টেলিভিশন জগতের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী হলেন কনীনিকা ব্যানার্জি। দীর্ঘ 22 বছর হয়ে গেল টলিউডে তার ক্যারিয়ার কিন্তু বড় পর্দায় তাকে যেন ঠিক করে আবিষ্কার করতে পারলোনা টলিউড। তবে ডিরেক্টর রবি ওঝা কিন্তু চিনেছিলেন আসল রত্নকে।তার হাত ধরেই ব্যাকআপ ডান্সার থেকে এখানে আকাশ নীল এর ছটফটে প্রাণবন্ত মেয়ে পাখির চরিত্রে অভিনয় করা আর ছোটপর্দায় সেই শুরু জনপ্রিয়তার।
আজ তার জন্মদিন। বর্তমানে তিনি অভিনয় করছেন আয় তবে সহচরীর মুখ্য ভূমিকায়। সেখানে অসমবয়সী বৌমা শাশুড়ির বন্ধুত্ব নিয়ে গল্প শুরু হয়েছে।তবে মাঝখানে পর’কীয়া এসে যাওয়ায় দর্শক বিরক্ত হয়েছিলেন বটে তবে এখন আবার সহচরীকে আত্মমর্যাদাপূর্ণ দেখানো হচ্ছে। তাই আজ সইয়ের জন্মদিনের বিশেষ শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন তার ভক্তরা।
তার এক ভক্তের পোস্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করা যাক।
‘#HappyBirthdayKonidi
সালটা ছিল ২০০০,এক জুনিয়র আর্টিস্ট তথা ব্যাক আপ ডান্সারের অডিশন দেখে মুগ্ধ হন মুম্বাই থেকে টালিগঞ্জে কাজ করতে আসা স্বনামধন্য পরিচালক শ্রী রবি ওঝা..ব্যাস তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি মেয়েটিকে! ‘এক আকাশের নিচে’ ধারাবাহিকের পাখি চরিত্রের সারল্য, প্রাণোচ্ছল হাসি, হয়ে ওঠে সেই সময়ের ইউথ ক্রাশ! আবার একইসঙ্গে মা-মাসিদের সবথেকে আদরের..
ধারাবাহিকের জনপ্রিয়তার সাথে সাথেই আসতে থাকে বেশ কিছু বড়সড় ফিল্মের অফার,রবি ওঝা নিজের প্রথম ছবির নায়িকা হিসাবে বেছে নেন সেই মেয়েটিকেই! শুরু হয় ‘আবার আসব ফিরে’ ..পুর্ণজন্মের কাহিনী..আর সেখানেই প্রথম জন্মে স্বাধীনতা সংগ্ৰামী গৌরী ও পরের জন্মে নার্স পৃথার চরিত্রে তাক লাগিয়ে দেয় তার অভিনয়! প্রথম ছবিতেই প্রমাণ করেন অভিনেত্রী হিসাবে তিনি কতখানি দড়!
সমালোচকদের প্রশংসার সাথে সাথে জিতে নেন আনন্দলোক পুরস্কারের স্পেশ্যাল জুরি অ্যাওয়ার্ড..বিএফজেএ পুরস্কারেও পান মনোনয়ন..হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর প্রিয় বন্ধু চান্দ্রেয়ী ঘোষের কাছে হার মানতে হয় কয়েকটা ভোটের ব্যবধানে..তারপর আসে মলয় ভট্টাচার্যের ‘তিন এক্কে তিন’..
সমাজের গতানুগতিক ট্যাবুর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো তিন স্বাধীনচেতা নারী মায়া-মুক্তি-আলোর গল্পে শ্রীলেখা মিত্রের মতো দুদেঁ অভিনেত্রীর পাশে আলাদা করে নজর কাড়েন কণীদি.. সমালোচক, সাধারণ দর্শক দুতরফেই প্রশংসিত হয় তার কাজ, চরিত্রের প্রয়োজনে ক্যারাটের প্রশিক্ষণ ও নিতে হয়,ছবির সমস্ত স্টান্টগুলো করেন তিনি নিজেই কোন বডি ডাবল ছাড়া..
কিন্তু তারপর আর বড় পর্দায় সেভাবে পাওয়া যায় না তাকে..ইন্ডাস্ট্রির বড়কর্তাদের মনজয় করে উঠতে পারেননি বলেই হয়তো..আর টালিগঞ্জের জ্যেঠু,কাকুরা তো সবাই নিজেদের ঘরের মেয়েদের নিয়েই ব্যস্ত,পরের ঘরের প্রতিভার দিকে কজনেরই বা নজর যায়! তার সে নিয়ে দুঃখবিলাস করে লাভ নেই! গতে বাঁধা সিরিয়াল-ও উপভোগ্য হয়ে ওঠে তার অভিনয় গুণেই..তা সে লীনা গাঙ্গুলীর বাটিচচ্চরি ‘অন্দরমহল’ হোক বা সাহানা দত্তের ল্যাবড়ার ঘন্ট ‘আয় তবে সহচরী’..
অঞ্জন দত্তের ‘চলো লেটস্ গো’ হোক বা শ্রীজিত মুখার্জীর ‘চতুষ্কোণ’ স্বল্প পরিসরে জানান দিয়েছেন নিজের উপস্থিতি..অতঃপর শিবু-নন্দিতা জুটির ‘মুখার্জীদার বউ’ ছবিতে আবার নতুন করে বড় সুযোগ পান,অদিতি চরিত্রের জমে থাকা সমস্ত অভিমান,খেদ,অতৃপ্তি জীবন্ত হয়ে ওঠে তার নিপুণ অভিনয়ে,ফের অভিনেত্রী হিসাবে নিজের জাত চিনিয়ে দেন..সেই এক আকাশের পাখি আজ কত পরিণত!
সবশেষে এটুকুই বলব, সাফল্য আর ব্যার্থতা মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ..মাধ্যম ছোট হোক বা বড় ভালো অভিনেত্রীর কোন অজুহাতের দরকার পড়েনা..আর এই লবিবাজ ইন্ডাস্ট্রি আপনার সাথে কতটাই বা সুবিচার করবে!জাত অভিনেত্রীর পিআর এর দরকার পড়েনা.. রেণুকা সাহানে, শেফালী শাহদের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়েছে অনেকটা সময় পরে..কে বলতে পারে সেরকম একটা miracle কোনদিন আপনার সাথেও ঘটে যেতে পারে! ২০০০ থেকে ২০২২ u r irreplaceable..ভালো থাকবেন কনীদি.. আজকের দিনের জন্য অনেক শুভেচ্ছা’