জনপ্রিয় টেলিভিশন অভিনেত্রী অলকানন্দা গুহ (Alokananda Guha), যিনি “করুণাময়ী রানী রাসমণি” ও “জয়ী” ধারাবাহিকে অভিনয় করে দর্শকের মনে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছেন, এবার এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগে সরব হলেন। সম্প্রতি এক ভিডিও বার্তায় তিনি দাবি করেন, তাঁর শ্বাশুড়ির চিকিৎসার নামে রুবি হাসপাতালে (Ruby Hospital) ভয়ঙ্কর প্রতারণা হয়েছে। পায়ের তলায় সামান্য ক্ষত নিয়ে ভর্তি হলেও তাঁকে গুরুতর অসুস্থ বলে দেখানো হয়, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ভয় দেখানো হয় বলে অভিযোগ করেন অলকানন্দা।
অভিনেত্রীর কথায়, ভর্তি হওয়ার প্রথম দিনেই চিকিৎসকরা জানান, রোগীর রক্তে শর্করার মাত্রা অনেক বেশি, তাই আইসিইউতে রাখতে হবে। পরদিন শর্করা নিয়ন্ত্রণে এলেও জানানো হয় হৃদযন্ত্র দুর্বল, যেকোনও মুহূর্তে পেসমেকার লাগতে পারে। এরপর বলা হয় ফুসফুসে জল জমেছে— এমনই একের পর এক ভয় দেখিয়ে নতুন পরীক্ষা করা হয়। অথচ রিপোর্টে কোনও বড় সমস্যা ধরা না পড়লেও, হাসপাতাল থেকে নিত্য নতুন খরচের তালিকা বাড়তে থাকে।
মাত্র চারদিনে হাসপাতালের বিল পৌঁছে যায় প্রায় ₹২.৬ লক্ষে, এমনটাই দাবি অলকানন্দার। অথচ যেই পায়ের ক্ষত নিয়ে তাঁর শ্বাশুড়ি ভর্তি হয়েছিলেন, সেই জখমের চিকিৎসাই নাকি করা হয়নি। আরও চমকপ্রদ অভিযোগ— রোগীর হাতে চ্যানেল ঠিকভাবে না বসানোয় রক্তে জামা ভিজে যায়, এমন ভয়াবহ দৃশ্যই দেখান তিনি ভিডিওতে। অভিনেত্রীর কথায়, “এটা কি চিকিৎসা? নাকি টাকা তোলার নতুন কৌশল?”
অলকানন্দা জানান, হাসপাতালের চিকিৎসক সমীক বন্দ্যোপাধ্যায় (Dr. Somik Bandyopadhyay)-এর অধীনে এই চিকিৎসা চলছিল। তিনি ও তাঁর স্বামী প্রকাশ্যে ওই চিকিৎসকের নাম উল্লেখ করে প্রশ্ন তোলেন, “যদি শহরের মানুষ এমন প্রতারণার শিকার হন, তাহলে গ্রামের সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে?” নেটিজেনরা অলকানন্দার পাশে দাঁড়িয়ে এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন এবং অনেকেই বলেছেন, “এই ঘটনা গোটা স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপর আস্থা নষ্ট করছে।”
আরও পড়ুনঃ “আগেকার ধারাবাহিকগুলো এত ফেক ছিল না, এখন সবকিছুই যেন কৃত্রিম! কেউ অভিনয় নিয়ে চিন্তিত নয়, সবাই টিআরপির পিছনে ছুটতে ব্যস্ত!” — বাংলা টেলিভিশনের বাস্তবতা নিয়ে বি’স্ফোরক মন্তব্য পায়েল দে-র, টিআরপি দৌড়ে হারিয়ে যাচ্ছে আসল গল্পের ছোঁয়া!
এই ভিডিও মুহূর্তেই ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। অনেকেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন এবং স্বাস্থ্য দপ্তরের হস্তক্ষেপ দাবি করছেন। অন্যদিকে, নেটিজেনদের একাংশ মনে করছেন, এমন অভিজ্ঞতা সামনে আনা দরকার ছিল, যাতে সাধারণ মানুষ সচেতন হন। অলকানন্দা গুহর সাহসী পদক্ষেপ এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে — তিনি শুধু একজন অভিনেত্রী নন, বরং অসংখ্য রোগীর কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছেন।