স্টার জলসার ‘চিরসখা’ (Chiroshokha) ধারাবাহিকে নতুনের জীবনের দীর্ঘ ত্যাগ এবং অপরিসীম যত্নের বিপরীতে আজ তার চারপাশে ঘূর্ণায়মান অবিশ্বাসের ছায়া যেন আরও গভীর হয়েছে। বর্ষার অভিযোগ এবং তার নাটকীয়তা যে কোনও সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন জাগাতে পারে যে নতুন কি সত্যিই অপরাধী, নাকি এটা শুধু ভুল বোঝাবুঝি? কিন্তু এই ভুল বোঝাবুঝির চেয়ে বড় ব্যথা হলো, যাদের জীবন তিনি রক্ষা করেছেন নিজের সর্বস্ব দিয়ে। যাদের জন্য নিজের স্বার্থ ভুলেছেন, সেই মানুষগুলোই তাকে অবিশ্বাসের চোখে দেখছে!
লক্ষ্মীমণি, যিনি বহু বছর নতুনকে সংহতির প্রতীক মনে করেছিলেন, আজ মুহূর্তের আবেগে তার প্রতি এই ধরণের সন্দেহ প্রকাশ করেছেন! এটি শুধু অবিবেচনার পরিচয় নয় বরং ত্যাগের প্রতি অসম্মানও বটে এবং এই অবিশ্বাস শুধু লক্ষ্মীমণি পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকেনি। কমলিনীও, যে কিনা নিজের জীবনের একটা বড় অংশ নতুনের সঙ্গে অতিবাহিত করেছেন এবং নিজের ‘চিরসখা’ মনে করেছেন, এখন তার চোখে নতুনের প্রতি সন্দেহের আভাস স্পষ্ট! এদিকে যাকে এতদিন বাবার আসনে বসিয়েছে, সেই পিতৃসম নতুনের প্রতি আজ কমলিনীর ছোট ছেলে বাবিলও অনাস্থা দেখাচ্ছে!
প্রকাশ্যে কোনও দ্বিধা ছাড়াই বলছে, বর্ষার সঙ্গে যা হয়েছে সেটা দুঃখজনক ঘটনা! কমলিনীর বড় ছেলে বুবলাই তার স্ত্রী বর্ষাকে সঙ্গে নিয়ে থানায় যাওয়ার হুমকিটা খুবই স্বাভাবিক ছিল, তবে কমলিনীর মুখ থেকে থানায় যাওয়ার পরামর্শটা নিছক আইনগত পদক্ষেপ নয় বরং সম্পর্কের ভিতর থাকা বিশ্বাস ভাঙার ইঙ্গিত। এই দৃশ্য দেখে দর্শকরা বলছেন, “নতুনের এটাই প্রাপ্য ছিলো। এই মানুষ গুলোর জন্য নতুন যে ভাবে সারা জীবন সর্বস্য উজাড় করে দিলো তার প্রতিদান হিসাবে এটাই পাওনা ছিলো। আর এটাই ব্যাস্তব সত্য। কারণ মানুষ বেইমান প্রাণী।
এর থেকে যদি কতগুলো কুকুর কে দুবেলা দুমুঠো খেতে দিতো বরং ওরা ভালোবাসা দ্বিগুন ভাবে ফিরিয়ে দিতো তাদের শেষ নিঃস্বাস পর্যন্ত। কারণ মনুষত্ব এখন মানুষের মধ্যে নয় কুকুরদের মধ্যে বাস করে!” নতুন যে দীর্ঘকাল ধরে সকলের জন্য নিজের ইচ্ছেকে বিসর্জন দিয়েছে, তার প্রতিদান হিসেবে তিনি যে অবিশ্বাস পাচ্ছেন সেটি সত্যিই মানসিক কষ্টের। মানুষ যে কতটা স্বার্থপর এবং ক্ষণস্থায়ী হতে পারে, তার এক বাস্তব উদাহরণ এখানে স্পষ্ট। কমলিনীর পাশে থাকা এবং সহায়তা করা, নতুনের জন্য বন্ধুর প্রতি মানবিক কর্তব্য ছিল।
আরও পড়ুনঃ শিল্পে সমর্পিত প্রাণ, কখনও ভাবেননি অর্থের কচকচানি নিয়ে! ব্যাংকে পড়ে মাত্র এক থেকে দেড় হাজার টাকা! কীভাবে এমন অবস্থা তৈরি হলো জনপ্রিয় গায়িকা শ্রাবণী সেনের জীবনে?
কিন্তু আজ সেই কর্তব্যই যেন তার উপর অভিযোগে পরিণত হয়েছে। এই পরিস্থিতি প্রমাণ করেছে, একটা সময় মানুষের হৃদয়ে সত্যিকারের মানবিকতা হারিয়ে যায় আর প্রেম এবং আনুগত্যের মূল্য কেবল স্বার্থপর চোখে দেখা হয়! এই মুহূর্তে ধারাবাহিকের দর্শকরা একরকম বাস্তবতার মুখোমুখি হচ্ছেন। তাই তারা প্রশ্ন তুলতে বাধ্য হচ্ছেন, “গাই বাছুর সমেত বিয়ে করতে নেই, এটা জেনেও নতুন কেন এটা করল? এতকিছু করে নতুন কমলিনীকে বিয়েটা করে কি পেল? কমলীনি কমলীনি করে প্রতিদানে এবার কি জেলও খাটবে?” এই বিয়ে এবং সম্পর্কের মধ্যে যতটা ভ্রান্ত ধারণা ও স্বার্থপরতা কাজ করেছে, তা তার জীবনের প্রতি দর্শকের সহমর্মিতাকে আরও জাগিয়ে তুলেছে।






