“বিধবা হলেই নিষেধের বেড়াজাল! একজন বিধবা তার পছন্দের পোশাক পরলেই কিংবা একটু রঙিন হয়ে বাঁচতে চাইলে কেন তাঁকে বিচার করা হয়?” সমাজের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সুর তুললেন অভিনেত্রী শতাক্ষী নন্দী

সমাজ বদলাচ্ছে, মনোভাবও আধুনিকতার দিকে এগোচ্ছে—কিন্তু সব ক্ষেত্রেই কি এই পরিবর্তন চোখে পড়ে? বিধবা নারীদের প্রতি সমাজের আচরণ নিয়ে সম্প্রতি স্পষ্ট বক্তব্য রাখলেন অভিনেত্রী শতাক্ষী নন্দী। তাঁর অভিমত, আজও অনেক ক্ষেত্রে নারীরা নিজের ইচ্ছেগুলোকে চাপা দিয়ে চলতে বাধ্য হন শুধুমাত্র সমাজের চাহিদার জন্য।

রুদ্রজিৎ রায় পরিচালিত ছবি ‘পিঞ্জর’-এ শতাক্ষী অভিনয় করেছেন পারমিতা নামের এক যুবতী বিধবার চরিত্রে—যিনি অল্প বয়সে স্বামীকে হারিয়ে সমাজের নানা বাধার মধ্যে থেকেও নিজের হৃদয়ের কথা শোনার সাহস দেখান। এই চরিত্রকে কেন্দ্র করেই অভিনেত্রীর প্রশ্ন—“একজন বিধবা তার পছন্দের পোশাক পরলেই কিংবা একটু রঙিন হয়ে বাঁচতে চাইলে কেন তাঁকে বিচার করা হয়?” তাঁদের অনুভূতি কি আর স্বাভাবিক নয়?

বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতাও এই বিষয়ে অভিনেত্রীকে ভাবায়। ছোট বয়সে বাবা হারানোর পরে নিজের মায়ের সংগ্রাম তিনি দেখেছেন খুব কাছ থেকে। সরাসরি নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও সমাজের অদৃশ্য নজরদারি মাকে বারবার ভাবিয়েছে—‘এটা কি ঠিক হচ্ছে?’ ফিকে রঙের শাড়ি, নীরব জীবন, নিজের চাওয়াকে আড়াল করে রাখা—এই চাপে অনেকেই ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলেন নিজেদের।

শতাক্ষীর মতে, এই লড়াই আরও কঠিন হয় যখন নারীর অনুভূতির বিষয় আসে। প্রেম, কামনা, আনন্দ—এসব যেন ‘অপরাধ’ হয়ে ওঠে বিধবা জীবনে। তাঁর প্রশ্ন—“নিজেদের ভালো লাগাকে প্রাধান্য দিলেই কেন তাঁদের খারাপ হতে হবে?” এই সামাজিক প্রতিবন্ধকতাকেই তুলে ধরতে চেয়েছেন তিনি ‘পিঞ্জর’-এর মাধ্যমে।

আরও পড়ুনঃ “একটা ভালো পিছন দরকার…” দেবকে নিয়ে কুণাল ঘোষের এমন মন্তব্যে হইচই টলিপাড়ায়! মঞ্চে হাসি-ঠাট্টার আড়ালে কি সত্যিই মিটল পুরনো শত্রুতা, না আবারও শুরু নতুন লড়াই?

পরিচালক রুদ্রজিৎ রায় জানান, “প্রত্যেকে কোনও না কোনও খাঁচায় বন্দি। সেই খাঁচা ভাঙার সাহসই মূল কথা।” ছবিতে পারমিতা সমাজের অগণিত প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েও নতুনভাবে জীবনকে গ্রহণ করার চেষ্টা করে। সমাজ তাকে গ্রহণ করবে না করবে—এই দ্বিধা নিয়েই গড়ে উঠেছে ছবির কাহিনি। আর সেই গল্পই হয়তো অনেক নারীর মনের কথা বলবে।