টলিউডে যাঁকে আজ দেখে হয় ইন্ডাস্ট্রি নামে, অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee)। তাঁর বাবা অর্থাৎ স্বর্ণ যুগের নায়ক বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের (Biswajit Chatterjee) বাড়ির দুর্গাপুজোর (Durga Puja) গল্প যেন একেবারে সিনেমার মতো। বহু বছর ধরে জুহুর মাটিতেই তিনি দুর্গা প্রতিমা প্রতিষ্ঠা করে আসছেন। শুরুটা ছিল একেবারে ছোট পরিসরে, মাত্র কয়েকজন মানুষকে নিয়ে। কিন্তু আজ সেই পুজো হয়ে উঠেছে সর্বজনীন, যেখানে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বলিউড তারকাদের আনাগোনা লেগেই থাকে।
তবে বিশ্বজিৎ মনে করেন, এই আয়োজনের পিছনে আসল শক্তি হল স্বয়ং মা দুর্গার আশীর্বাদ। যিনি প্রতি বছর তাঁকে নতুনভাবে দাঁড়ানোর শক্তি দেন। এই পুজোর সঙ্গে নাকি রোশন পরিবারের সম্পর্কও অনেক পুরনো। রাজেশ, রাকেশ আর হৃতিক রোশনদের উপস্থিতি প্রতি বছরই পুজোকে অন্য মাত্রা দেয়। এমনকি একসময় রাকেশ রোশন এখানে পুজোর দিন শপথ নিয়ে নিজের ছবির কাজ শুরু করেছিলেন। তাঁদের মা ইরা রোশনও বাঙালি হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই এই পুজোর সঙ্গে একাত্ম হয়ে গিয়েছেন।
তবে একটা বছর তাঁরা সবাই শুটিংয়ের ব্যস্ততায় অনুপস্থিত ছিলেন, আর সে দুঃখ বারবার ফোনে জানিয়েছেন বিশ্বজিৎকে। খাবারের আয়োজন নিয়েও আলাদা যত্ন থাকে এই পুজোয়। ভোগের তালিকায় খিচুড়ি, লাবড়া, আলুর দম থেকে শুরু করে টমেটো বা আমের চাটনি— সবকিছুই থাকে বিশেষভাবে বাঙালিদের নিয়ম মেনেই। শুধু হিন্দু নন, মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষও এসে এই ভোগ খেয়ে যান, আর সেখানেই বিশ্বজিৎ খুঁজে পান প্রকৃত সর্বধর্মসমন্বয়। তাঁর বিশ্বাস, মা দুর্গা কোনও ভেদাভেদ মানেন না। মায়ের কাছে সব সন্তানই সমান।
তারকাদের আসা-যাওয়ার রেশ এই পুজোয় নতুন কিছু নয়। বচ্চন পরিবার থেকে বিদ্যা বালন, জ্যাকি শ্রফ— এমন বহু বর্ষিয়ান শিল্পীও পায়ের ধুলো দিয়েছেন এই মণ্ডপে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও প্রতি বছর হয়ে থাকে। একবার নৃত্যশিল্পী সুধা চন্দ্রন এসেছিলেন, আবার অন্য এক বছর বিরজু মহারাজের ছাত্রীরা অনুষ্ঠান করেছেন। বিশ্বজিৎ এই পুজোয় শুধু আনন্দ নয়, বিনোদনে বিশেষ অবদান রাখা শিল্পীদের শ্রদ্ধাও জানিয়ে থাকেন। গত বছর মহম্মদ রফিকে সম্মান জানানো হয়েছিল, এই বছর সেই সম্মান যাবে উত্তমকুমারের উদ্দেশ্যে।
সবশেষে, বিশ্বজিৎ বলেন তাঁর জন্য এই আয়োজন শুধু উৎসব নয়, দায়িত্বও বটে। ছেলে বুম্বা প্রতি বছরই পূজায় অনুপস্থিত থাকে। এই নিয়ে অবশ্য তাঁর কোনও আক্ষেপ নেই। প্রতিবছর ছেলের নতুন ছবি নিয়ে এতটাই ব্যস্ত থাকে যে বাবার পাশে দাঁড়াতে পারে না। বয়স বাড়লেও তিনি প্রতিদিন দাঁড়িয়ে খুঁটিনাটি কাজ সামলান। কিন্তু এসবের মধ্যেই আছে তাঁর অগাধ ভালোবাসা ও বিশ্বাস। তাই তো তিনি বলেন, “যতদিন প্রাণ আছে, ততদিন এই পুজো চলবে, মা-ই সব করাচ্ছেন।”
আরও পড়ুনঃ “অবসাদ থেকে আ’ত্মহ’ত্যার পথে যেতে বসেছিলাম, কাছের মানুষ দয়া করে পাশে দাঁড়ান!” “সমাজ মাধ্যমে যা দেখানো হয়, সেটা আসল জীবন নয়!”— দাম্পত্যে টানাপোড়েন আর সংসারের চাপেই কি চরম সিদ্ধান্তের কথা ভেবেছিলেন অভিনেত্রী অনামিকা চক্রবর্তী?
Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।
Biswajit Chatterjee Recalls His Durga Puja Journey But Regrets Son Prosenjit’s Absence At His Celebration