‘মহানায়ক’ শব্দটাই যেন আজ অপ্রাসঙ্গিক! মহানায়ক সম্মান পেয়ে হাসির পাত্র ইমন ও রূপঙ্কর! উত্তম কুমারের নামে প্রহসন! গায়ক-গায়িকাদের হাতে ‘মহানায়ক’ সম্মান নিয়ে বাঙালির ধিক্কার সমাজ মাধ্যমে! ভোটের টিকিটও মিলবে নাকি এবার? কটাক্ষ নেটিজেনদের!

বাঙালির ‘উত্তম কুমার’ (Uttam Kumar) যার নাম শুনলেই আজও বাঙালির মনে ঢেউ তোলে শ্রদ্ধা, আবেগ আর গর্ব। তিনিই ‘মহানায়ক’ (Mahanayak) —এই বিশেষণ একা ও একমাত্র তাঁর জন্যই যেন সৃষ্টি। তাই যখন তাঁর নামে তৈরি ‘মহানায়ক সম্মান’ কারও হাতে তুলে দেওয়া হয়, তখন সেটি শুধু পুরস্কার নয়, একটা ঐতিহ্য বহনের ভার। আর সেখানেই এবার যেন খেই হারিয়েছে রাজ্যের সংস্কৃতি দফতর! কারা পেলেই এবার সেই সন্মান?

‘ইমন চক্রবর্তী’ (Iman chakroborty) আর ‘রূপঙ্কর বাগচি’র (Rupankar Bagchi) হাতে ‘মহানায়ক’ সম্মান তুলে দিতেই তোলপাড় নেটদুনিয়া! হ্যাঁ, ইমন চক্রবর্তী ‘তুমি যাকে ভালোবাসো’ গানের জন্য জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন ঠিকই। তারপর কিছু সলো, কিছু রবীন্দ্রসঙ্গীত, কিছু ফিউশন—তাও সীমিত পরিসরে। এখন প্রশ্ন হলো, তিনি কি সত্যিই ‘মহানায়ক’ শব্দের উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব করেন? নাকি পুরস্কারের থালা ভরতে গিয়ে মহানায়ক শব্দটাকেই জলজ্যান্ত ঠাট্টায় পরিণত করা হলো?

সমাজ মাধ্যমে কেউ লিখেছেন, “ইমন বলিউডে চান্স পায়নি, রানু মণ্ডল পেয়েছে। তাহলে পুরস্কার তো ওনার পাওনা ছিল!” এমনতর তুলনা পড়ে মানুষ হাসবে না কাঁদবে, বুঝে ওঠা দায়! আর রূপঙ্কর বাগচি? ‘এ তুমি কেমন তুমি’ হিট গান, জাতীয় পুরস্কার—সব ঠিক আছে। কিন্তু তারপর? নেটিজেনদের কথায়, “একটা সময় তো নিজেই বলেছিল ‘কোন গায়ক মারা গেলে এত হাইপ হবে?’ সেই মানুষ আজ মহানায়ক সম্মানে সম্মানিত? লজ্জা নেই না?”

কেউ কেউ বলেছেন, “যে শিল্পী অন্য শিল্পীকে অপমান করতে ফেসবুকে ভিডিও করে, তার হাতে এই পুরস্কার মানে মহানায়ক শব্দটারই অপমান।” বিতর্ক অবশ্য এখানেই থেমে থাকেনি। অনেকেই বলছেন—উত্তম কুমার ছিলেন ‘নায়ক’, তাঁর পরিচয় ছিল অভিনেতা হিসেবে। তাই সেই সম্মান যাঁদের দেওয়া হবে, তাঁদের অন্তত অভিনয় জগতের সঙ্গে যুক্ত হওয়া উচিত। “গায়ক হয়ে মহানায়ক! তাহলে লেখক হলে কি ‘মহালেখক’?

আরও পড়ুনঃ “সব দোষ ছেলেদের ঘাড়ে চাপানোটা এখন ট্রেন্ড!” “ছেলেরাও গার্হস্থ্য হিংসার শিকার, মুখ খুললেই টক্সিক তকমা জোটে!”— সুস্মিতার অভিযোগের জবাবে সমাজে পুরুষদের অবস্থান নিয়ে মুখ খুললেন সব্যসাচী! বিচ্ছেদের কারণ নিয়ে সুস্মিতার ইঙ্গিতের জবাবে স্পষ্ট বার্তা তাঁর!

গান গাওয়া আর অভিনয় এক হলো?”—এই ধরনের তীব্র ট্রোল ঘুরে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে। সব মিলিয়ে, এবারের ‘মহানায়ক সম্মান’ যেন হয়ে উঠেছে বিতর্কের আরেক নাম। উত্তম কুমারের নাম, সম্মান, মর্যাদা—সবকিছু মিশে যাচ্ছে এক রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক ছাঁচে, যেখানে যোগ্যতা নয়, জোগাড়ই শেষ কথা। আর দর্শক? তারা শুধুই দেখছে—যার নামে বাংলা সিনেমা গর্ব করে, তার নাম আজ প্রহসনের কেন্দ্রবিন্দু।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।