“অবসাদ থেকে আ’ত্মহ’ত্যার পথে যেতে বসেছিলাম, কাছের মানুষকে দয়া করে পাশে দাঁড়ান!” “সমাজ মাধ্যমে যা দেখানো হয়, সেটা আসল জীবন নয়!”— দাম্পত্যে টানাপোড়েন আর সংসারের চাপেই কি চরম সিদ্ধান্তের কথা ভেবেছিলেন অভিনেত্রী অনামিকা চক্রবর্তী?

বাংলা বিনোদন জগতে অল্প সময়ের মধ্যেই পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছিলেন ‘অনামিকা চক্রবর্তী’ (Anamika Chakraborty)। টেলিভিশনের পর্দায় কিংবা ওয়েব সিরিজে— যেখানেই অভিনয় করেছেন, দর্শকের মনে নিজের জায়গা পাকা করেছেন সহজ অভিনয় আর প্রাণখোলা হাসির জন্য। কিন্তু আলো-ঝলমলে এই জগতের বাইরেও অভিনেত্রীর জীবনে এসেছিল অন্ধকারের সময়। সম্প্রতি ছিল ‘আ’ত্মহ’ত্যা প্রতিরোধ দিবস’, এদিন তিনি খোলাখুলি জানালেন সেই সময়ের কথা। কীভাবে অবসাদের সঙ্গে লড়াই করেছেন তিনি নিজে এবং কেন সকলের ধৈর্য ধরে চলা এত জরুরি।

অনামিকা জানিয়েছেন, “সমাজ মাধ্যমে যা দেখা যায়, তার সবটা সত্যি নয়। সেখানে রঙিন ছবি আর নিখুঁত জীবন দেখালেও বাস্তবে অনেকেই নিজের লড়াই লুকিয়ে রাখেন আড়ালে।” তাঁর মতে, এই ভুয়ো ঝলমলে ছবির প্রভাব অনেকের মনেই চাপ তৈরি করে। নিজেও সেই চাপের শিকার হয়েছেন তিনি। মুড বদলে যাওয়া, আচমকা রেগে যাওয়া— এসবই এক সময়ে ছিল তাঁর জীবনের অংশ। তবে নিজেকে বোঝাতে শিখেছেন এবং চিকিৎসকের সাহায্য নিয়েও ধীরে ধীরে সামনে এগিয়েছেন।

এই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই অনামিকা মনে করেন, সমস্যায় থাকা মানুষকে সহানুভূতি দেখানোর পরিবর্তে প্রয়োজন তাঁর কথা মন দিয়ে শোনা। কাছের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক যত ভালো হবে, ততই নেতিবাচক চিন্তা থেকে দূরে থাকা সম্ভব। তিনি নিজেই বলেছেন, “একসময় আমারও মনে হয়েছিল আর কিছুই করার নেই, কিন্তু পাশে থাকা মানুষ এবং মনোবিদের সহায়তায় সেই সময় কাটিয়ে উঠতে পেরেছিলাম।” অভিনেত্রী যদিও টেলিভিশন থেকে দূরে সরে গিয়েছেন, কিন্তু তিনি যা অভিনয় করেছেন তা দর্শকের মনে থেকে গেছে।

‘রাজযোটক’-এর বনি হোক বা ‘এখানে আকাশ নীল’-এর হিয়া—প্রতিটি চরিত্রই প্রমাণ করেছে তাঁর অভিনয় দক্ষতা। শেষবার তাঁকে দেখা গিয়েছিল ‘মিঠিঝোরা’-য়, যদিও নেতিবাচক সেই চরিত্র ছিল কিছুদিনের জন্য। তবুও অনামিকার কথায়, “চরিত্র যত ছোটই হোক, দর্শকের মনে ছাপ রেখে যাওয়াটাই আসল।” এবার তাই নিজের ব্যক্তিগত লড়াই থেকে পাওয়া শিক্ষা দিয়েই তিনি অন্যদের বার্তা দিচ্ছেন। আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবসে তিনি বিশেষভাবে অনুরোধ করেছেন, যেন কোনও সমস্যায় তাড়াহুড়ো করে হাল ছেড়ে না দেওয়া হয়।

অভিনেত্রীর ক্ষেত্রে মানসিক অবসাদে বরাবর পাশে দাঁড়িয়েছেন স্বামী ও অভিনেতা উদয় প্রতাপ সিং। হাতে কাজ না থাকা নিয়ে একসময় নিজেকে দোষারোপ করতেন অভিনেত্রী। এমনকি সমাজ মাধ্যমে সৌন্দর্য নিয়ে নানান কটাক্ষ শুনতে শুনতে, নিজেকে সত্যিই খারাপ তোকে দেখতে শুরু করেছিলেন। সেই সময় পাশের মানুষটি শক্ত করে হাত ধরেছিলেন। আজ অনামিকার মতে, ধৈর্য আর নিয়মিত মনের কথাবার্তা অন্যদের সঙ্গে ভাগ করাই পারে মানুষকে এই মানসিক বিপদ থেকে বার করে আনতে।

আরও পড়ুনঃ টিআরপির লড়াইয়ে উলটপালট! ‘পরশুরাম’কে হারিয়ে রাজত্ব দখল করলো ‘পরিণীতা’! ‘ফুলকি’ আর ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ জায়গা ধরে রাখল সেরা পাঁচে!

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।