তিনি । তার জন্মদিন গুলোতে তাঁকে ঘিরে মেতে উঠত তার গোটা বাড়ি । তার জন্মদিন উপলক্ষে মা বানাতেন পায়েস এবং ক্ষীর। সেই পায়েস এবং ক্ষীরের বাটি নিয়ে সবাইকে মজা করে বলতে এগুলো শুধু আমার কেউ এর ভাগ পাবে না। এখন আর কেউ ভাগ চান না , পায়েশ এবং ক্ষীরের দুটো বাটি রাখা থাকে তার ছবির সামনে।
তাঁর জন্মদিনে উৎসবের আমেজে ভোরে উঠতো গোটা বাড়ি। নতুন জামা পেলে সেদিনই পড়ে নিতেন। নিজের বাবা-মা এবং স্ত্রীয়েরও বাবা-মাকে করতেন প্রণাম। এই নিয়মের হেরেফের হয়নি কোনদিন। তাঁর জন্মদিনে আজও একটি নিয়ম রয়ে গেছে। আর কন্যা আশাবরী বাবার জন্মদিনে আজকেও নিজের হাতে কার্ড এঁকেছেন বাবার জন্য।
সন্ধ্যে নেমে আসছে সময় হচ্ছে কেক কাটার। এখনই হয়তো নতুন জামা পড়ে মেয়ের সাথে এক কেটে ফেলবেন কালিকাপ্রসাদ। এই ছিল কালিকাপ্রসাদের জন্মদিনে সন্ধ্যেবেলার রুটিন। কিন্তু বিগত কয়েক বছরের মত এবারও আর সেটা হবে না। কালিকাপ্রসাদ যে আর নেই সেটা আজও মেনে নিতে পারেন না তার স্ত্রী ঋতচেতা। তিনি মনে করেন যে কালিকাপ্রসাদ গানের জন্য প্রায়শই থাকতো বাড়ির থেকে অনেক দূরে, তিনি আজও গানের জন্যই বাড়ি থেকে দূরে আছেন।
আজ ১১ই সেপ্টেম্বর। প্রত্যেক বছর এই দিনটি ফিরিয়ে আনে অকালে চলে যাওয়া জনপ্রিয় লোকসংগীত শিল্পী কালিকা প্রসাদের স্মৃতি। সেই ২০১৭ সাল থেকে এই দিনটিতে কিছু না কিছু অনুষ্ঠান কর্মসূচির মাধ্যমে দিনটিকে বিশেষভাবে উদযাপন করে আসছে ‘দোহার’। কখনও তাঁর স্মরণে কখনও ওয়ার্কশপের আয়োজন করে দোহার কখনও বা গানের অনুষ্ঠান। কালিকাপ্রসাদ আজ ইহলোকে না থাকলেও তাকে গানের মাধ্যমে আজও বাঁচিয়ে রেখেছে দোহার।
আরও পড়ুন: ‘জি-এর থেকে শতগুণে ভাল জলসা…,’ কোন প্রসঙ্গ টেনে বাংলার এক নম্বর বিনোদন চ্যানেলকে তুলোধোনা করলেন নেটিজেনরা?
২০১৭ সালে একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রয়াত হন কালিকাপ্রসাদ। মৃত্যুর এত বছর পরেও যেন তিনি দোহারের সাথেই রয়েছেন। এখনও প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানে একটি ডুবকি নিয়ে মঞ্চে উঠতে দেখা যায় দোহারের সদস্যদের। ওই ডুবকি নিয়েই মঞ্চে যেন তাদের সঙ্গে আছেন কালিকাপ্রসাদ। শুধু কালিকাপ্রসাদের জন্মদিন কিংবা মঞ্চের অনুষ্ঠানে নয় নিত্যদিনই কালিকাপ্রসাদকে উদযাপন করে চলেছে দোহার। কালিকা প্রসাদের কলকাতার বাড়ির এক তলাতে হয়েছে একটি স্টুডিও । নাম রাখা হয়েছে ‘প্রসাদ কহে’। সেখানেই গান রেকর্ড করে দোহার।