নতুন কাজের খোঁজে আজ অনেক বর্ষীয়ান বাঙালি অভিনেতা-অভিনেত্রী পাড়ি দিচ্ছেন মুম্বইয়ে। স্ট্রাগল শব্দটা আবার ফিরে এসেছে তাঁদের ডায়েরির পাতায়। বাংলা টেলিভিশন এবং সিনেমায় দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করেও আজ তাঁরা উপেক্ষিত, সেভাবে সুযোগ পাচ্ছেন না। সেই তালিকায় উঠে এসেছে অভিনেত্রী ‘পল্লবী চট্টোপাধ্যায়’ (Pallavi Chatterjee) -এর নামও। নামী অভিনেতা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের কন্যা, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বোন হয়েও টলিউডের কাজ থেকে দূরে চলে গিয়েছেন তিনি।
দীর্ঘ দেড় বছর ধরে বাংলার ইন্ডাস্ট্রি যেন মুখ ফিরিয়ে রেখেছে তাঁর দিক থেকে। সেই কারণেই আজ বলিউডে নিজের মতো নতুন করে লড়াই করছেন পল্লবী। পল্লবীর বক্তব্য স্পষ্ট, ‘নায়িকা’ হবার আকাঙ্ক্ষা কোনও দিনই ছিল না। ভাল চরিত্র পেলেই তাতে প্রাণ ঢেলে দিতে প্রস্তুত তিনি। এমনকি, পর্দায় মা-র ভূমিকাতেও অভিনয় করতে কোনও আপত্তি নেই তাঁর। কিন্তু তাও বাংলার প্রযোজক-পরিচালকদের তরফ থেকে তাঁর ফোনটা বেজে ওঠেনি গত এক বছরেও।
উপার্জনের জন্য আজ তিনি বাধ্য হয়ে অন্য রাজ্যে কাজ খুঁজছেন। সম্প্রতি নীরজ পাণ্ডের ‘খাকি: দ্য বেঙ্গল চ্যাপ্টার’ ওয়েব সিরিজে কাজ করেছেন। পাশাপাশি নিজের হাতে গল্পও লিখছেন, যেগুলি ইতিমধ্যে বলিউড এবং টলিউডের অনেক নির্মাতার কাছে পৌঁছে গিয়েছে। এই দীর্ঘ খরা পেরিয়ে কিছুটা আশার আলো দেখছেন পরিচালক সৌম্যজিৎ আদকের পরবর্তী ছবি ‘টেক কেয়ার ভালবাসা’-য় অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে। সেখানে তিনি এক কলেজের অধ্যাপিকার চরিত্রে অভিনয় করবেন।
চরিত্রটি প্রেম এবং সম্পর্কের নানা বাঁককে প্রভাবিত করবে বলে জানিয়েছেন অভিনেত্রী। সিনেমায় তাঁর বয়সের দুইটি ধাপ তুলে ধরা হবে। কলকাতা, চন্দননগর এবং বিদেশে হবে এই ছবির শুটিং। সহ-অভিনেতা হিসেবে থাকছেন শোলাঙ্কি রায়, সৌম্য মুখোপাধ্যায়, শ্রীমা ভট্টাচার্য এবং রাহুল মজুমদার। গান তৈরি করছেন নীলায়ন চট্টোপাধ্যায় এবং ঈশান মিত্র। তবে এই সুযোগ এলেও পল্লবী জানাচ্ছেন, নিজের পথটা তাঁকে একাই গড়ে নিতে হচ্ছে। কোনও ‘গডফাদার’ তাঁর পাশে নেই। ‘প্রসেনজিতের বোন’ হিসেবে কোনও বাড়তি সুবিধা পাননি বলেই সাফ জানালেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ ‘তোমার মেয়েকে কেউ কোনোদিন কোনো ছবিতে নেবে না!’ চুমকি চৌধুরীর অভিনয় জীবন নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন অঞ্জনপত্নী! কেন বাবার ছবি ছাড়া অন্য কোথাও কাজ করতে পারতেন না চুমকি?
‘খাকি ২’-এ প্রসেনজিৎ অভিনয় করলেও, পল্লবীর দৃশ্য ছিল একেবারে ভিন্ন অংশে, অভিনেত্রী চিত্রাঙ্গদা সিংহের সঙ্গে। সেই সুযোগও তিনি পেয়েছেন অডিশনের মাধ্যমে, কারও সুপারিশে নয়। নিজের ঢাক নিজে পেটাতে পারেন না বলেই হয়তো তাঁর লড়াইটা আরও কঠিন, এমনটাই মনে করেন অভিনেত্রী। শুধু পল্লবী নয়, এই তালিকায় রয়েছেন আরও অনেকে। নন্দিনী চট্টোপাধ্যায়ও তাঁদের মধ্যে একজন। দীর্ঘদিন বাংলা সিরিয়ালে কাজ করেও আজ হিন্দি ধারাবাহিকে চলে গিয়েছেন। আর এই পরিস্থিতিই আজ বাংলা বিনোদন জগতের বড় এক প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে—বর্ষীয়ান শিল্পীরা কি সত্যিই আর গুরুত্ব পাচ্ছেন না এই ইন্ডাস্ট্রিতে?
Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।
