Kacha Badam Kaku: “আমাকে বাঁচান”! ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফাঁকা, নেই ভাত-ডাল খাওয়ার টাকাও! কাতর আর্জি ভাইরাল কাঁচা বাদাম কাকুর

২০২১ সালের শেষ থেকে গত বছর পর্যন্ত বাংলা জুড়ে ঝড় তুলেছিল একটি গান। ‘কাঁচা বাদাম।’ সোশ্যাল মিডিয়া খুললেই কান-চোখ ঝালাপালা হওয়ার জোগাড়। রীতিমতো সবার প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছিল এই গান শুনে শুনে। বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কুড়ালজুড়ি গ্রামের বাদাম বিক্রেতা ভুবন বাদ্যকরকের স্বরচিত এই গান এমন আলোড়ন ফেলেছিল যা আগে কখন‌ও কেউ দেখেনি।

রাতারাতি বিরাট সাফল্যের মুখ দেখেছিলেন কাঁচা বাদাম গানের এই স্রষ্টা। বলা ভালো কার্যত সেলিব্রিটিতে পরিণত হয়েছিলেন তিনি। সামান্য এক বাদাম বিক্রেতা থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে তিনি হয়ে ওঠেন ভাইরাল সেলিব্রিটি। বাঁকুড়া, বর্ধমান, কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক স্টুডিওতে গান রেকর্ডিং করেছেন। ডাক পেয়েছেন বহু মঞ্চ থেকে। ‌এই ব্যক্তি একইসঙ্গে পেয়েছেন প্রচুর সম্মাননা। এমনকী মুখ দেখিয়ে ফেলেন বাংলার একাধিক জনপ্রিয় টিভি চ্যানেলের রিয়েলিটি শো’তে। বড় বড় তারকাদের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে ভুবন বাদ্যকারের ছবি তখন প্রকাশ্যে আসতো।

দিন আনা দিন খাওয়া মানুষটার ইন্টিরিয়ার করা বাড়ি, দামী গাড়ি, হাতে অ্যাপেলের ফোন দেখে চোখ টাটিয়ে ছিল অনেকের‌ই। ‌এক ঝটকায় জীবনটাই যেন বদলে গিয়েছিল তাঁর। অনেকেই সেই সময় তাঁর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন যেখানে যোগ্য সঙ্গীতশিল্পীরা একটু পরিচিতি পাওয়ার জন্য নিত্যদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এখানে এই ধরনের গান গেয়ে এতটা জনপ্রিয়তা বোধ হয় প্রাপ্য নয় ভুবন বাদ্যকারের।

তবে এখন যেন সেটাই হয়েছে। মহাবিপদে পড়েছেন এই ভাইরাল তারকা। আসলে এক ব্যবসায়ী দারুন ভাবে ঠকিয়ে নিয়েছেন তাঁকে। এই বিষয়ে ভুবন বাদ্যকার জানিয়েছেন, তাঁর জনপ্রিয় গান ‘কাঁচা বাদাম’এর কপিরাইট নিয়ে নিয়েছেন একজন ব্যক্তি। তিনি আর মন্ত্রী হলেন বীরভূমের ‘গোধূলিবেলা মিউজিকের’ কর্ণধার গোপাল ঘোষ। উল্লেখ্য ভুবন বাদ্যকার জনপ্রিয়তা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এই সংস্থাটি ভুবন বাদ্যকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁর পরিচিতি আর‌ও বাড়িয়ে দেয়।

Kacha Badam singer Bhuban Badyakar hospitalised after car accident -  Hindustan Times

সম্প্রতি কাঁচা বাদাম কাকু অভিযোগ করে জানিয়েছেন, তিনি পড়াশোনা জানেন না। আর তাই তাঁকে সহজ সরল পেয়ে ঠকিয়ে তাঁর গানের কপিরাইট নিয়ে নিয়েছেন ওই সংস্থা ও তাঁর মালিক। এখন ফোন করলে তাঁদের কেউই আর ফোন ধরেননা বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। একই সঙ্গে ওই সংস্থাটি ভুবন বাবুকে আশ্বাস দিয়েছিল প্রত্যেক মাসে কাঁচা বাদাম গানের জন্য তাঁর অ্যাকাউন্টে বেশ ভালো রকমের টাকা ঢুকবে। কিন্তু সম্প্রতি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট চেক করে ভুবন বাবু দেখেছেন একবারই মাত্র ৩৯ হাজার টাকা ঢুকেছে কিন্তু তারপর আর কোন‌ও টাকা পাননি তিনি। বর্তমানে তাঁর হাতে কোন‌ও টাকা নেই। প্রতারিত হয়েছেন তিনি বলে অভিযোগ।

কাঁচা বাদাম কাকুর কথায়, ‘কপি রাইট চুক্তির সময় আমাকে বলা হয় মাসে মাসে টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু একবারই সেই টাকা পেয়েছি।’ আর এখন‌ কপিরাইট ইস্যুর চক্করে ‘বাদাম’ শব্দটাই উচ্চারণ করা বন্ধ হয়ে গিয়েছে তাঁর। পড়াশোনা জানেন না। তাঁকে সহজ সরল পেয়ে ঠকিয়েছেন ওই ব্যক্তি। এখন কিভাবে সংসার চালাবেন সেটাই বুঝে উঠতে পারছেন না একসময়ের এই ভাইরাল তারকা।