সম্প্রতি বাংলাদেশের ঢাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (বুয়েট) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে ভারতের জাতীয় পতাকা বিছিয়ে ছাত্রদের তার ওপর দিয়ে হেঁটে প্রবেশ করার একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। একইসঙ্গে আরও একটি শিশুদের স্কুলের ছবি প্রকাশ্যে এসেছে, যেখানে একই রকম দৃশ্য দেখা গেছে। যদিও ছবিগুলোর সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা, তবে বিষয়টি নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন মহল থেকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে কবি শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায় (Srijato Bandyopadhyay) তাঁর প্রতিবাদ জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন।
শ্রীজাতর কবিতায় প্রতিবাদী সুর!
শ্রীজাত তাঁর অনন্য লেখনীর মাধ্যমে বারবার বিভিন্ন ইস্যুতে মুখ খুলেছেন এবং কটাক্ষের শিকার হয়েছেন। তবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কখনোই চুপ থাকেননি তিনি। এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না। ভাইরাল ছবিগুলোর প্রসঙ্গে শ্রীজাত কবিতার মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন বাংলাদেশের বর্তমান মানসিকতা ও ঐতিহাসিক সম্পর্কের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে। তিনি স্পষ্টভাবে লেখেন, “শুশ্রূষা ও জল নিয়ে কী সহজে ভুলে গেলে ঋণ!” কবিতায় মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসা এবং জাতীয় পতাকার প্রতি শ্রদ্ধার কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, ‘ভাষার চেয়েও প্রিয় জন্মভূমি।’
কবিতায় শ্রীজাত আরও লেখেন, “তোমাকে ‘বাঙালি’ থেকে ‘ভারতীয়’ করে তুললে তুমি। … যে-পতাকা পিষে যাচ্ছ, তারই অংশ ছিলে একদিন।” তাঁর এই লেখায় ওপার বাংলার মানুষদের ঋণ ভুলে যাওয়া এবং জাতীয় পতাকার প্রতি অপমানজনক আচরণের তীব্র সমালোচনা উঠে এসেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বাধীনতার পেছনে ভারতের অবদানের কথাও তিনি স্পষ্ট ভাষায় তুলে ধরেছেন। তাঁর এই প্রতিবাদ মূলত দুই দেশের মধ্যে ঘৃণা ও হিংসার রাজনীতি বন্ধ করার বার্তা বহন করছে।
শ্রীজাতর এই কবিতা সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে। তাঁর পোস্টে বহু মানুষ নিজেদের মতামত জানিয়েছেন। এক পাঠক মন্তব্য করেন, “শ্রীজাতদা, এরা শামসুর রহমান, হেলাল হাফিজদের জাতি! ভাবতেই অবাক লাগছে।” আরেকজন লেখেন, “আপনার কবিতা যেন আমাদের জ্বালা কিছুটা হলেও কমালো। এই কারণেই আপনার প্রতি শ্রদ্ধা।” তৃতীয় ব্যক্তি মন্তব্য করেন, “চোখের সামনে পালটে গেল একটা গোটা দেশ, শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষদের অস্তিত্ব বিপন্ন।”
আরও পড়ুন: অ’সন্তোষের পারদ চড়ছে! টলিউডের সঙ্গে দূ’রত্ব বাড়ছে মমতার! ‘ব’য়কট’ কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব
ঘটনাটি নিয়ে বিতর্ক তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। শ্রীজাতর প্রতিবাদ যেমন প্রশংসিত হচ্ছে, তেমনই তাঁর সাহসিকতাও নজর কাড়ছে। দুই বাংলার মধ্যে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে, তা মেটাতে দুই দেশের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন নাগরিকদের এগিয়ে আসার প্রয়োজন রয়েছে বলে অনেকে মত প্রকাশ করছেন।