যাঁর লেখা গানে একই সুতোয় বাঁধা পড়েছে দুই বাংলা, সেই নোবেলজয়ী কবিগুরু ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর’ (Rabindranath Tagore) -এর স্মৃতি বিজড়িত পৈত্রিক ভিটেই (Ancestral Home) যেন আজ প্রশ্নের মুখে! বাংলাদেশের (Bangladesh) সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অবস্থিত কাছারিবাড়িতে সম্প্রতি ঘটে গেল চরম অরাজকতা। এক দল উন্মত্ত জনতা হঠাৎ করেই হামলা চালাল রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বিজড়িত এই ঐতিহাসিক স্থানে। ব্যাপক ভাঙচুর (Vandalism) চলল যাদুঘরের দরজা, জানালা থেকে শুরু করে অডিটোরিয়াম ও কাস্টোডিয়ানের অফিস পর্যন্ত।
ক্ষতিগ্রস্ত হল বহু মূল্যবান সামগ্রীও। উল্লেখ্য, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বহু স্মরণীয় কবিতা ও রচনার জন্ম দিয়েছেন এই কাছারিবাড়িতে বসেই। তাঁর পিতামহ দ্বারকানাথ ঠাকুর ১৯৪০ সালে এই জমিদারি কিনেছিলেন, যার ফলে এই বাড়িটি ঠাকুর পরিবারের অধিকারে আসে। পরবর্তীকালে এই ভবনকে সংরক্ষিত ঘোষণার পাশাপাশি যাদুঘরে রূপান্তর করা হয়। অথচ এমন এক জায়গার নিরাপত্তা নিয়েই যখন এত শিথিলতা, তখন কবিগুরুর প্রতি রাষ্ট্রীয় শ্রদ্ধা নিয়েই তৈরি হয়েছে তীব্র বিতর্ক।
প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও উঠছে একের পর এক প্রশ্ন। মূলত ঘটনার সূত্রপাত একটি সাধারণ পার্কিং ইস্যু থেকে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মিউজিয়ামের প্রবেশপথে বাইক পার্কিং নিয়ে এক পর্যটক ও কর্মীদের মধ্যে বচসা শুরু হয়। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে ওঠে যে পর্যটক পরিবারকে অফিসে আটকে রেখে শারীরিকভাবে নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই স্থানীয়দের মধ্যে তৈরি হয় প্রবল ক্ষোভ।
তার জেরে শুরু হয় বিক্ষোভ এবং শেষে এই ভয়াবহ হামলা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা এলাকায় ছড়িয়েছে তীব্র উত্তেজনা। কাছারিবাড়ির কাস্টডিয়ানের অফিসে চালানো হয়েছে ভাঙচুর। অডিটোরিয়ামের জানালা-দরজা ভেঙে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু নিদর্শন। মিউজিয়ামের ডিরেক্টরকে শারীরিকভাবে হেনস্থার অভিযোগও উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলছেন অনেকেই। প্রশ্ন উঠছে, এত গুরুত্বপূর্ণ একটি ঐতিহাসিক স্থানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা কেন ছিল না?
আরও পড়ুনঃ “দাউদের প্রস্তাবে না বলার সাহস ছিল, আজও আছে! আমি কিছু নিই না, তাই কেউ বিপাকে ফেলতে পারে না”— আত্মসম্মানে কখনও আপস করেননি তিনি! দাউদের দুবাইয়ের অফারকে না বলার সাহস দেখিয়েছিলেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়!
এই ঘটনার পর বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ তদন্ত কমিটি গঠন করতে বলেছে তিন সদস্য নিয়ে। তদন্তের রিপোর্ট ৫ দিনের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, আপাতত দর্শকদের ঢোকা নিষেধ রবীন্দ্রনাথের এই বাড়িটিতে। যদিও জনতার মনে রয়ে গিয়েছে একটাই প্রশ্ন, কেন আগেভাগেই নেওয়া হয়নি কোনও নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা, আর কেনই বা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম জড়ানো এমন এক ঐতিহ্যবাহী জায়গাকে হতে হল অরাজকতার শিকার?
Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।