মাত্র ২৫ এই চলে গেছেন তিনি! তিন বছর পরেও তাঁর না থাকার গভীর শূন্যতা সবদিকে! কেমন আছেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার বাবা-মা?

শীতের হাতছানি এখনও পুরো জমেনি। রোদের উষ্ণতা আছে বটে, তবে মনকে ছুঁয়ে দেওয়ার মতো নয়। এরই ভেতরে ক্যালেন্ডার আবার স্মরণ করাল আজ ২০ নভেম্বর। আর এই তারিখ উঠলেই ফিরে আসে বেদনার স্মৃতি। তিন বছর আগে এই দিনেই চলে গিয়েছিলেন ঐন্দ্রিলা শর্মা। বয়স, স্বপ্ন, হাসি সবই তখনো সামনে অপেক্ষা করছিল।

ফোনে কথা বলতেই পাওয়া গেল তাঁর মা শিখা শর্মাকে। কণ্ঠে যেন ক্লান্ত অথচ শক্ত এক সুর। প্রথমেই বললেন, শরীর এখন একটু স্থির, তবে চিকিৎসার পথ এখনো শেষ হয়নি। কয়েকদিন আগে মুম্বই থেকে ফিরে এসেছেন। তিন মাস পর আবার যেতে হবে। মেয়ের মৃত্যু, দীর্ঘ লড়াই আর চিকিৎসা সবকিছুই যেন জীবনের অংশ হয়ে গেছে তাঁর কাছে।

ঐন্দ্রিলা ছিলেন প্রাণবন্ত স্বভাবের মেয়ে। সাজগোজ, নাচ গান এবং অভিনয়ের স্বপ্ন ছিল চোখে। বড় বোন ঐশ্বর্যা অবশ্য পুরো ভিন্ন চরিত্রের। চিকিৎসাশাস্ত্রের ছাত্রী, শান্ত স্বভাব, মনোযোগী। কিন্তু বোনের চলে যাওয়া যেন তার জীবনকেও বদলে দিয়েছে। এখন ঐশ্বর্যাই বয়ে নিয়ে চলেছেন ঐন্দ্রিলার অসম্পূর্ণ স্বপ্ন। অভিনয় করছেন এবং খুলেছেন প্রযোজনা সংস্থাও। মা বললেন, মেয়ের এই উদ্যোগই যেন তাদের বেঁচে থাকার আরেকটা কারণ।

বর্তমানে কলকাতায় আসা কমিয়ে দিয়েছেন পরিবার। বহরমপুরেই সময় কাটে বেশি। শহর, স্টুডিও, আলো ক্যামেরা সবই এখনো মনে করিয়ে দেয় হারানোর ব্যথা। তাই দূরে থাকাই সহজ। তবে স্মৃতি কি দূরে রাখা যায়? বিশেষ দিন বা এই তারিখ ফিরে এলেই যেন আবার বুকের ভিতর জমে ওঠে অসহ্য শূন্যতা।

ঐন্দ্রিলা আর তাঁর প্রেমিক সব্যসাচীর সম্পর্ক ছিল নিঃশব্দ অথচ গভীর। ২০২৩ এ বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। সেই স্বপ্নও অপূর্ণ রয়ে গেল। শোকের বাজারে যাঁরা তুচ্ছ শব্দ দিয়ে দৌড়ঝাঁপ করেন, তাদের থেকে সব্যসাচী আজও দূরে। সামাজিক মাধ্যম থেকেও নিজেকে সরিয়ে রেখেছেন। শুধু এতটুকু জানিয়েছেন, পরিবারের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ আজও রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ “দেব ভালো মানুষ… কিন্তু বাবার মতো সব গুণ নেই”— নিজের সম্পর্ক নিয়ে অকপট রুক্মিণী মৈত্র! বাবার কোন আদর্শ গুণগুলো দেবের মধ্যে খুঁজে না পাওয়ার কথা জানালেন অভিনেত্রী?

সময় চলে যায়। মানুষ মানিয়ে নেয়। কিন্তু কিছু শোক চিরদিনের সঙ্গী হয়ে থাকে। ঠিক তেমনই ঐন্দ্রিলার স্বপ্ন এখনও জীবিত, তার পরিবারে, তার অসমাপ্ত পথে এবং সেই অদৃশ্য আলোয় যা এখনো বলে যায় একটাই কথা মানুষ শেষ হয়ে যায়, কিন্তু স্বপ্ন থেকে যায়।