“এই বয়সে সবাই ভাবে মা-বাবা কিছু বোঝে না…ছেলের পৃথিবী বদলালে আমরাও তৈরি!” “বাবা হলেও বন্ধুর মতো পাশে থাকি, নিয়ম চাপিয়ে দিই না বরং বোঝাতে ভালোবাসি!” ছেলে উপমন্যুর সঙ্গে সম্পর্কের সমীকরণ নিয়ে অকপট ঋত্বিক চক্রবর্তী!

টলিউডের বর্তমান প্রজন্মের অভিনয়শৈলী বদলে দেওয়া নামগুলোর মধ্যে অভিনেতা ‘ঋত্বিক চক্রবর্তী’ (Ritwick Chakraborty) নিঃসন্দেহে অন্যতম। তথাকথিত ‘হিরো’র ধারণাটা ভেঙে বাস্তবঘেঁষা অভিনেতাদের গুরুত্ব যে বেড়েছে, সেই পথচলার মুখ্য কারিগরদের মধ্যে তাঁর নাম থাকবেই। পর্দায় যেভাবে চরিত্রকে নিজের মতো গড়ে তোলেন, ব্যক্তিগত জীবনেও ঠিক ততটাই সংযত এবং শান্তিপ্রেমী মানুষ তিনি। দীর্ঘদিনের সঙ্গিনী অপরাজিতা ঘোষ দাসের সঙ্গে তাঁর সংসারও সব সময় থাকে আলোচনার বাইরে।

এখন তাঁদের ছেলে ‘উপমন্যু’ কিশোর বয়সে পা দিয়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, অভিনেতা বাবার নতুন ছবি ‘রান্না বাটি’তে যেমন বাবা-মেয়ের মধ্যে মানসিক দূরত্ব দেখা যায় একটা বয়সের পর, বাস্তবে কি তিনিও সেই একই সঙ্কটের মুখোমুখি হচ্ছেন তিনি? ছেলের সঙ্গে বাস্তবে সম্পর্কটাই বা কেমন তাঁর? ঋত্বিকের উত্তর থেকে স্পষ্ট যে, তিনি এই পরিবর্তনের পথটাকে ভয় পাচ্ছেন না। বরং বেশ স্বচ্ছন্দভাবেই স্বীকার করেন যে, বয়স বাড়লে সন্তানরা বাবা-মাকে পিছিয়ে পড়া মনে করে, এটা খুবই স্বাভাবিক।

তাঁর ছেলের ক্ষেত্রেও একদিন সেই সময়টা আসবে এবং বাবা হিসেবে তিনি সেই পরিবর্তনকে জায়গা দিয়েই এগোতে চান। অভিনেতা জানিয়েছেন, উপমন্যু যদিও এখনো বেশ শান্ত আর কথামতো চলা ছেলে, তবুও তিনি জানেন কৈশোরের একটা সময়ে সন্তান নিজস্ব পৃথিবী তৈরি করেই ফেলে। সেখানে বাবা-মাকে অনাকাঙ্খিত ‘নিয়মের খাতা’ মনে হওয়াও অসম্ভব নয়। তাই তিনি শুরুতেই বন্ধুত্বের জায়গাটা বেশি শক্ত রাখতে চাইছেন, যাতে কোনও দূরত্ব তৈরি হলেও আলোচনার পথটা বন্ধ হয়ে না যায়।

নিজের ছোটবেলার অভিজ্ঞতার কথাও তুলে ধরেন ঋত্বিক, যেখানে শাসনের চেয়ে বোঝাপড়াটাই বেশি ছিল। তাঁর মতে, অভিভাবকের ভূমিকা হওয়া উচিত পথ দেখানো উল্টে চাপিয়ে দেওয়া নয়। তাঁর বাবা-মা কখনওই তাঁকে জোর করেননি চাকরি করে যেতে, বরং অভিনয়ে আসার ঝুঁকি নেওয়ার সিদ্ধান্তটুকুও তাঁর উপরই ছেড়ে দিয়েছিলেন। সেই কারণেই আজ তিনি নিজের ছেলের ক্ষেত্রে একই স্বাধীনতা বজায় রাখতে চান। সন্তানের সিদ্ধান্তে দিশা দেওয়া যায় কিন্তু সেটাকে ‘বাধ্যবাধকতা’র মতো করে চাপিয়ে দিলে সম্পর্ক নষ্ট হয়, এই বিশ্বাসেই তিনি বড় হয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ ‘সর্বস্য উজাড় করেও নতুনের এটাই প্রাপ্য ছিলো, কুকুর পুষলে কাজে দিত!’ ‘কমলীনি কমলীনি করে প্রতিদানে এবার জেলও খাটবে, বে’ইমা’ন মহিলা একটা!’ ‘চিরসখা’য় লক্ষ্মীমণির পর কমলীনি আর বাবিলও অবিশ্বাস করল নতুনকে, বর্ষাকে পরামর্শ দিল থানায় যেতে! ক্ষোভে ফুঁসছেন দর্শকরা

পর্দার গম্ভীর থেকে গভীর চরিত্রগুলোর পিছনে যে মানুষটা রয়েছেন, বাস্তবে তিনি খুব সরল এবং মন খুলে কথা বলতে জানেন। বাবা হিসাবেও তিনি বেশ আধুনিক মনোভাবের। সন্তানকে ধরে রাখার চেষ্টা নয়, বরং বড় হওয়ার পথে পাশে থাকার ইচ্ছেই তাঁর কাছে বেশি মূল্যবান। পরিবার, কাজ আর ব্যক্তিগত মতাদর্শের ক্ষেত্রেই ঋত্বিকের এই স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি তাঁকে শুধু সফল অভিনেতাই নয়, একজন পরিণত অভিভাবক হিসেবেও আলাদা করে তুলেছে।