চারিদিকে যখন একের পর এক দূ’র্ঘট’না, হাজারো মানুষের চোখের জল, কিন্তু কিছু মানুষ তার মধ্যেও থাকেন যারা নিজেদের নিয়ে এতোটাই ব্যস্ত যে সমাজে ঘটে যাওয়া কোন কিছুই তাদের চোখে পড়েনা। কথা হচ্ছে ‘অনন্যা গুহ’ (Ananya Guha) আর ‘সুকান্ত কুন্ডু’ (Sukanta Kundu) কে নিয়ে। যাদের প্রেম, বাগদান, থেকে গাড়ি বিক্রি সবকিছু নিয়েই নিত্যদিন শোরগোল সমাজ মাধ্যমে। কখনও প্রকাশ্যে লিপলক, কখনও গাড়ি হারানোর কান্না — এই দুজনের জীবন যেন উন্মুক্ত নাট্যমঞ্চ।
অথচ ২২ এপ্রিল কাশ্মীরে (Kashmir Pahalgam Bloodshed) হিন্দু পর্যটকদের উপর হওয়া ভয়াবহ হা,মলা’য় এই ‘ইনফ্লুয়েন্সার’ দম্পতি চুপ! কেউ কেউ বলছেন— “শুধু ক্যামেরার সামনে কাঁদলেই ইনফ্লুয়েন্সার হওয়া যায় না, তার জন্যে মিনিমাম বিবেকরও দরকার হয়।” যেখানে একের পর এক নামী অভিনেতা থেকে শুরু করে ইনফ্লুয়েন্সাররা কাশ্মীর দুর্ঘ’টনা জন্য নিজেদের সমাজ মাধ্যমের পাতায় অন্তত একটা শব্দ বলছেন, সেখানে অনন্যা-সুকান্ত একেবারেই চুপচাপ। না কোনো স্টোরি, না কোনো পোস্ট— যেন এদের নিজেদের ছাড়া বাইরের পৃথিবী নিয়ে কিছুই এসে যায় না।
অথচ যে গাড়ি বিক্রি করে টাকা পেয়েছে, তার পরেও এমন অভিনয় দেখিয়েছিল যে দেখে কিছু দর্শকের চোখে জল এসে গিয়েছিল। এখন প্রশ্ন উঠেছে সেই চোখের জল কি শুধুই গাড়ির জন্যই ছিল? দেশবাসীর জন্য কি শুধুই অবহেলা? নেটিজেনরা বলছেন, “যেখানে ২৬ জন নিরীহ মানুষকে হিন্দু হওয়ায় অপরাধে মারা হলো, তাদের নিয়ে একটাও শব্দ নেই ওদের মুখে? কিসের ইনফ্লুয়েন্সার?” কেউ লিখেছেন, “দেশে দুঃখ এলে ওরা বোধহয় চুপ থাকাই শ্রেষ্ঠ সিদ্ধান্ত মনে করে, কারণ সেখানে তো স্পটলাইট নেই।”
আবার অনেকে খোলাখুলি বলছেন, “যে দম্পতি গাড়ি বিক্রি করে নাটক করতে পারে, তারা কাশ্মীর হামলার মতো বাস্তব ঘটনার জন্য মুখ খুলবে না— সেটাই তো স্বাভাবিক।” এই নিয়ে অনুরাগী থেকে শুরু করে সমাজ মাধ্যমের ফলোয়াররাও হতাশ, কারণ তারা মনে করেছিল অনন্যা ও সুকান্ত শুধু বিনোদন নয়, সমাজ সচেতনতার দিকে যথেষ্টই মানবিক। কিন্তু এবার সবাইকে ভুল প্রমাণ করে তারা দেখলেন, যে দম্পতি আবেগ বিক্রি করে ইনফ্লুয়েন্সিং করেন, তারা দেশের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার যোগ্যতাও হারিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ কৌশানীর সাফল্যে হিংসায় জ্বলছেন অভিনেতা, বলছে ইন্ডাস্ট্রি! রেগে কাঁই নায়ক
অভিনয় যেটুকু জানা আছে, তা দিয়ে শুধু রিল বানানো যায়, দায়িত্ব নেওয়া যায় না। তাই সবার মনেই প্রশ্নটা উঠছে— শুধু ব্র্যান্ড কোলাব, রিলস আর নাটুকে পোস্ট করলেই কি একজন ইনফ্লুয়েন্সার হওয়া যায়? অনন্যা-সুকান্ত কি আসলেই সমাজকে কোনো বার্তা দেন? কাশ্মীরের মাটি থেকে শুরু করে মুর্শিদাবাদে দেশবাসীর, নিজধর্মের মানুষের রক্ত ঝরলেও যদি মুখে বুলি না ফোটে, তাহলে প্রশ্ন তোলা তো বাঞ্ছনীয়— “তবে কবে বিক্রি করলেন বিবেক?”