টেলিভিশনের জনপ্রিয় মুখ ‘ঋজু বিশ্বাস’কে (Riju Biswas) ঘিরে সাম্প্রতিক বিতর্কে পুরো ইন্ডাস্ট্রি কিছুটা অস্বস্তির মধ্যেই রয়েছে। দীর্ঘদিন পর্দায় নিয়মিত না থাকলেও দর্শকের মনে তিনি যে পরিচিত নাম, সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু গত কয়েকদিনে সমাজ মাধ্যমে একের পর এক অভিযোগ উঠে আসায় তাঁর সেই পরিচিত ভাবমূর্তি বেশ চাপের মুখে পড়েছে। অনেক নারী জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত ইনবক্সে বারবার একই ধরনের বার্তা পেতেন তাঁরা, যা তাঁদের মতে আর শুধু ‘প্রশংসা’ ছিল না, বরং বিরক্তি আর অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
এই অভিযোগের সূত্রপাত এক মডেলের পোস্ট থেকে, যেখানে তিনি কিছু ব্যক্তিগত কথোপকথন প্রকাশ করেছিলেন। এরপর আরও কয়েকজন নারী, এমনকি কিছু অভিনেত্রীও একই অভিজ্ঞতার কথা বলেন। অভিযোগগুলোর সুর আলাদা হলেও মূল বিষয়টি ছিল– একই ধরনের পুনরাবৃত্ত ব্যক্তিগত বার্তা। তবে ঋজু প্রতিটি সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, তাঁর বক্তব্য ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে এবং এই বার্তাগুলোকে তিনি অশালীন মনে করেন না। তিনি বলেন, কাউকে শাড়িতে সুন্দর লাগছে বলা তাঁর মতে কোনও ভুল নয়।
সমাজ মাধ্যমে এই বিষয়টি যত ছড়িয়েছে, ততই সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া দুই দিকেই ভাগ হয়ে গেছে। কেউ বিষয়টিকে রসিকতার জায়গায় নিয়ে গিয়েছে, আবার কেউ শালীনতা, সীমারেখা আর অনলাইন নিরাপত্তার প্রসঙ্গ তুলেছেন। অনেকে বলছেন, একই কথার পুনরাবৃত্তি অনেককে পাঠানো হলে সেটা আর ব্যক্তিগত সৌজন্য থাকে না, বরং আচরণের সমস্যা হিসেবে দেখা দিতে পারে। এর মধ্যেই উঠে এসেছে মানসিক স্বাস্থ্যের প্রসঙ্গ। যা নিয়ে আলোচনা শুরু হলেও, তা যে অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি বিষয়, তাই সচেতনতাও বাড়ছে।
এই বিতর্কের মাঝেই অভিনেত্রী মানসী সেনগুপ্ত প্রকাশ্যে মত জানিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। তিনি বলেন, “অবশ্যই ঋজু মানসিক ভাবে সুস্থ নয়। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বলছে ভুল করেনি, অশালীন মন্তব্য করেনি। কিন্তু আমার মতে যেটা করেছে, সেটাই অত্যন্ত ভুল এবং অন্যায়। আমিও একই বার্তা ওর থেকে বছর সাতেক আগে পেয়েছিল, তাও বলতে পারি যে একই পেশায় যুক্ত বলে বলেছে। কিন্তু বোন তো এই পেশার নয়, ওকেও কেন এমন বার্তা দেওয়া হলো? শুধু তাই নয়, বরং ম্যাসেজে রিপ্লাই দেওয়া হয়নি বলে বারবার ম্যাসেজ করে উত্তপ্ত করেছে ঋজু।
আমার সত্যিই মনে হয়, ও মানসিকভাবে অসুস্থ। পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মতো সকালে উঠেই মনে হয় ভেবে নিত যে, আজকে এতজনকে একই ম্যাসেজ পাঠাব। অবসাদ যে কোনও মানুষের জীবনেই আসতে পারে, কিন্তু তার জন্য আমি যা ইচ্ছা করতে পারি না! আমায় জানতে হবে, কোথায় গিয়ে থামতে হবে আর দাঁড়িটা টানতে হবে।” তাঁর মতে, অভিযোগগুলি হালকা করে দেখার মতো নয়। আবার মানসিক স্বাস্থ্যকে উপহাসের জায়গায় নিয়ে যায় এমন প্রতিক্রিয়াও কাম্য নয়। নিজের বক্তব্যের শেষে তিনি আরও বলেন, “ঋজু মানসিক ভাবে সুস্থ নয়।
আরও পড়ুনঃ ‘মেয়েদের পরিবার অনেক উদার… বিবাহবিচ্ছিন্ন সন্তান সহ পুরুষকে মেনে নেয়, কিন্তু নারীকে পক্ষপাতের শিকার হতে হয়!’, অকপট অভিনেত্রী অনুরাধা মুখোপাধ্যায়! বাস্তবে কি তিনি কারও দ্বিতীয় স্ত্রী হতে চাইবেন?
কিন্তু ও যেটা করেছে সেটাও একদমই মেনে নেওয়া যায় না। তবে, সাধারণ মানুষের হাতে সমাজ মাধ্যমের সুবিধা আছে বলেই লেবুটা এমন কচলাবেন না যে তেতো হয়ে যায়। মানে, ঋজুর মানসিক অবস্থাকে যেন আরও খারাপ না করে দেই আমরা নিয়মিত ট্রোল করে।” তাঁর এই মন্তব্যে যেন পুরো পরিস্থিতির দুই দিকই উঠে এসেছে। একদিকে অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের নিন্দা, অন্যদিকে জনসমক্ষে কাউকে অতিরিক্ত বিদ্রূপ বা হেনস্তা না করার মানবিক আহ্বান। আপনারাও কি অভিনেত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে সহমত?






‘পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা চালিয়েই যাচ্ছিল, অবসাদ থাকলেই যা খুশি করা যায় না!’ ‘মান’সিকভাবে অ’সুস্থ হলেও সীমা মানতে হয়, লেবুটা এমন কচলাবেন না যাতে তেতো হয়ে যায়!’– ঋজুকে নিয়ে মানসীর স্মৃতিচারণে সামনে এলো নতুন বিতর্ক, বিভিন্ন ম্যাসেজ করে উত্তপ্ত করেছেন অভিনেত্রীর বোনকে!