শিল্পে সমর্পিত প্রাণ, কখনও ভাবেননি অর্থের কচকচানি নিয়ে! ব্যাংকে পড়ে মাত্র এক থেকে দেড় হাজার টাকা! কীভাবে এমন অবস্থা তৈরি হলো জনপ্রিয় গায়িকা শ্রাবণী সেনের জীবনে?

রবীন্দ্রসঙ্গীতের জগতে জনপ্রিয়তার শিখরে থাকা শিল্পীরা যেমন তাঁদের গানে মুগ্ধতা ছড়ান, তেমনই তাদের ব্যক্তিগত জীবনে অনেক অজানা গল্প থাকে, যা সাধারণ মানুষকে অবাক করে দেয়। ঠিক তেমনই এক অভিজ্ঞতার কথাই জানালেন শ্রাবণী সেন। তিনি জানালেন তাঁর জীবনে এমন এক পর্ব ছিল, যখন অর্থনৈতিক পরিকল্পনা বলতে কিছুই ছিল না।

বাংলার সংগীতজগতে শ্রাবণী সেন এমন এক নাম, যাঁর কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথের গান নতুন রূপ পায়। মা সুমিত্রা সেনের কাছ থেকে সংগীতের প্রথম পাঠ— ছোটবেলা থেকে গানের প্রতি আগ্রহ না থাকলেও শ্রাবণীর জীবন যেন জন্ম থেকেই সুরে বাঁধা। প্রায় চার দশক ধরে তিনি সঙ্গীতকে নিজের জীবনধারা হিসেবে মেনে নিয়েছেন।

রবীন্দ্রসঙ্গীতের পাশাপাশি বাংলা আধুনিক গানেও সমান দাপট দেখিয়েছেন তিনি। ‘অমল ধবল পালে’ গানের জন্য ২০০১ সালে BFJA-এর ‘সেরা মহিলা প্লেব্যাক গায়িকা’র সম্মান পান শ্রাবণী। ‘দেখা’, ‘রাজকাহিনী’, ‘আবর ব্যোমকেশ’-এর মতো জনপ্রিয় ছবিতে তাঁর কণ্ঠ আজও শ্রোতাদের হৃদয়ে গেঁথে আছে। মায়াময় সুর, নিখুঁত উচ্চারণ আর স্বাচ্ছন্দ্য ভরা গায়কী—সব মিলিয়ে শ্রাবণী সেন হয়ে উঠেছেন বাংলার অন্যতম প্রিয় শিল্পী।

কিন্তু এত বড় শিল্পী হওয়া সত্ত্বেও অর্থনৈতিক পরিকল্পনার ব্যাপারে তিনি ছিলেন একেবারেই উদাসীন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে শ্রাবণী জানালেন, তিনি কোনওদিনই সেইভাবে টাকা জমাতে পারেননি। তাঁর কথায়, “যা টাকা পেতাম, খেয়েই উড়িয়ে দিতাম।” এমনকি একবার তাঁর জামাইবাবু তাঁকে প্রশ্ন করেন—ব্যাংকে কত টাকা আছে? জবাবে তিনি বলেন, “হাজার, দেড় হাজার টাকা হবে।”

আরও পড়ুনঃ ‘ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকেই আমার সাফল্যে হিংসা করে…এরাই সমাজ মাধ্যমে আমাকে নিয়ে কাটাছেঁড়া করে!’ লেডি সুপারস্টার শুভশ্রী সরাসরি জানালেন, কারা সত্যিকারের সাফল্য বিরোধী! কার দিকে ইঙ্গিত করলেন তিনি?

এরপরই জামাইবাবু তাঁকে নির্দিষ্ট সময়সীমা দিয়ে টাকা গোছানোর পরামর্শ দেন। সেই ঘটনার পর থেকে ধীরে ধীরে তিনি শৃঙ্খলা আনতে শেখেন নিজের জীবনে। শ্রাবণীর এই স্বীকারোক্তি যেমন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড় করায়, তেমনই মনে করিয়ে দেয়—শিল্পীরা রংতুলির বাইরে একেবারে সাধারণ মানুষই।