দক্ষিণী টেলিভিশনের জনপ্রিয় এক অভিনেত্রী দীর্ঘদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভয়াবহ হেনস্থার শিকার হয়ে অবশেষে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে একের পর এক অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁকে পাঠানো হচ্ছিল পুরুষাঙ্গের ছবি, অশালীন ভিডিও এবং লজ্জাজনক বার্তা। প্রথমে বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিতে চাইলেও ক্রমাগত এমন অশোভন আচরণ তাঁকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে। বহুবার সতর্ক করার পরেও যখন পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হল না, তখনই তিনি সাইবার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নেন।
পুলিশি সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রথমে ‘নবীনজ়’ নামে একটি অ্যাকাউন্ট থেকে ওই অভিনেত্রীকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠান। ৪১ বছর বয়সি সেই অভিনেত্রী অনুরোধ গ্রহণ না করতেই শুরু হয় অশ্লীল বার্তার বর্ষণ। অভিনেত্রীর দাবি, মেসেঞ্জারে দিনের পর দিন তাঁকে অবাঞ্ছিত ছবি থেকে শুরু করে যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ ভিডিও পাঠাত ওই ব্যক্তি। অভিনেত্রী তাঁকে ব্লক করে দেওয়ার পরেও দুষ্কৃতীর হেনস্থা থামেনি। বরং নতুন নতুন নকল অ্যাকাউন্ট খুলে আরও বেশি করে বার্তা পাঠাতে শুরু করে সে।
এই পরিস্থিতিতে ক্লান্ত ও ভীত অভিনেত্রী ভাবেন, হয়তো মুখোমুখি কথা বললে সমস্যা মিটতে পারে। তাই ১ নভেম্বর যখন অভিযুক্ত আবারও যোগাযোগ করার চেষ্টা করে, তিনি তাকে বেঙ্গালুরুর নন্দন প্যালেসে দেখা করতে বলেন। সেখানে সরাসরি সতর্ক করার পরেও অভিযুক্ত ব্যক্তি নিজের আচরণে কোনও পরিবর্তন আনেনি। বরং আগের মতোই চলতে থাকে অশালীন বার্তার উপদ্রব। সেই সময় অভিনেত্রী বুঝতে পারেন, নিজের নিরাপত্তা এবং সম্মানের জন্য আইনের সাহায্য নেওয়াই একমাত্র পথ।
এরপর তিনি যৌন হয়রানি ও অনলাইন নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেন সাইবার থানায়। অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত তদন্তে নেমে পুলিশ চিহ্নিত করে অভিযুক্ত যুবক নবীন কে মোনকে গ্রেপ্তার করে। জানা গিয়েছে, তিনি একটি গ্লোবাল টেকনোলজি রিক্রুটমেন্ট এজেন্সির ডেলিভারি ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেন। লন্ডন, প্যারিস, বার্লিন, জুরিখ সহ বিশ্বের বহু বড় শহরে রয়েছে সেই সংস্থার অফিস।
আরও পড়ুনঃ সমাজ বন্ধু থাকতে দেয়না! পরকীয়ার তকমা দিয়ে দেয়, সমাজের চোখ রাঙানি থামাতেই বিয়ে সারলেন স্বতন্ত্র-কমলিনী! অকপট নায়ক সুদীপ
বর্তমানে অভিযুক্তকে জুডিশিয়াল কাস্টডিতে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনা ফের মনে করিয়ে দিল, সোশ্যাল মিডিয়ার আড়ালে লুকিয়ে থাকা অসংখ্য হুমকি কত সহজে এক জন নারীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও মানসিক শান্তি নষ্ট করতে পারে। অনলাইনে অপরাধ যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে নারীদের সাইবার সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ— আর তাই এমন সাহসী পদক্ষেপই সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়ায়।






