“সব দোষ ছেলেদের ঘাড়ে চাপানোটা এখন ট্রেন্ড!” “ছেলেরাও গার্হস্থ্য হিংসার শিকার, মুখ খুললেই টক্সিক তকমা জোটে!”— সুস্মিতার অভিযোগের জবাবে সমাজে পুরুষদের অবস্থান নিয়ে মুখ খুললেন সব্যসাচী! বিচ্ছেদের কারণ নিয়ে সুস্মিতার ইঙ্গিতের জবাবে স্পষ্ট বার্তা তাঁর!

সম্পর্কের ভাঙন কেবল দু’জনের মধ্যকার সমস্যা নয়, সেটা এক একটি সময়ে সমাজের প্রতিচ্ছবিও হয়ে ওঠে। ঠিক তেমনটাই হলো ‘সুস্মিতা রায়’ (Susmita Roy) ও ‘সব্যসাচী চক্রবর্তী’র (Sabyasachi Chakraborty) বিচ্ছেদের (Divorce) ক্ষেত্রেও। যখন থেকে তাঁদের আলাদা হওয়ার খবর সামনে এসেছে, তখন থেকেই নেটমাধ্যমে নানা প্রশ্ন ঘুরছে— কে দায়ী? কেন এই সিদ্ধান্ত? তাঁরা দু’জনেই জানিয়েছিলেন, পারস্পরিক সম্মতিতেই এই বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত। কিন্তু সত্যিই কি সেখানে কোনও নতুন শুরু সম্ভব? এই নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে, বিশেষ করে সুস্মিতার সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে কিছু কথা নিয়ে।

বিচ্ছেদ ঘোষণার প্রায় একমাস পর প্রথমবার সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন সুস্মিতা। যদিও তিনি বিচ্ছেদের আসল কারণ নিয়ে খুব একটা খোলাখুলি কিছু বলেননি, তবে তাঁর কথায় ইঙ্গিত ছিল অনেক কিছুই। নিজের বক্তব্যে কারও নাম নেননি ঠিকই, কিন্তু প্রাক্তন স্বামীর দিকে দায় চাপানো হয়েছে বলেই মনে করছেন নেটিজেনদের একাংশ। তবে সম্পর্ক ভাঙার পেছনে সব্যসাচীর দিক থেকেই উদাসীনতা এসেছিল? এই প্রশ্নই এখন আলোচনার কেন্দ্রে। অবশেষে সামনে আসলেন সব্যসাচী চক্রবর্তী।

পরিচিত সাংবাদিক হিসেবে সংবাদমাধ্যমে কথা বলার অভ্যেস থাকলেও নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে এভাবে প্রকাশ্যে আসাটা তাঁর স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয় নয়। তাই তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, “আমি হেডলাইন লিখি, হেডলাইনে থাকতে চাই না।” বিচ্ছেদের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য, “বিচ্ছেদ খুব ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, এর সব খুঁটিনাটি সবার জানার দরকার নেই। জন্মদিনেই খবরটা জানানো নিয়ে অনেক প্রশ্ন এসেছে, কিন্তু আমরা যদি জন্মদিন উদযাপন না করতাম, তাহলে ঘটনাটা অন্যভাবে ব্যাখ্যা হতো। এছাড়াও আমাদের ব্যক্তিগত কারণ ছিল জন্মদিন ঘিরে।”

অনেকে অভিযোগ করেছেন, সব্যসাচীর মা নাকি সুস্মিতার সঙ্গে দূরত্ব তৈরির জন্য দায়ী। এই নিয়ে তাঁর জবাব, “আমি কাউকেই ছোট করতে চাই না। না সুস্মিতাকে, না আমার মাকে। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “আজকাল সম্পর্ক খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছে। পুরুষদের উদাসীনতা যেমন দায়ী, তেমনি নারীরাও সব কিছু মেনে নেওয়ার যুগে নেই। বর্তমান সময়ে ছেলেদের প্রতি সমাজের যে ধারণা তৈরি হয়েছে, সেটি একপেশে, এবং অনেকটা অভিযোগের দায় চাপানোর মতো। তাঁর ভাষায়, “সব দোষ ছেলেদের ঘাড়ে চাপানোটা খুব সহজ হয়ে গেছে।

আজকাল মেয়েরা অনেক সাহসী, সচেতন— সেটাই উচিত। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, ছেলেরা সবসময়ই ভুল। ছেলেরাও আজ অনেক জায়গায় অসহায়তার মুখোমুখি হচ্ছে, সেটা কেউ দেখে না।” তিনি আরও বলেন, “একদিকে ছেলে তার মায়ের মতো বউ চায় না, যে ত্যাগ করে সংসার সামলাবে। আবার চায়, সেই বউ যেন সবার সঙ্গে মিশে থাকতে পারে। এই দুই বিপরীত চাওয়ার মধ্যে পড়েই ছেলেরা অনেক সময় সমস্যায় পড়ে।” তাঁর মতে, ছেলেরা অনেক সময় চুপ থেকে যায়, সমাজের চোখে তাদের কষ্ট গুরুত্ব পায় না।

তিনি বলেন, “আজকাল ছেলেরা যদি কিছু বলে, তখন সেটা ‘টক্সিক ম্যান’ হয়ে যায়। কিন্তু ছেলেদেরও তো অনুভূতি আছে, তাদের কষ্টও সত্যি। একটা সম্পর্কের ভাঙনের পর যদি মেয়েদের কান্না বা মনভাঙা নিয়ে আলোচনা হয়, তবে ছেলেদের মানসিক চাপ বা একাকীত্ব কেন আলোচিত হয় না? আজকাল একটা বিশেষ শ্রেণির মেয়েদের আচরণেই ছেলেরাও অনেক সময় গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হচ্ছে। কথা বললেই বলা হচ্ছে — ওর সমস্যা আছে, ও ভয়ানক রাগী, ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।

আরও পড়ুনঃ “ছবিটার পারিশ্রমিক মুখে আনা যায় না, অর্থের চেয়ে বড় ছিল এই চরিত্রটা!”— টাকার জন্য নয়, চরিত্রকে ভালোবেসেই বিরাট ত্যাগ করেছিলেন শাশ্বত! ‘নীলকণ্ঠ’ হয়ে উঠল তাঁর জীবনের সেরা অধ্যায়!

কিন্তু সত্যিই যদি কারও মন ভাঙে, সেটা তো কেবল মেয়েদেরই নয়!” তিনি স্পষ্ট বলেন, “সব মেয়েই যেমন ভুল নয়, তেমনি সব ছেলেও খারাপ নয়। সম্পর্ক মানেই দুটি মানুষের সমান দায়িত্ব। তাই বিচ্ছেদের জন্য যদি দু’জনের মধ্যে মানসিক দূরত্ব সৃষ্টি হয়, তাহলে তার দায় একজনের ওপরে চাপানো উচিত নয়।” শেষে, যাঁরা তাঁদের সম্পর্ককে ‘আদর্শ’ মনে করতেন এবং এই বিচ্ছেদে ভেঙে পড়েছেন, তাঁদের উদ্দেশ্যে সব্যসাচী জানান, “আমি দুঃখিত। আপাতত আমাদের সিদ্ধান্ত বদলানোর কোনও পরিকল্পনা নেই। আমরা দু’জনেই চাই একটা শান্তিপূর্ণ জীবন যাপন করতে।”

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।