তিনি বাংলা ও বাঙালির আবেগ। নিজের কন্ঠে জাদুতে তিনি মুগ্ধ করেছেন আপামর ভারতবাসীকে। এমন খুব কম মানুষ আছেন যিনি হয়ত বা তাকে পছন্দ করেন না বা এমন মানুষ নেইই বলা ভালো। তিনি ভারতবর্ষের অন্যতম সুর সম্রাজ্ঞী। তিনি শ্রেয়া ঘোষাল (Shreya Ghoshal)। বলা হয়ে থাকে স্বয়ং মা সরস্বতী বাস মানে তার মধ্যে। এমনই সুরেলা তার কন্ঠ তাঁর।
এমনকি এটাও বলা হয়ে থাকে, তার কন্ঠে আশা, লতা দুজনের ছোঁয়াই নাকি পাওয়া যায়। মানুষ হিসেবেও ততধিক সুন্দর মনের অধিকারী শ্রেয়া ঘোষাল। ভদ্রতা, আভিজাত্য তাঁর রক্তে মিশে। রাজস্থানে বড় হয়ে উঠলেও শ্রেয়ার মন প্রাণ জুড়ে রয়েছে বাংলা। তা সে বাংলা ভাষা হোক বা বাংলা খাবার। আর এবার এক বাঙালি বোনের বিচারের দাবিতে কন্ঠ মেলালেন তিনি।
নিজের শিল্পের মধ্যে দিয়েই প্রতিবাদে শামিল হলেন শ্রেয়া। গত ৮ অগাস্ট কলকাতার সরকারি হাসপাতাল আর জি করে নির্মম, পাশবিক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটে। আজও ধরা পড়েনি অভিযুক্তরা। আজও বিচার চেয়ে পথে সাধারণ মানুষ। এই আবহে গত ১৪ই সেপ্টেম্বর কলকাতায় গায়িকা শ্রেয়া ঘোষালের কনসার্ট করার কথা ছিল। কিন্তু অনুষ্ঠান বাতিল করেন তিনি। সেই সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানান, ‘কলকাতার বুকে যে পাশবিক ঘটনা ঘটেছে তার জন্য আমি ভীষণ ভাবে দুঃখিত। একজন মহিলা হয়ে মেয়েটার সঙ্গে যা ঘটেছে, যে বর্বরতার শিকার সে হয়েছে তা ভাবলেই আমার শিরদাঁড়া দিয়ে হিমস্রোত বয়ে যাচ্ছে। তাই ব্যথিত হৃদয় নিয়ে আমি জানাচ্ছি অল হার্টস ট্যুর ইশক এফএম গ্র্যান্ড কনসার্ট পিছিয়ে দিচ্ছি।’
এরপর গত ১৯ শে অক্টোবর সেই অনুষ্ঠান ফের আয়োজিত হয়। এবং সেই মঞ্চে দাঁড়িয়েও প্রতিবাদী শ্রেয়া। নিজের গান নিজের শিল্প দিয়েই তিলোত্তমার পাশে দাঁড়ালেন তিনি। অনুষ্ঠানের অন্তিম মুহূর্তে শ্রেয়া গেয়ে উঠলেন, “যত ইচ্ছের ভাঙা ডানা, যত গল্প নজরবন্দি / যত সন্ধের যাওয়া মানা, যত রাত্রির অভিসন্ধি / সব মিথ্যের আর ধন্দের, তাই রক্তের সোঁদা গন্ধে!” শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘এর পরের গানে কেউ হাততালি দেবেন না। শ্রেয়ার এই প্রতিবাদে মুগ্ধ শহর কলকাতা। এই ঘটনার ভিডিও এখন ভাইরাল সোশ্যাল মাধ্যমে।