এখন সমাজ মাধ্যম খুললেই যাঁর পোস্ট কমবেশি সবারই চোখে পড়ে। আর কিছু না হলেও, আলোচনা-সমালোচনা লেগেই থাকে তাঁর নামে। তিনি ছোটপর্দার অভিনেত্রী ‘মধুবনী গোস্বামী’ (Madhubani Goswami)। তাঁকে এবং স্বামী রাজাকে ঘিরে বিতর্ক যেন থামছেই না। কিছু দিন আগে শাঁখা-পলা নিয়ে তাঁর মন্তব্য, মাতৃত্বকে কটাক্ষ এবং নিজেকে শিক্ষিত প্রমাণ করার চেষ্টা নিয়ে হইচই পড়েছিল। আর এবার সমাজ মাধ্যমে আবার নতুন লেখার জেরেই তিনি সমালোচনার মুখে। স্বামী ‘রাজা গোস্বামী’র (Raja Goswami) সঙ্গে ছবি দিয়ে তিনি লিখেছিলেন, “টাকা দিয়ে কারও প্রভাব দেখানো মেনে নেওয়ার মতো নয়।” এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই দর্শকের একাংশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
এর কিছুদিন আগে ব্যাগের ব্যবসা নিয়ে মধুবনীকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন নেটিজেনরা। মূলত তাদের দাবি ছিল, ফুটপাতের জিনিস ব্র্যান্ডের নাম লাগিয়ে চড়া দামে বিক্রি করছেন মধুবনী। অনেকে সেইসব নিয়ে প্রমাণ দেখিয়েছিলেন, পাল্টা অভিনেত্রী ভিডিও করে নিজের অবস্থানও স্পষ্ট করেছিলেন। এবার এই পোস্ট নিয়ে আবারও শুরু হয়েছে কটাক্ষ। এই পোস্টে তিনি লিখেছেন, “আমার একটা সমস্যা আছে, বেশ গুরুতর সমস্যা। আমি টাকা দিয়ে, কারুর রোয়াব নিতে পারি না। আমি কিন্তু প্রত্যেকটি মানুষকে সন্মান করি, প্রত্যেক স্তরের মানুষকে সন্মান করি, সবার সঙ্গে হেসে কথা বলি।
সব্বাইকে সন্মান দিয়ে কথা বলি। কিন্তু কেউ যদি অযাচিতভাবে, দুটো কথা শুনিয়ে দেয়, তার কপাল যদি ভালো থাকে, অবিলম্বে সেই স্থান বর্জন করি, আর যদি কপাল খারাপ থাকে, তাহলে তার জায়গাটা ঠিক কোথায়, তাকে বুঝিয়ে দিয়ে, সম্পর্কে ইতি টানি। এক্ষেত্রে, আমার মনে হয়, মানুষের বেসিক ভদ্রতা এবং বিবেচনা, এই দুটোর খুব প্রয়োজন। কাকে বলছি, কেন বলছি, কতটা বলা উচিত, তাকে কি আদৌ এতটা বলা যায়? এই প্রশ্নগুলো যদি মানুষ নিজেকে করে, তাহলেই কিন্তু অনেক সম্পর্ক বাঁচে। আমি ভদ্র ব্যবহার করছি বলেই, তুমি যে আমার মাথার ওপর উঠে নাচতে পারো না।
এই সেন্সটুকুই কিছু কিছু মানুষের নেই। দুটো হেসে কথা বলেছি কি বলিনি, সমগোত্রীয় ভেবে ফেলার যে ব্যাপারটা। সব থেকে বড় কথা হচ্ছে, সমগোত্রীয় কেউ অপমান করলেও, ছোট বড় কথা বললেও, তার ও অপমান আমি নিই না।” কিন্তু তাঁর কথার মধ্যে থাকা “সমগোত্রীয়” শব্দটি নিয়েই দর্শকের একাংশ তীব্র বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ এটিকে অহঙ্কারের বহিঃপ্রকাশ বলেছেন। যেমন একজনের কথায়, “এত অহমিকা! ঠিক কারা আপনার “সমগোত্রীয়” সেটা জানার ইচ্ছে রইলো। আপনার মনের মত কমেন্ট না করলেই বুঝি অনেকের গোত্রচ্যুত ঘটে।
বি দ্রঃ অনেক রুচিশীল , ভদ্রলোক ও আপনাদেরকে নেতিবাচক মন্তব্য করতে দেখেছি, তাঁরা নিশ্চয় আপনাদের সমগোত্রীয় নয়।” অন্যজনের কথায়, “আমি কোনদিন আপনাদের পোস্টে কমেন্ট করি না কিন্তু আজকে করছি আপনি সমগোত্রীয় বলতে কী বোঝালেন, আপনি কোন গোত্রীয়। হ্যাঁ কেউ বাজে কথা বললে সেটা সহ্য করা অবশ্যই উচিত নয় কারণ সহ্য করলে একপ্রকার সে দিন দিন মাথায় উঠবে। কিন্তু আমি আপনার ওই সমগোত্রীয় কথাটা একমত হতে পারলাম না।” আবার অনেকেই তাঁকে ‘ব্লক’ করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ “মোটা সুস্মিতা”, “হাতি সুস্মিতা”—নেটিজেনদের কটাক্ষের জবাব দিলেন সুস্মিতা রায়! জিম ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস থাকা সত্ত্বেও কেন তার চেহারায় এমন পরিবর্তন? ৭ মাসে কী ঝড় বয়ে গেছে তার সঙ্গে জানেন?
তবে এসব বিতর্ক নিয়ে এখনও মুখ খোলেননি মধুবনী। এর আগে অবশ্য তিনি জানিয়েছেন, অন্যের মন্তব্যে প্রভাবিত হতে রাজি নন, নিজে যেটা অনুভব করেন সেটাই লেখেন। সম্প্রতি ‘চিরসখা’ ধারাবাহিকে আইনজীবীর চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের নজর কেড়েছিলেন তিনি। ধারাবাহিকের কাজ শেষ করে এখন আপাতত তিনি নিজের ব্যাগের ব্যবসাতেই বেশি মন দিচ্ছেন। অভিনয়ের বাইরের এই নতুন উদ্যোগ তাঁকে যেমন ব্যস্ত রেখেছে, তেমনি নেটদুনিয়ায় তাঁর পোস্ট নিয়েও আলোচনার শেষ নেই।