“এখানে নিজেরাই নিজেদের ক’ব’র খুঁ’ড়’বে আর বলবে সিরিয়াল কেন চলছে না!” বাংলা ধারাবাহিকের পরিস্থিতি নিয়ে বি’স্ফো’র’ক সুরজিৎ বন্দোপাধ্যায়
Surojit Bandopadhyay; বাংলা ধারাবাহিক, সিনেমা এবং থিয়েটারের ক্ষেত্রে একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব তিনি। রঙ্গমঞ্চে তার অভিনয় বারবার মুগ্ধ করেছে দর্শকদের। টিনটোরেটোর যীশু, ক্রস কানেকশন, লাভেরিয়া, অভিযান সিনেমায় তার অভিনয় নজর কেড়েছেন দর্শকদের।
এছাড়াও উমা, প্রতিদান, মহানায়ক, খেলনা বাড়ি, এই ছেলেটা ভেলভেলেটা, ইষ্টি কুটুম, বয়েই গেল, চিরদিনই তুমি যে আমার, অপরাজিতা অপু, আলোছায়া ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন তিনি। হইচইয়ের তানসেনের তানপুরাতেও নিজের অভিনয়ের দক্ষতা দেখিয়েছেন তিনি। গতমাসেই অভিনেতা সুরজিৎ বন্দোপাধ্যায় (Surojit Bandopadhyay) অভিনীত ম্যাজিক মোমেন্টসের ধারাবাহিক সন্ধ্যাতারা (Sandhyatra) স্টার জলসার পর্দা থেকে বিদায় নিয়েছে।
সম্প্রতি অতি উত্তম সিনেমায় মহানায়ক উত্তম কুমারের কন্ঠে ডাবিং করতে দেখে গেছে তাকে। একটি জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম গেছিল অভিনেতার সাক্ষাৎকার নিতে তার বাড়ি উত্তর কলকাতায়। অভিনেতা জানিয়েছেন “এখানেই আমার ভিটে এখন থেকে কোথায় যাব। সামনেই নিবেদিতার বাড়ি। সেটাকে রেনোভেশনের নামে সম্পূর্ন ভোল পাল্টে দিয়েছে। এদের না কোন শিক্ষা আছে না ইতিহাসের বোধ আছে। বিদেশে সেইসময়কার ভাব মূর্তির ছাপ থাকে কিন্তু এদের তো খালি চারটে টাকা সাংশন হল, আর করে দিলে এতে যে বিবেকানন্দ বা নিবেদিতার আ’ত্মা’র অ’প’মা’ন হল সেটা বোঝে না। খালি করলেই হল।”
অভিনেতা তার অভিনয়ের যাত্রা নিয়ে জানিয়েছেন “আমার থিয়েটারে আসার পিছনে আমার পরিবারের প্রভাব রয়েছে। অনেকেই সঙ্গেই পরিচয় ছিল সেই সূত্রেই যোগদান। তারপর রেডিওতে কাজ করেছি। সেখান থেকে আবার থিয়েটার। তারপর সংবাদিকতাও করেছিলাম। সাংবাদিকতা মানেই তো চব্বিশ ঘন্টা কাজ। ফলেই থিয়েটার বন্ধ হয়ে গেল কিন্তু পরে আবার শুরু করি। আমাকে লোকে কেন উত্তম কুমার বলে আমি জানি না কারণ আমি মনে করিনি আমার অভিনয়ে ওনার বিশেষ প্রভাব আছে। আমার মতে দেবশঙ্কর হালদার হয়ত থিয়েটারের উত্তম কুমার। আমার সঙ্গে মহানায়কের ৩ বার দেখা হয়েছিল। দুইবার থিয়েটারে আর একবার আমার সামনের সিটেই বলেছিলেন।”
অভিনেতা এও জানিয়েছেন “এখনকার অভিনেতারা দেখি সিনেমা শেষ হওয়ার আগেই বেরিয়ে যায় স’ম’স্যা হবে বলে। তবে তাদের হয়ত খালি একটু জিজ্ঞাসা করে এই যা। কিন্তু উত্তম কুমার থাকলে তাকে কেউ জড়িয়ে ধরছে, কেউ অটোগ্রাফ নিচ্ছে। ফলেই একটা খারাপ পরিস্থিতি হয়ে যেত তাই তিনি চলে গেছিলেন। আর এটাই পার্থক্য মহানায়কের এবং এখনকার অভিনেতাদের জনপ্রিয়তায়। সেইদিন যে ছেলেটাকে উনি দেখে মুচকি হেসেছিলেন সেই এত বছর পর ওনার গলায় ডাবিং করছে। এটা সৃজিতের জন্যই হয়েছে। তবে সত্যজিৎ রায় বলে গিয়েছিলেন উত্তম কুমার একজনই ছিলেন, আগেও কেউ তার মতো হতে পারেনি আর ভবিষ্যৎতেই পারবে না। হয়তো সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় হতে পারেন কিন্তু এখনকার সময়ে হতে পারবে না। তাই এখনও ৪০বছর পর তাকে নিয়ে সিনেমা হয়। ”
বর্তমানে অভিনেতাদের মহানায়কের উপাধি দেওয়া হয়, সেই বিষয়ে অভিনেতা মন্তব্য করেছেন “যিনি নেন তার ল’জ্জা’শ’র’ম থাকা উচিত। অনেক দর্শকরাই তাদের প্রিয় অভিনেতাকে গুরু বলে। তারপর হয়তো কাউকে বলছে মহাগুরু। সেই শিল্পীর আত্মসম্মানের প্রয়োজন আছে যে এটা আমি লিখব! যে আমার থেকে উচ্চমানের হয়ে উনি গুরু আর আমি মহাগুরু। সেই অভিনেতার আত্মসম্মানের ওপর নির্ভর করে। এরকম করে তো তিনি নিজেই হাস্যকর হচ্ছেন। যে দেবে তার তো গলা টিপে দেওয়া উচিত যে না আপনি দেবেন না আপনি আমার চরম শত্রু। তবে আমি থিয়েটার ভালোবাসি তাই সিনেমার কথা আর ভাবিনি।”
আরো পড়ুন: নায়ক হলো খ’ল’না’য়’ক! খুব শীঘ্রই পর্দায় আসছে বিজয়া! নায়ক-নায়িকা চরিত্রে থাকছেন কারা? সবার নাম জানলে পি’লে চ’ম’কা’বে আপনাদেরও
“থিয়েটার আমাদের সেই রুটিরুজি দিতে পা’রে’না। সেখানে পারে সেখানে হয়। একমাত্র দেবশঙ্কর হালদার সেই কাজটা পারেন। আমাদের দেশের কোন সরকার এটা নিয়ে ভাবে না এমনকি বা’ম সরকারও করেনি। তাই করতে হয়। যদিও উৎপল দত্ত বলেছেন এরা তো রঙমেখে অভিনয় করছে করুক। তবে এখন সিরিয়ালে সবটাই মেয়েদের নিয়ে। দুজন মেয়েতে হিং’সা, ভালোবাসা। আগে যে ব্যালেন্সটা ছিল এখন নেই। এখন মানুষ থিয়েটার করে সিনেমার আসার জন্য। আর প্রযোজনা সংস্থাও নেয় ওই কাকের বাসায় কোকিল খোঁজার মতো করে। ছেলেরা অভিনয় জানে না কিন্তু বাইসেপ্সের জন্য সুযোগ পায়। কিন্তু এতে যে আমারা নিজেদের ক’ব’র খুড়ছি সেটা বুঝি না। তবে এখন ভালো জিনিসে টিআরপি আসেনা।” জানিয়েছেন অভিনেতা।