অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় (Swastika Mukherjee) সর্বদা তার ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে খোলামেলা কথা বলে এসেছেন। সম্প্রতি, তিনি তার প্রাক্তন সঙ্গী (Ex lover) , অভিনেতা জিৎ (Jeet) -এর সঙ্গে সম্পর্ক এবং তার মেয়ে অন্বেষার প্রতিক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। মাত্র ১৮ বছর বয়সেই গায়ক প্রমিত সেনের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে (Marriage) আবদ্ধ হয়েছিলেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। তবে সেই দাম্পত্য দীর্ঘস্থায়ী হয়নি— মাত্র দু’বছরের মধ্যেই ভেঙে যায় সংসার। তখন তাঁর বয়স মাত্র ২০, আর তখনই কন্যাসন্তান অন্বেষার (Anwesha) জন্ম।
মেয়েকে নিয়েই নতুন করে জীবন শুরু করেন স্বস্তিকা, আলাদা হয়ে যান স্বামীর কাছ থেকে। এরপর ধীরে ধীরে গড়ে তোলেন নিজের কেরিয়ার, পা রাখেন টলিউডে। অভিনেত্রী হিসেবে কাজ শুরু করার পর, রবি কিনাগির পরিচালনায় ‘মস্তান’ ছবিতে অভিনয়ের সময় সহ-অভিনেতা জিৎ-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে তাঁর। একসময় তাঁদের সম্পর্ক টলিউডের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে। একসঙ্গে দেখা যেত পার্টি, সিনেমার প্রিমিয়ারসহ নানা অনুষ্ঠানে।
তবে হঠাৎ করেই ভেঙে যায় সেই সম্পর্ক। কেন জিৎ ও স্বস্তিকার বিচ্ছেদ হয়েছিল, তা নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যায়। কারও মতে, স্বস্তিকার বিবাহিত পরিচয় এবং সন্তানের মা হওয়া তাঁদের সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আবার কেউ বলেন, এই সম্পর্কে তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে প্রবেশ করেছিলেন কোয়েল মল্লিক। আবার অনেকে মনে করেন, স্বস্তিকা শুধুমাত্র গৃহবধূ হয়ে থাকতে চাননি, কেরিয়ার ছাড়ার পক্ষেও ছিলেন না, যা সম্পর্কের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি করেছিল।
স্বস্তিকার সঙ্গে বিচ্ছেদের কিছুদিন পরই নতুন সম্পর্ক গড়ে ওঠে জিতের। এরপর ২০১১ সালে তিনি বিয়ে করেন স্কুল শিক্ষিকা মোহনা রতলানিকে। স্বস্তিকা জানান যে তার মেয়ে এখনও মনে করে তাদের সম্পর্কের বিচ্ছেদের জন্য মূলত তিনি দায়ী। তিনি বলেন, “আমার মেয়ে এখনও মনে করে আমার এবং জিতের সম্পর্ক থাকা উচিত ছিল। আমরা ছয় বছর একসঙ্গে কাটিয়েছি। সে এখনও আমার উপর রাগ করে এবং বলে, ‘তোমার দোষ ছিল। যা-ই হোক না কেন, আমি তোমাকে কখনও ক্ষমা করব না।'”
স্বস্তিকা আরও বলেন যে অন্বেষা এবং জিতের মধ্যে গভীর সখ্যতা ছিল। তিনি উল্লেখ করেন, “আমরা ছয় বছর একসঙ্গে ছিলাম। বড় হওয়ার পর সে বলে, ‘এত সুন্দর একজন মানুষ, তুমি কী করলে মা!'” স্বস্তিকা বলেন যে মেয়ে অন্বেষা জিতের সঙ্গে তার মায়ের সম্পর্ককে অখনো সমর্থন করে এবং বিচ্ছেদের কষ্টও পায়। স্বস্তিকার মতে তাঁর অবশ্য কোনো আফসোস নেই এই সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ায়। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের প্রতিক্রিয়াও স্বস্তিকা তুলে ধরেন।
আরও পড়ুনঃ “যে চরিত্র মনে ধরেনি, তা ছাড়তে দ্বিধা নেই, চরিত্রের জন্য আত্মসম্মানের সঙ্গে আপোস করব না!” স্পষ্ট কথা মিমির!
তিনি জানান যে তার মা এবং বোন সবসময় জিতের পক্ষ নিতেন। বোন অজপা জিতের বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন এবং সেসময় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন। স্বস্তিকা বলেন, “আমার বোন তো ওর বিয়েতেও গিয়েছিল। বোনের কান্না দেখে আমি বলেছিলাম, ‘এসব কী নাটক হচ্ছে!'” এ থেকে বোঝা যায় যে জিতের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবসান কেবল তাকে নয়, তার পরিবারকেও প্রভাবিত করেছিল।নিজের প্রেমজীবন সম্পর্কে স্বস্তিকা অকপটে বলেন যে তার ছয়টি গম্ভীর সম্পর্ক ছিল এবং তিনি কখনও সেগুলো লুকানোর চেষ্টা করেননি।
তিনি বলেন, “আমার ছয়টি সিরিয়াস সম্পর্ক ছিল। কোনো হ্যাঙ্কিপ্যাঙ্কি ছিল না কোনোদিনই। মিডিয়া তো কারও সঙ্গে কফি খেতে গেলেও আমার নাম জুড়ে দিয়েছে।” এখানে তিনি ইঙ্গিত দেন যে মিডিয়া প্রায়শই তার সম্পর্ক নিয়ে অতিরঞ্জিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে মজার ছলে স্বস্তিকা বলেন, “পঞ্চাশ হওয়ার আগে জলদি জলদি করে আরও কয়েকটা প্রেম করে নিতে চাই…” এভাবেই তার জীবনে নতুন সম্পর্কের সম্ভাবনাকে হাস্যরসের সঙ্গে তুলে ধরেন।