“আগেকার ধারাবাহিকগুলো এত ফেক ছিল না, এখন সবকিছুই যেন কৃত্রিম! কেউ অভিনয় নিয়ে চিন্তিত নয়, সবাই টিআরপির পিছনে ছুটতে ব্যস্ত!” — বাংলা টেলিভিশনের বাস্তবতা নিয়ে বি’স্ফোরক মন্তব্য পায়েল দে-র, টিআরপি দৌড়ে হারিয়ে যাচ্ছে আসল গল্পের ছোঁয়া!

বাংলা টেলিভিশনের জগৎ মানেই আবেগ, সম্পর্ক, ভালোবাসা আর নাটকীয়তা। একসময় পরিবারে সকলের একত্রে বসে দেখা ‘মেগা সিরিয়াল’ ছিল প্রতিদিনের রুটিনের অংশ। গল্পের বাস্তবতা, চরিত্রের আবেগ আর সমাজের প্রতিফলন— সব মিলিয়ে বাংলা ধারাবাহিক দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছিল। সেই ধারাবাহিকগুলো শুধুমাত্র বিনোদন নয়, জীবনের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছিল একসময়।

কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে গেছে ধারাবাহিকের ধারা। এখন টেলিভিশন চ্যানেলগুলির মধ্যে শুরু হয়েছে তীব্র টিআরপি প্রতিযোগিতা। দর্শক টানতে গিয়ে নির্মাতারা বাস্তবতার চেয়ে বেশি জোর দিচ্ছেন নাটকীয়তা আর অতিনাটকীয় প্লট টুইস্টে। এর ফলে গল্পের গুণমান যেমন কমেছে, তেমনই দর্শকদের একাংশও ধীরে ধীরে দূরে সরে যাচ্ছেন এই অতি কৃত্রিম কনটেন্ট থেকে।

অতীতের ধারাবাহিকগুলো সমাজমুখী ও বাস্তবধর্মী, এখনকার অনেক ধারাবাহিকেই দেখা যায় অবাস্তব পরিস্থিতি, অতিরিক্ত চমকপ্রদ মোড়, আর ভিজ্যুয়াল ড্রামা। আগেকার গল্পগুলো যেখানে হৃদয় ছুঁয়ে যেত, এখনকার ধারাবাহিক অনেক ক্ষেত্রেই সেই বাস্তবতার ছোঁয়া হারিয়ে ফেলেছে।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জনপ্রিয় অভিনেত্রী পায়েল দে খোলাখুলি বলেন, “আগেকার ধারাবাহিক গুলোতে এত ফেক কিছু দেখানো হত না। এখন টিআরপি বাড়ানোর দৌড়ে সবকিছুই যেন কৃত্রিম হয়ে গেছে।” ‘বেহুলা লক্ষিন্দর’-এর মতো জনপ্রিয় ধারাবাহিকের মাধ্যমে নিজের অভিনয়জীবন শুরু করা পায়েল মনে করেন, গল্পে সত্যতা না থাকলে দর্শকের সঙ্গে সংযোগ তৈরি হয় না।

আরও পড়ুনঃ “ধ’র্ষণ হতেই থাকে, ধ’র্ষণ আগেও হয়েছে, আগামীতেও হবে!” — দুর্গাপুর ধ’র্ষণকাণ্ডে চিরঞ্জিতের এই বেফাঁস মন্তব্যে ফুঁসে উঠল নেটপাড়া! ‘এরা মরার আগে মানুষের অভিশাপ নিয়ে মরতে চায়!’- কটাক্ষ দর্শকদের!

নিশ্চয়ই পরিবর্তন সময়ের দাবি, কিন্তু বাস্তবতার জায়গা হারিয়ে গেলে বিনোদনও অর্থহীন হয়ে পড়ে। পায়েলের মতো অনেক শিল্পীই চান বাংলা ধারাবাহিক আবার ফিরে পাক সেই পুরনো গুণমান ও সংবেদনশীলতার যুগে, যেখানে গল্পের প্রাণ ছিল বাস্তবতায়, আর দর্শক অনুভব করতেন নিজেদের জীবনের প্রতিচ্ছবি।