‘এ. এস.আর’ হিসেবে ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’-এর আর্য সিংহ রায়কে মানতে নারাজ দর্শকরা! ‘এ. এস. আর’ একজন‌ই ‘বোঝেনা সে বোঝেনা’র অরণ্য সিংহ রায়! ‘এ. এস. আর’ চরিত্রে জীতু নাকি যশ কে বেশি পছন্দের আপনাদের?

সালটা ২০১৩, নভেম্বর মাসে স্টার জলসায় শুরু হয়ে একটি স্মরণীয় ধারাবাহিক। ২০১৬ সালের জুনে ধারাবাহিকটি শেষ হয়ে গেলেও, আজও কেউ ভুলতে পারে না ‘বোঝেনা সে বোঝেনা’কে (Bojhena Se Bojhena) ! বাংলা টেলিজগতে বেশ সাড়া ফেলে শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস প্রযোজিত এই ধারাবাহিকটি, হিন্দি সিরিয়াল ‘ইস পেয়াক কো কেয়া নাম দু’-এর কাহিনীকে অনুকরণ করে নির্মিত হয়েছিল। ‘যশ দাশগুপ্ত’ (Yash Dasgupta) ও ‘মধুমিতা সরকার’ (Madhumita Sarcar) এর জুটিকে কেন্দ্র করে গল্প এগোয়। অরণ্য সিংহ রায় ও পাখি ঘোষ দস্তিদারের রোমান্স দর্শকদের মন জয় করে ফেলে শুরুর দিন থেকেই।

টিভি দর্শকদের মধ্যে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। গল্পে অরণ্যকে দেখানো হয়েছে একজন প্রতিষ্ঠিত কলকাতার ব্যবসায়ী হিসেবে, যার ভালোবাসা নিয়ে প্রচলিত ধারার সঙ্গে বেশ জটিল সম্পর্ক। একদিকে তাঁর নিজের শক্ত মানসিকতা, অন্যদিকে পাখির সরল বিশ্বাস ও পারিবারিক মূল্যবোধ—এই দ্বৈততার মধ্যেই ধারাবাহিকের প্রধান আকর্ষণ লুকিয়ে ছিল। পাখি মফস্বল থেকে উঠে আসা সহজ-সরল, পারিবারিক, ভালোবাসার শক্তিতে বিশ্বাসী চরিত্র যে মনে করে ভালোবাসাই বহু সমস্যার মুল সমাধান।

অন্যদিকে ভালোবাসা বিরোধী অরণ্য, এই দুই চরিত্রের কাছাকাছি আশা সেই সময় ঝড় তুলেছিল টিআরপি তালিকাতেও। এত বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল এই জুটি যে বাজারে ‘অরণ্য ও পাখি–ফ্যাশন’ নামে পোশাকও বিক্রি হতে থাকে, যা ধারাবাহিকের জনপ্রিয়তাকে আরও ঊর্ধ্বমুখী করেছিল। অরণ্য চরিত্রটিকে রূপদানকারী অভিনেতা যশ দাশগুপ্ত এক ঝটকায় সেনসেশনে পরিণত হয়েছিল। মেয়েদের মুখে তখন শুধু একটাই নাম ‘এ.এস.আর’ অর্থাৎ অরণ্য সিংহ রায়। যশের হাঁটাচলা করার ধরন এবং চেহারা তখন টিভির দর্শকদের মধ্যে,

বিশেষ করে তরুণী থেকে শুরু করে মধ্য বয়স্ক মহিলাদের মনে ঝড় তুলেছিল। এখনও পাখি-অরণ্যর রসায়ন নিয়ে সমাজ মাধ্যমে আলোচনা হয়। ধারাবাহিকটি শেষ হয়ে যাওয়ার পরে আজও সমান ভাবে দর্শকদের কাছে জনপ্রিয়। উল্লেখ্য, সম্প্রতি জি বাংলায় শুরু হয়েছে ধারাবাহিক ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’, যেখানে মুখ্য ভূমিকায় রয়েছে জীতু কামাল এবং দিতিপ্রিয়া রায়। জীতু অভিনয় করছেন ‘আর্য সিংহ রায়’ -এর চরিত্রে, সেই চরিত্র পেশায় একজন বিখ্যাত ব্যবসায়ী। তার অতীত যথেষ্ট রহস্যময়।

এদিকে প্রাণোচ্ছল ও কাজের প্রতি নিষ্ঠাবান মেয়ে অপর্ণা, যার চরিত্রে অভিনয় করছেন দিতিপ্রিয়া। দেখানো হচ্ছে অপর্ণার বয়স বছর ২২ এর কাছাকাছি এবং আর্য বয়সে তার দ্বিগুণ। কিন্তু এখানেই আসল মজা! অসমবয়সী দুজন মানুষের প্রেম দেখানো হচ্ছে, সেটায় দর্শক যথেষ্ট ভালোবাসা দিচ্ছে। এমনকি কেউ কেউ তাদের সেরা জুটির তকমা পর্যন্ত দিচ্ছেন। মহিলা দর্শকেরা আর্য সিংহ রায় বলতে পাগল এখন। ধারাবাহিক আর্যকে সবাই ‘এ.এস.আর’ বলে ডাকে। কিছু মনে পড়ছে? হ্যাঁ, ওই একটা নামেই যেন কেল্লাফতে! কিছু দর্শক যদিও এখন মেতে নতুন ‘এ.এস.আর’ নিয়ে।

আরও পড়ুনঃ ‘বুড়ো লোকটা আবার কচি মেয়ে পটিয়েছে’, ‘মিথিলাকে ছেঁটে ফেলেছেন?’ পুরী থেকে কনসার্ট সব জায়গায় সুস্মিতাময় সৃজিত! তীব্র কটাক্ষ নেটিজেনদের

কিন্তু এক দলের মনে এখনও রাজ করছে পুরোনো ‘এ.এস.আর’। ভক্তদের মধ্যে হঠাৎ দুজনকে নিয়ে তুলনা উঠতেই কেউ কেউ বলছেন, “আমরা ‘এ.এস.আর’ মনে শুধু অরণ্য সিংহ রায়কে চিনি, ওনার জায়গা কেউ নিতে পারবে না!” আবার কারোর মতে, “২৬ বছরের এংরি ইয়াংম্যানের জায়গা নিতে চলে এসেছে ৫০ বছরের কাকু!” অধিকাংশই একই কথা বলছেন, “চাইলেই কেউ ‘এ.এস.আর’ হতে পারে না! আমাদের গোটা একটা জেনারেশনের আবেগ অরণ্য সিংহ রায়, অরিজিনাল আসলে অরিজিনালি হয়। সে যতই কপি আসুক বাজারে।”