প্রফেসারির স্বপ্ন বিসর্জন দিয়ে ‘শিক্ষিত বেকারের ক্যাফে’ বাংলার নেট, সেট পাস করা গোল্ড মেডেলিস্ট রাজুর!
আপনি যদি সত্যিকার অর্থে মন থেকে কোনও কিছু করতে চান তাহলে আপনার জীবনে হয়ত কোনও বাধাই আর আপনার সামনে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। সামাজিক মানসিক সমস্ত রকমের প্রতিবন্ধকতা, বাধাকে দূর করতে হলে মানসিক দৃঢ়তা এবং ইচ্ছাশক্তিকে অত্যন্ত শক্তিশালী করতে হবে। আর আজ আপনাদের কাছে তেমনই এক অসাধ্য সাধনের বাস্তব ঘটনা তুলে ধরব। যেখানে জেদ, ইচ্ছা শক্তির কাছে হার মেনেছে প্রতিকূলতা।
সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন সময় আমরা এই জেদ, ইচ্ছাশক্তিকে বলীয়ান মানুষদের জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়ার একাধিক ভিডিও দেখে থাকি। আর সেই সমস্ত ঘটনা কার্যত ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর তার মধ্যে কিছুকিছু ভিডিও সত্যিকারেই আমাদের ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করে, অবাক করে, বিস্মিত করে। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ফের সেরকমই একজন মানুষের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। আর যা মন জিতে নেওয়ার পাশাপাশি চোখের জলে ভাসতে বাধ্য করেছে দর্শকদের।
ঠাকুরনগরের রাজু মন্ডল। ছোট থেকেই অত্যন্ত মেধাবী। পড়াশোনা অন্ত প্রাণ। দুচোখ জোড়া স্বপ্ন একদিন অধ্যাপনা করবেন। মায়ের স্বপ্ন ছেলে অফিসে গিয়ে চাকরি করবে। আর এমন স্বপ্ন দেখবেন নাই বা কেন? ছেলে যে পড়াশোনায় খুব ভালো। পারিবারিক বাধা-বিপত্তি সব পার করে কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক, স্নাতকোত্তর, বিএড করেছেন রাজু মণ্ডল ৷ শুধু কি তাই? নেট, সেট পাশ করেছেন তিনি।
গোল্ড মেডেলিস্ট রাজু। পিএইচডির জন্য দু’-দুবার আবেদন করলেও মেলেনি সুযোগ। তবে থামেননি তিনি। জীবন যুদ্ধের এই লড়াইয়ে টিকে থাকতে অসংখ্য ছাত্র পড়ান তিনি। এমনকি লিখেছেন অনেকগুলি বই। কিন্তু এতকিছুর পরেও আক্ষেপ যদি মিলত একটা চাকরি। আর তাই ২৬ বছরের রাজু মন্ডল সিদ্ধান্ত নিলেন অন্য কিছু করবেন। অন্য কোনও উপায়ে নিজেকে দাঁড় করাবেন। ব্যবসা করবেন।
নিজের সেই স্বপ্নকে উড়াল দিলেন তিনি। গাইঘাটার চাঁদপাড়ায় খুলে ফেললেন ক্যাফে বা রেস্তোরাঁ ৷ নিজের ক্যাফের নাম দিয়েছেন ‘শিক্ষিত বেকারের ক্যাফে’ ৷ কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরে স্বর্ণপদক প্রাপ্ত রাজুর দোকানে এখন মিলছে চাওমিন, চিকেন পকোড়া থেকে শুরু করে বিরিয়ানি। ‘শিক্ষিত বেকারের ক্যাফে’ নামটিও সোশ্যাল মাধ্যমে দারুণ রকম ভাবে ভাইরাল হয়েছে। ইউটিউবার, ফুড ব্লগাররা ইতিউতি যাতায়াত শুরু করেছেন। পুরোটাই লোন নিয়ে চালাচ্ছেন। পাশে দাঁড়িয়েছেন মা। যদিও তার আক্ষেপ ছেলেটা যদি একটা চাকরি পেতো! কিন্তু বাংলায় কি আর সহজে চাকরি মেলে?