টেলিভিশনের পর্দায় তাঁকে আমরা বেশির ভাগ সময়েই খলনায়িকার চরিত্রে দেখি। ধারালো সংলাপ, তীক্ষ্ণ দৃষ্টি—এই চেহারাতেই চাঁদনি গোষ্ঠকে চিনে ফেলেন দর্শক। কিন্তু বর্তমানে ‘জোয়ার ভাঁটা’ ধারাবাহিকে তিনি একেবারে ভিন্ন ছন্দে। সেখানে তাঁর চরিত্র ইতিবাচক, নরম, সহানুভূতিশীল। পর্দায় এই নতুন রূপ দর্শকদের ভালোই লেগেছে। কিন্তু গত কয়েক দিনে চাঁদনিকে নিয়ে আলোচনা হয়েছে একেবারে অন্য কারণে—একটি ছবির জন্য।
সম্প্রতি, দুর্গাপুজোর সময় নিজের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে কয়েকটি ছবি পোস্ট করেন চাঁদনি। লাল শাড়িতে সেজে, সিঁথিতে হালকা সিঁদুর, হাতে শাঁখা-পলা—অভিনেত্রীর সাজে যেন একদম নববধূর ছোঁয়া। ছবির পেছনে দেখা যাচ্ছে মা দুর্গার প্রতিমা। মুখভর্তি সিঁদুরে উজ্জ্বল চাঁদনি যেন উৎসবের রঙে রঙিন। কিন্তু নেটিজেনদের একাংশের নজর গিয়ে ঠেকল সিঁথির লাল রেখায়। কারণ, প্রায় সকলেই জানেন, চাঁদনি এখনও অবিবাহিত। আর সেই কারণেই শুরু হল কটাক্ষ, কৌতূহল আর মন্তব্যের বন্যা।
প্রথমেই প্রতিক্রিয়া জানান অভিনেত্রী মিমি দত্ত, যিনি চাঁদনির ঘনিষ্ঠ বন্ধু। মজার ছলে তিনি মন্তব্য করেন, “কে পরালো সিঁথিতে সিঁদুর?” বন্ধুত্বের রসিকতা থেকেই লেখা হলেও এই মন্তব্যই যেন আগুনে ঘি ঢালে। চাঁদনির পোস্টের নিচে মুহূর্তে ভরে যায় নানা প্রশ্নে। কেউ লিখেছেন, “এত সুন্দর হয়েও মিথ্যে সাজ কেন?” আবার কেউ বলেছেন, “এই কারণেই সিঁদুরের গুরুত্ব দিনে দিনে কমে যাচ্ছে।” অনেকে এটাও অভিযোগ করেছেন, “শুধু স্টাইলের জন্য শাঁখা-পলা-সিঁদুর পরা ঠিক নয়। এসব পবিত্র জিনিস।”
তবে সবাই নেতিবাচক নন। অনেকে চাঁদনির পক্ষে দাঁড়িয়ে বলেছেন, উৎসবের আনন্দে সাজগোজের কোনও সীমা টানা ঠিক নয়। এক ইউজার লিখেছেন, “দুর্গাপুজো মানেই রঙ, আনন্দ, সিঁদুরখেলা। চাঁদনি নিজের মতো করে সাজতেই পারেন। এতে ধর্ম বা সংস্কৃতির অপমান নেই।” কেউ কেউ বলেছেন, “একজন অভিনেত্রী সাজলেন মানেই তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের সঙ্গে যুক্ত করে দেখা ঠিক নয়।”
এই বিতর্কের মাঝে চুপচাপ আছেন চাঁদনি নিজে। তিনি এখনও পর্যন্ত এই প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করেননি। হয়তো ইচ্ছাকৃতভাবেই মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তাঁর ভক্তরা মনে করছেন, চাঁদনি বুঝে গিয়েছেন, কখনও কখনও নীরবতাই সবচেয়ে জোরালো জবাব। সোশ্যাল মিডিয়ার এই ঝড়ের মধ্যেও তিনি নিজের মতো কাজ নিয়ে ব্যস্ত। আর তাঁর সাম্প্রতিক পোস্টগুলিতেই বোঝা যায়, সমালোচনায় দমে যাওয়ার মানুষ নন তিনি।
আরও পড়ুনঃ রহস্যের ওপর রহস্য! জুবিন গার্গের মৃ’ত্যু রহস্যে নতুন মোড়! নিরাপত্তা আধিকারিকদের অ্যাকাউন্টে এক কোটি টাকার লেনদেন! – চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে এলো এসআইটির
চাঁদনির এই ছোট্ট সিঁদুরের রেখা যে এত আলোড়ন তুলবে, তা হয়তো তিনিও ভাবেননি। কিন্তু এই ঘটনাই আবার মনে করিয়ে দিল, পর্দার তারকারা যখন নিজেদের মতো বাঁচতে চান, তখনও সমাজের চোখে তাঁদের প্রতিটি পছন্দ যেন একেকটা প্রশ্নচিহ্ন। আর সেই প্রশ্নের জবাব দেওয়া না দেওয়াটাই হয়তো আজকের চাঁদনির মতো নারীদের আসল শক্তি।