“আগে নিজে সিনেমা করে দেখা, তারপর বড় বড় কথা বলবি”— এই অপমানেই জীবনের দিক বদলে গিয়েছিল অর্জুন চক্রবর্তীর? ঘর ছাড়া হয়েই কিভাবে গুলজারে’র সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ হয় অভিনেতার?

নব্বইয়ের দশকের বাংলা ছবির দর্শকদের কাছে অর্জুন চক্রবর্তী এক পরিচিত নাম। মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় থেকে মুনমুন সেন, দেবশ্রী রায় থেকে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত—একাধিক প্রজন্মের নায়িকার বিপরীতে অভিনয় করেছেন তিনি। তবু প্রসেনজিৎ, তাপস পাল, চিরঞ্জিতের দাপুটে নায়ক-যুগে অর্জুন কখনওই প্রথম সারির বক্স অফিস নায়ক হয়ে উঠতে পারেননি। টলিউড তাঁকে দেখেছে মূলত এক নির্ভরযোগ্য সহনায়ক অভিনেতা হিসেবেই।

ভদ্র, সংযত, বাস্তবধর্মী চরিত্রে তাঁর অভিনয় আলাদা করে নজর কেড়েছে বারবার। নায়কের দৌড়ে না থাকলেও সহনায়ক রূপে দর্শকের মন জয় করতে কোনওদিনই সমস্যা হয়নি তাঁর। পরবর্তী সময়ে চরিত্রাভিনেতা হিসেবে বড় পর্দা থেকে ছোট পর্দা—দু’জায়গাতেই কাজ করেছেন অর্জুন। অথচ বেশ কিছু বছর ধরে তাঁকে আর পর্দায় দেখা যাচ্ছে না।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজের কেরিয়ারের শুরুর দিকের এক অজানা গল্প শোনালেন বর্ষীয়ান অভিনেতা। তিনি জানান, অভিনয়ের আগে তাঁর জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় জড়িয়ে রয়েছে কবি-চিত্রনাট্যকার গুলজারের সঙ্গে। একদিন এক অচেনা মানুষের কটাক্ষ—‘আগে নিজে সিনেমা করে দেখ, তারপর বড় বড় কথা বলিস’—এই কথাই নাকি তাঁকে ঘর ছাড়া করেছিল। পরের দিনই মুম্বাইয়ের ট্রেনে উঠে পড়েন অর্জুন।

সেই ট্রেনযাত্রাতেই তাঁর হাতে আসে একটি ম্যাগাজিন। তাতেই গুলজারের প্রথম একটি সাক্ষাৎকার পড়ে মুগ্ধ হয়ে যান তিনি। সাক্ষাৎকারের নিচে দেওয়া ঠিকানাটিই যেন তাঁর ভরসা হয়ে ওঠে। মুম্বাই পৌঁছে একেবারে সকাল সকাল সেই ঠিকানায় হাজির হন। কলিং বেল বাজাতেই প্রথম দেখা গুলজারের সঙ্গে।

আরও পড়ুনঃ ‘আমারও বাক স্বাধীনতা আছে, যা মনে করি তা বলবই, অত্যাধিক আধুনিকতার নামে আমাকে থামাতে পারবে না, যদি বিয়ের আংটি পরতে পারি, তাহলে শাঁখা, পলা, সিঁদুরে আপত্তি কোথায়?’ ফের প্রশ্ন তুললেন মমতা শঙ্কর

গুলজার তখন জানিয়েছিলেন, তৎক্ষণাৎ দেওয়ার মতো কোনও কাজ নেই। কিন্তু অর্জুন স্পষ্ট করে বলেন, তিনি অভিনেতা হতে আসেননি, শুধুই সহকারী হিসেবে কাজ করতে চান। সেই আগ্রহ আর আত্মবিশ্বাসই গুলজারকে নরম করে। পরদিন দশ মিনিট সময় দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পান তিনি। সেখান থেকেই শুরু হয় অর্জুন চক্রবর্তীর এক অন্যরকম যাত্রা—যার ছাপ পরে পড়েছে তাঁর অভিনয় জীবনেও।