বড়পর্দা আর ছোটপর্দার একসময়ের জনপ্রিয় মুখ, দেবিকা মিত্র। তাঁর অভিনয় যাত্রার শুরু হয়েছিল ১৯৭৫ সালে, অরবিন্দ মুখার্জির ‘অগ্নিশ্বর’ ছবির মাধ্যমে। সেই সময়ই দেবিকা এমন এক জায়গায় পৌঁছেছিলেন, যেখানে দর্শক তাঁর অভিনয়ের সঙ্গে আবেগের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পড়ত। উত্তম কুমারের সঙ্গে পর্দা ভাগ করার সুযোগ, ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’, ‘নীলকন্ঠ’-র মতো ধারাবাহিকে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি দর্শকদের মনে বিশেষ ছাপ ফেলেছিলেন। কিন্তু আজকের দিনে সেই আলো যেন খানিকটা ম্লান।
বর্তমানে টলিউডের বড় বা ছোট কোন প্রজেক্টে দেবিকার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় না। সম্প্রতি টলি টাইমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানান, তিনি এখনও অভিনয় করতে আগ্রহী, কিন্তু কেউ ডাকেই না। এই অবহেলার অনুভূতি তাঁকে গভীরভাবে ব্যথিত করছে। হাতে কাজ না থাকা শুধু পেশাদারী নয়, মানসিকভাবে তাকে ভাবায়। তাঁর কথায়, ‘আমি তো এখনও অভিনয় করতে চাই, কিন্তু কেউ ডাকেই না।’
দেবিকা মিত্রর জীবনের এক বড় আক্ষেপ হল যে তিনি জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত অভিনয় করতে চান, কিন্তু সেই স্বপ্নটি পূর্ণ হয়নি। খলনায়িকা বা কৌতুক চরিত্রে কাজ করার সুযোগ না পাওয়া আজও তাঁর মনে কষ্টের কারণ হয়ে আছে। ‘ইচ্ছা ছিল, জীবনের শেষ দিনটাও যেন অভিনয় করতে করেই কাটে,’ বললেন দেবিকা। এই ইচ্ছা অভিনেত্রীর প্রতিটি মুহূর্তে অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসার সাক্ষ্য বহন করে।
দেবিকার প্রতিভা শুধুমাত্র সিনেমা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল না। ছোটপর্দায়ও তিনি সমান দক্ষ ছিলেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নতুন মুখ এবং ধারাবাহিকের চাহিদা তাঁকে দৃশ্যমান হতে দেয়নি। দর্শকরা আজও তাঁর অভিনয়কে স্মরণ করেন, কিন্তু তাঁকে পর্দায় দেখা যায় না। এটি কেবলই তাঁর জন্য নয়, বরং বাংলা ইন্ডাস্ট্রির জন্যও একটি বড় শূন্যতা তৈরি করেছে।
আরও পড়ুনঃ “দেশকে ‘মা’ ভাবলে ধর্ম নিয়ে মারপিট করতে পারতেন না, রাস্তাঘাট ভাঙাচোরা রাখতে পারতেন না!” “দেশমাতৃকার নামে স্লোগান, কিন্তু মেয়েদের নিরাপত্তায় ব্যর্থ!”— গানে গানে দ্বিচারিতার কথাই তুললেন মেখলা! নতুন মিউজিক ভিডিওতে তাঁর প্রশ্ন সমাজকে!
যদিও বর্তমান পরিস্থিতি হতাশাজনক, দেবিকা মিত্রের আশা এখনও টিকে আছে। তিনি জানান, সঠিক প্রজেক্ট ও চরিত্রের জন্য অপেক্ষা করছেন। এই অপেক্ষার মধ্যে রয়েছে অভিনয়ের প্রতি তাঁর অনুরাগ এবং দর্শকের সঙ্গে পুনরায় সংযোগের আকাঙ্ক্ষা। হয়তো একদিন আমরা আবার দেবিকাকে পর্দায় দেখব, এবং সেই দিনটি হবে তাঁর দীর্ঘ অপেক্ষার প্রতিশ্রুতি পূরণের মুহূর্ত।