বাংলা সিনেমার অন্যতম প্রভাবশালী পরিবারে জন্ম ‘তৃষাণজিৎ চট্টোপাধ্যায়’ (Trishanjit Chatterjee), যাকে বাড়ির সকলেই আদর করে ডাকেন ‘মিশুক’। ঠাকুরদা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় থেকে বাবা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee) , তাঁদের সাফল্যের ইতিহাস টলিউডে কিংবদন্তি হয়ে আছে বহুদিন। মা অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়ও নিজের প্রতিভায় অনুরাগীদের মন জিতেছেন। তাই অনেকেরই মনে প্রশ্ন ছিল, পরিবারের এই উত্তরসূরি কোন পথে হাঁটবেন? তবে সময়ের সঙ্গে আরও জোরালো হচ্ছিল জল্পনা যে, মিশুক কি অভিনয়ে আসতে চলেছেন? অবশেষে সেই আভাস মিলেছে।
ইতিমধ্যেই টলিউডের অন্দরে খবর, এসভিএফ-এর হাত ধরেই বড়পর্দায় প্রথমবার দেখা যাবে তৃষাণজিৎকে। যদিও বহুদিন ধরেই তাঁর পর্দায় আত্মপ্রকাশ নিয়ে গুঞ্জন ছিল, কিন্তু কোনওটাতেই কখনও আনুষ্ঠানিক স্বীকারোক্তি মেলেনি। চলতি বছরের দুর্গাপুজোর আগে ‘দেবী চৌধুরাণী’র প্রচারে প্রসেনজিৎকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কিছুটা ইঙ্গিত দিলেও, প্রযোজনা সংস্থার নাম প্রকাশ করেননি। তা সত্ত্বেও টলিউড মহলে নিশ্চিতভাবেই ধরে নেওয়া হচ্ছে যে, সব কিছু ঠিক থাকলে নতুন বছরই ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে চলেছেন মিশুক।
প্রসঙ্গত, বাণিজ্যিক ছবির ক্ষেত্রে টলিউডের বর্তমান পরিস্থিতি অনেকটাই খারাপ অন্তত তেমনটাই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সেই কারণে অনেক জনপ্রিয় শিল্পীরা এখন ব্যতিক্রমী ধারার ছবির দিকে খুঁজে পড়েছেন। ওয়েব সিরিজ বা ওটিটি চলে আসায়, হলে গিয়ে ছবি দেখার প্রবণতাও কমেছে অনেকটাই। এমন পরিস্থিতিতে যত বড়ই তারকা হোক না কেন, ছবি তেমন আশানুরূপ ফল করতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে বাবা হয়ে প্রসেনজিৎ কী মনে করেন যে ছেলে তৃষাণজিৎ টিকে থাকতে পারবে?
উত্তরে শুধু বাবা নয়, অভিনেতা বা ইন্ডাস্ট্রির জ্যেষ্ঠপুত্র হয়েই উত্তর দিলেন প্রসেনজিৎ। তাঁর কথায়, “ছেলে এখানে থাকুক বা বোম্বেতে, এই লড়াইটা ওর নিজের। সম্পূর্ণ একা লড়তে হবে ওকে জায়গা ধরে রাখতে। আমি যেখানে এখনও নিজের ছবির প্রচারের জন্য দিনরাত লাগিয়ে দিচ্ছি, ওর হয়ে কিচ্ছু করতে পারব না। আমিই এখনও নিউ কামার, কাজেই ওর প্রতিযোগিতা আমার সঙ্গেও থাকবে। তবে একটা কথা বা উপদেশ দিতে চাই, ওদের মতো সকলকেই যে সাকসেস থেকে যতটা দূরে থাকা যায় ভালো।
আরও পড়ুনঃ “সতেরো বছর দামী জামা দেয়নি, ফ্লাইটে বিজনেস ক্লাসে বাবা গেলে আমি ইকোনমিতে…যোগ্য হলে তবেই আসন পাবে” খ্যাতির ছায়ায় দাঁড়াতে দিতেন না বাবা, প্রয়াত শিল্পী উস্তাদ রাশিদ খানের কঠোর দর্শনেই বড় হয়েছেন পুত্র আরমান খান! কেমন ছিল তাঁর বাবার শিক্ষা?
কারণ আমি এমন অনেককেই দেখেছি যে রাতারাতি জনপ্রিয়তার চূড়ায় পৌঁছে গেছে, কিন্তু আলোর ঝলকানিতে আবার হারিয়েও গেছে। তাই বলব যে, একটা কিছু সফল হলেই সেই সাকসেসটা থেকে যতটা দূরে থাকা যায় ততটাই শিল্পীর জন্য ভালো। বরং ব্যর্থতা এলে সেটাকে আঁকড়ে ধরেই অনেকটা সময় থাকা উচিত, এতে ভবিষ্যতে সাকসেসটাও বেশি আসে।” তবে শুধু মিশুক নন, সম্ভাবী চট্টোপাধ্যায় অভিনয়ে নামছেন। দুই প্রজন্মের নতুন শিল্পীর আগমন নিঃসন্দেহে চট্টোপাধ্যায় পরিবারের উত্তরাধিকারকে আরও সমৃদ্ধ করবে। কিন্তু আলোচনার কেন্দ্রে এখন একটাই নাম, তৃষাণজিৎ। যার প্রথম পদক্ষেপ দেখার অপেক্ষায় রয়েছে গোটা টলিউড।






