‘আমারও বাক স্বাধীনতা আছে, যা মনে করি তা বলবই, অত্যাধিক আধুনিকতার নামে আমাকে থামাতে পারবে না, যদি বিয়ের আংটি পরতে পারি, তাহলে শাঁখা, পলা, সিঁদুরে আপত্তি কোথায়?’ ফের প্রশ্ন তুললেন মমতা শঙ্কর

দীর্ঘদিন ধরে শুধুই নৃত্যশিল্পী বা অভিনেত্রী হিসেবেই নয়, ‘মমতা শঙ্কর’ (Mamata Shankar) একজন স্পষ্টমতবাদী ব্যক্তিত্ব হিসেবেও পরিচিত। সম্প্রতি নতুন ছবি ‘দেরি হয়ে গেছে’তে অভিনয় করলেন বেশ অনেকদিন পর, যেখানে হারানো সম্পর্কের পুনর্জাগরণের গল্প ফুটে উঠেছে। তাঁর চরিত্রে অঞ্জন দত্তের সঙ্গে যে সম্পর্ক দেখানো হয়েছে, তা কেবল কল্পনার নয় বরং বাস্তব জীবনের অনুভূতি থেকেও প্রভাবিত হয়েছে, এমনটাই তিনি জানিয়েছেন। মমতা বলেন, এমন অভিজ্ঞতা তাকে চরিত্রটিকে আরও গভীরভাবে উপস্থাপন করতে সাহায্য করেছে।

তবে শুধু অভিনয়ই নয়, মমতা শঙ্করের বক্তব্য ও মতামত অনেক সময় সামাজিক বিতর্কের জন্ম দেয়। তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতি সমাজের মধ্যে অসহনশীলতা বাড়াচ্ছে। অনেকেই তাঁকে সাবধান করেন, যাতে কোনও অতিরিক্ত মন্তব্য করলে সমালোচনা না হয়। কিন্তু মমতা বিশ্বাস করেন যে নিজের চিন্তা প্রকাশ না করলে নিজের প্রতি বিশ্বাসও হারানো যায়। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, তিনি অন্য কাউকে নিজের মতামত মানতে বাধ্য করছেন না। শুধু নিজের বিশ্বাস এবং মূল্যবোধের কথা বলছেন।

মমতা শঙ্করের অবস্থান সবসময়ই অনড়। তিনি জানেন, যে কোনও মতামত প্রকাশে মানুষ ক্ষুব্ধ বা কটাক্ষ করতে পারে, কিন্তু তাতেও তিনি হোঁচট খাচ্ছেন না। তিনি মনে করেন, সত্যিকারের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা মানে অন্যের মতও গ্রহণ করা শিখতে হবে। তাঁর নিজের ভাষায়, “আমি কিছু বললে বাক স্বাধীনতার প্রসঙ্গ টেনে আনছে সবাই। আমিও তো একটা মানুষ আর স্বাধীন দেশের নাগরিক, আমার কি বাক স্বাধীনতা নেই? আমি তো জোর করে কাউকে আমার মতো হতে বলছি না! যেটা কি ঠিক মনে করি সেটাই বলি।

আজকের যুগে শিক্ষকদের ভয়ে থাকতে হয়, ছাত্র-ছাত্রীদের শাসনও করতে পারেন না! মারা তো দূরের কথা, চোখ রাঙালেও মা-বাবাকে ডেকে আনে তাঁরা! সত্যি কথা বলতে, আমাদের সময় যেসব শিক্ষক শিক্ষিকারা প্রকৃত শাসন করে আমাদের মানুষ করেছেন, আজও তাদের কথা মনে পড়ে। তাদের সেই শাসনের মূল্যবোধ শিখতে পেরেছি আমরা। আর এখন যেটা সবথেকে বেশি দেখি, সন্তানদের ঝামেলায় মা-বাবারা এগিয়ে আসেন। এটা কেন হবে? দুই বন্ধুর মধ্যে ঝামেলা হয় আবার মিটেও যায়। সেখানে অভিভাবকরা হস্তক্ষেপ করবেন কেন?”

আরও পড়ুনঃ ‘এই তো বাংলায় বিরাট কর্মসংস্থান হচ্ছে!’ ‘কিছু ডিফেন্স আর্মি যদি চাকরি হারানো যোগ্য শিক্ষকদের জন্য দেখা যেত!’ সেলিব্রিটি ট্রোলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক রাণা সরকরের! ‘ট্রোলিং ডিফেন্স আর্মি’ গড়ার হুঁশিয়ারি দিতেই, সমাজ মাধ্যমে এক হাত নিলেন নেটিজেনরা!

তিনি এরই সঙ্গে যোগ করেন, “মানুষ অনেক বেশি উগ্র আর অহংকারী হয়ে উঠেছে। ‘ফলস্ ইগো’ বেশি দেখায় এখন! আমাদের সময় ভাগ করে নেওয়ার প্রবণতা ছিল, এখন সবাই একাই সেরা হতে চায়। সবাই নিজেকে আধুনিক দেখাতে চায়। আমি শাঁখা-পলা, সিঁদুর পরি বলে আমায় অনেকেই যুগের অনুপযোগী বলেন। তাতে আমার সমস্যা নেই, আমার এটা মূল্যবোধ আর নিজেকে এগুলো পড়ে সুন্দর লাগে বলেই পরি। বিয়ের আংটি যদি পড়তে পারি, তাহলে এগুলো কেন নয়?” আধুনিকতার নামে নিজেকে থামানো বা নিজের পাল্টানো তাঁর কাছে কখনোও বিকল্প নয়।