“আমার জন্মটাই ফাউ, ফ্লপ হিরো আমি!” “এই ইন্ডাস্ট্রিতে কেউ বন্ধু হয় না, শত্রুরও প্রয়োজন হয় না…বন্ধুরাই যথেষ্ট!”— শিল্পীজীবনের আক্ষেপ থেকে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে চোখ ভিজল শঙ্কর চক্রবর্তীর!

টলিউডের অভিজ্ঞ অভিনেতা ‘শঙ্কর চক্রবর্তী’ (Shankar Chakraborty)। নিজের সাবলীল অভিনয় দিয়ে দর্শকদের মনে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। ছোটপর্দা থেকে বড়পর্দা— সব জায়গাতেই তাঁর উপস্থিতি প্রশংসিত হয়েছে সমানভাবে। কিন্তু আলো-ঝলমলে এই জীবনের আড়ালে জমে আছে ব্যক্তিগত জীবনের অনেক না-বলা গল্প। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি খোলাখুলি স্বীকার করেছেন, জীবনের সবচেয়ে বড় আক্ষেপ জড়িয়ে তাঁর প্রয়াত স্ত্রী ‘সোনালি চক্রবর্তী’কে (Sonali Chakraborti) ঘিরেই।

মফস্বল থেকে শহরে এসে যখন তিনি নিজের জায়গা তৈরি করতে ব্যস্ত ছিলেন, তখন তাঁর পাশে বটগাছের মতো থেকেছেন সোনালি। শুধু সঙ্গিনী হিসেবে নয়, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁকে গড়ে তুলেছিলেন শক্ত ভিতের উপর দাঁড়ানো মানুষ হিসেবে। তবুও, সেই মানুষকেই একসময় অভিনয় ছেড়ে দিতে বলেছিলেন শঙ্কর, কারণ ছিল তাঁর হিংসা। অভিনেতার কথায়, স্ত্রীর সাফল্যের পথ আটকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আজও তাঁকে তাড়িয়ে বেড়ায়। দীর্ঘদিন যুক্ত তিনি অভিনয়ের সঙ্গে।

ভালো দিনগুলোতেও যেমন কান্নার অভিনয় করতে হয়েছে, খারাপ দিনগুলোতে আবার হাসিমুখে অভিনয়ও করতে হয়েছে তাঁকে। দীর্ঘদিনের এই পথ চলায় সহকর্মীদের নিয়ে কেমন অভিজ্ঞতা তাঁর? এদিন তিনি বলেন, “অনেকদিন আগে আমায় শমিত ভঞ্জ একটা কথা বলেছিলেন। উনি বলেছিলেন যে, ‘এই ইন্ডাস্ট্রিতে কেউ বন্ধু যেমন হয় না, তেমনই শত্রুর প্রয়োজনও হয় না! শত্রুর প্রয়োজন বন্ধুরাই মিটিয়ে দেবে।’ আমার জীবনে সত্যিই এমন অনেক অভিজ্ঞতা আছে, আজ আর বলতে চাই না কাউকে।

কিন্তু অবশ্যই ব্যতিক্রম আছে, কিছু ভালো বন্ধু পেয়েছি।” জীবনের অনেক আক্ষেপ রয়েছে অভিনেতার। এর মধ্যে কিছু আক্ষেপ নিয়ে কথা বললেন এদিন তিনি। অভিনেতার কথায়, “আমি মনে করি, আমার জন্মটাই ফাউ। আমার দাদা যদি না মারা যেতেন, আমার জন্ম নেওয়ার কোনও সম্ভাবনা ছিল না। অন্তত মা-বাবার তেমনই পরিকল্পনা ছিল। আমার জন্ম নেবার আগে দিদির জন্ম হয়, তাও প্রায় দাদার মৃ’ত্যুর ১৬ বছর পর। যেহেতু আগেকার দিনে বংশে বাতি দেওয়ার একটা কথা প্রচলিত ছিল, সেই জন্যই মূলত আমার জন্ম।

আরও পড়ুনঃ “প্রথমে ভেবেছিলাম মিথ্যে রটনা, কিন্তু পরে জানলাম সত্যিই আর নেই জয়!” “মনটা ভারী হয়ে যাচ্ছে, ও যে এত তাড়াতাড়ি চলে যাবে ভাবিনি!”— প্রাক্তন প্রেমিক জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়াণে কান্নায় ভেঙে পড়লেন চুমকি চৌধুরী!

যেহেতু একবার প্রথম পুত্র সন্তানকে হারিয়েছেন, তাই আমায় কোলে পেয়ে মা নাম রেখেছিলেন ‘হারাধন’। স্ত্রীকে নিয়ে তো আক্ষেপ আচ্ছেই, তবে আরও একটা আক্ষেপ হচ্ছে– যে রোলটা আমার ছবিতে পাওয়ার কথা ছিল, সেটা কখনওই পাইনি। একপ্রকার টাইপকাস্ট হয়ে গেছিলাম। ফ্লপ নায়কের তকমাও জুটেছিল এক সময়।” অভিনেতার জীবনের সাফল্যের গল্পের আড়ালে জমে আছে এমন বহু দুঃখ আর আক্ষেপ, যা আজও তাঁকে ভিতর থেকে কুরে কুরে খায়। ব্যক্তিগত ক্ষতি, হারানো সুযোগ আর ভুল সিদ্ধান্ত—সব মিলিয়েই আজও তিনি দিন কাটাচ্ছেন আবেগী হয়ে।

You cannot copy content of this page