টলিউড অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী (Ritabhari Chakraborty) মা এবং পরিচালক উৎপলেন্দু চক্রবর্তীর স্ত্রী শতরূপা সান্যাল (Satarupa Sanyal)। দিনের পর দিন স্বামীর নির্মম অত্যাচার সহ্য করেছেন তিনি! দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া শতরূপা একদিন বেরিয়ে এলেন বাড়ি থেকে। নিজ দক্ষতায় দাঁড়িয়েছে দুই মেয়ে। দুই মেয়েকে একা হাতে বড় করেছেন। সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বললেন, বেশিদিন উৎপলেন্দুর কাছে থাকলে তাঁর সঙ্গে দুই মেয়েকে উনি মেরে ফেলতেন!
নিজের লড়াইয়ের কাহিনী শোনালেন শতরূপা সান্যাল!
সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমের কাছে মুখ খুলে শতরূপা বলেন, ১৯৯৭ সালে দুই মেয়েকে নিয়ে উৎপলেন্দুর বাড়ি ছেড়ে চলে আসেন তিনি। ২০০০ সাল নাগাদ তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এত দিন পর্যন্ত উৎপলেন্দু চক্রবর্তী তাঁর মেয়েদের একটা লজেন্সও দেননি। সংবাদপত্রে উৎপলেন্দু চক্রবর্তীর অসুস্থতার খবর বেরোনোর পর থেকেই শতরূপার মোবাইলে এবং হোয়াটস্অ্যাপে অসংখ্য মেসেজ আসতে থাকে।
শতরূপার কথায়, অনেকে এমনও বলেছেন, তাঁরই নাকি দায়িত্ব ছিল অসুস্থ প্রাক্তন স্বামীকে ১০ বাই ১০ ফুটের বদ্ধ, অনাহারের দেওয়াল থেকে নিজের কাছে নিয়ে আসার! তবে ঋতাভরির মা বললেন, একটা সময় ছিল যখন তিনি ভালবেসে, স্বামীর ট্যালেন্টের কাছে নতজানু হয়েছিলেন। আর উনি দুর্বল ভেবে রোজ মদ খেয়ে তাঁকে মারতেন। মার খেয়েও অনেক সময় রাত বারোটায় দোকান খুঁজে ওর সিগারেট নিয়ে আসতেন তিনি।
কিন্তু দিনের পর দিন অত্যাচার বাড়তে লাগল! শতরূপার মেয়েরা ওঁর নিয়মিত অত্যাচারে ভয় পেয়ে যাচ্ছিল। বড় মেয়ের মনে অসম্ভব ভীতি ঢুকে গিয়েছিল। ছোট মেয়ে কুঁকড়ে যাচ্ছিল। আর ওদের কোনও ব্যক্তিত্ব তৈরি হচ্ছিল না। তাই দুই মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে ঘর ছেড়েছিলেন শতরূপা। আজ তিনি জানতে চাইছেন, যেদিন দুই মেয়েকে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছেন, সে দিন তো কেউ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেননি!
আরও পড়ুন: শাকিব খানের সঙ্গে জুটি বাঁধতে চলেছেন ‘মিঠাই’ খ্যাত সৌমীতৃষা কুন্ডু? খবর উড়ছে টলিপাড়ায়
তিনি আরও বলেন, দুই মেয়ে চিত্রাঙ্গদা আর ঋতাভরী বাবার স্নেহ ছাড়াই নিজের পায়ে দাঁড়াবার চেষ্টা করছে। নিজে ডাক্তারিতে প্রথম হয়েছিলেন শতরূপা। সম্ভ্রান্ত পরিবারে মেয়ে তিনি। স্বামীর নির্মম অত্যাচার নিয়ে এর আগে কোনও দিন কোথাও মুখ খোলেননি। স্বামীর সঙ্গে তাঁর বয়সের ফারাক প্রায় সতেরো বছরের। সংসার করতেই গিয়েছিলেন। জন্ম দিয়েছেন দুই কন্যার। কিন্তু অত্যাচারের সীমা পেরিয়ে গেলে মুখ বুজে তা সহ্য করেননি। শতরূপা জানালেন, বাবা-মা আশ্রয় না দিলে সে দিন তিনজনই হয়তো শেষ হয়ে যেতেন! আজও ফেসবুকে আজও কবিতা লেখেন শতরূপা। নিজের জীবনের দিশা খুঁজে নিয়েছেন। মেয়েরাও নিজেদের পরিচয় তৈরি করেছেন নিজ ক্ষমতায়।